কিশোর নির্যাতনে চাঞ্চল্য, গ্রেপ্তার ১২

কেরলের কিশোর নির্যাতন (Child Abuse) মামলা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সমগ্র দেশজুড়ে। একটি সমকামী ডেটিং অ্যাপ “গ্রাইন্ডার” এর মাধ্যমে ১৬ বছরের এক নাবালককে ব্যবহার করে ভয়ঙ্কর…

child molestration case accused youth convicted

কেরলের কিশোর নির্যাতন (Child Abuse) মামলা নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সমগ্র দেশজুড়ে। একটি সমকামী ডেটিং অ্যাপ “গ্রাইন্ডার” এর মাধ্যমে ১৬ বছরের এক নাবালককে ব্যবহার করে ভয়ঙ্কর যৌন শোষণের চক্র গড়ে উঠেছিল বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই মোট ১৬ জন অভিযুক্তের মধ্যে ১২ জনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

তদন্তকারীদের মতে, অভিযুক্তরা বিভিন্ন পেশা ও সামাজিক স্তর থেকে এসেছে। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন একজন সিভিল কন্ট্রাক্টর, একজন সহকারী শিক্ষাকর্তা, রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্সের এক অফিসার এবং যুব সংগঠনের এক নেতা। সমাজের সম্মানজনক পদে থাকা এইসব ব্যক্তির নাম উঠে আসায় ঘটনার গুরুত্ব ও ভয়াবহতা আরও বেড়েছে।

   

ঘটনার সূত্রপাত ভুক্তভোগী কিশোরের মায়ের অভিযোগ থেকে। তিনি তাঁর ছেলের ফোনে সন্দেহজনক বার্তা এবং অ্যাপ ব্যবহারের প্রমাণ পান। পুলিশি তদন্তে জানা যায়, নাবালক সহজেই ভুয়ো জন্মতারিখ দিয়ে গ্রাইন্ডার অ্যাপে অ্যাকাউন্ট খুলেছিল। এই সুযোগে অসাধু প্রাপ্তবয়স্করা তাকে প্রলোভন দেখিয়ে এবং প্রতারণা করে যৌন শোষণের ফাঁদে ফেলে।

পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে অ্যাপের বয়স নির্ধারণের পদ্ধতি অত্যন্ত দুর্বল। ব্যবহারকারীরা নিজের জন্মতারিখ লিখলেই একাউন্ট চালু হয়ে যায়। কোনও সরকারি পরিচয়পত্র যাচাই বা বায়োমেট্রিক পরীক্ষা নেই। ফলে নাবালকরা অবাধে প্রবেশ করতে পারছে এবং সহজেই শিকার হচ্ছে।

কেরল পুলিশ ও শিশু অধিকারকর্মীরা এখন দাবি তুলেছেন, ভারতের সব ডেটিং অ্যাপ ও সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং প্ল্যাটফর্মে অবিলম্বে কঠোর বয়স যাচাইয়ের ব্যবস্থা করতে হবে। আধার বা সরকারী নথি দিয়ে পরিচয় যাচাই ছাড়া এ ধরনের ভয়ঙ্কর অপরাধ রোধ করা সম্ভব নয়।

Advertisements

এমনকি সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে গ্রাইন্ডার তাদের নতুন বয়স যাচাই পদ্ধতি চালু করেছে। কিন্তু ভারতে এখনও তা কার্যকর হয়নি। বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতীয় কিশোর-কিশোরীরা প্রযুক্তির প্রভাবে দ্রুত সংবেদনশীল অবস্থায় পৌঁছে যাচ্ছে, আর সেই ফাঁকফোকর ব্যবহার করছে শিকারিরা।

এই ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি ও ডেটিং অ্যাপগুলির ভূমিকা নিয়েও তীব্র সমালোচনা হচ্ছে। কেবলমাত্র ব্যবসায়িক মুনাফা নয়, ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করাও তাদের বড় দায়িত্ব।

বর্তমানে মামলার তদন্ত চলছে। গ্রেপ্তার ১২ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে এই ঘটনা শুধু কেরল নয়, গোটা ভারতের জন্য এক বড় সতর্কবার্তা। যদি অবিলম্বে আইনগত ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তন না আনা হয়, তবে নাবালক শিশুদের ডিজিটাল নিরাপত্তা চরম বিপন্ন হয়ে উঠবে।