শনিবার পুলওয়ামা পুলিশ এবং ৫৫ রেজিমেন্টের যৌথ অভিযানে (J&K Police Operation) পুলওয়ামার তাহাব এলাকা থেকে একটি কট্টরপন্থী ওভার গ্রাউন্ড ওয়ার্কার (ওজিডব্লিউ) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই অভিযানের ফলে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তির কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ।
এই গ্রেপ্তারির ঘটনা ঘটে ১৮ বছর বয়সী হিজবুল মুজাহিদিনের সদস্য ড্যানিশ বশির আহেঙ্গার (যিনি মৌলভি নামে পরিচিত) এর সঙ্গে সংযুক্ত তথ্যের ভিত্তিতে। ড্যানিশকে মঙ্গলবার পুলওয়ামার একটি নাকা চেকপোস্টে আটক করা হয়েছিল, যেখানে তার কাছ থেকে দশটি গ্রেনেড এবং পাঁচটি ব্যাটারি পাওয়া যায়। তদন্তে জানা যায়, সাজাদ আহমেদ দার, যিনি হিজবুল মুজাহিদিনের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে যুক্ত এবং একজন অভিজ্ঞ ওজিডব্লিউ হিসেবে পরিচিত, ড্যানিশের পরিচালনায় ছিলেন এবং তাকে ওজিডব্লিউ হিসেবে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। সাজাদের দোকান থেকে পুলিশ দুইটি গ্রেনেড এবং একটি পিস্তলও উদ্ধার করেছে।
সূত্রের খবর, এই গ্রেপ্তারি এবং অস্ত্র উদ্ধার অভিযান সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া বিশ্বাসযোগ্য তথ্যের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়েছে। পুলিশের তদন্তে ড্যানিশ ও সাজাদ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য শীঘ্রই প্রকাশিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
অস্ত্রের অবৈধ সংরক্ষণ: নিরাপত্তার জন্য বিপদজনক পরিস্থিতি
পুলিশের এই অভিযান জানিয়ে দেয় যে জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি কতটা তীক্ষ্ণ হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে যুবকদের জঙ্গি সংগঠনের প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে পড়ার ফলে নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য এটি একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার হওয়ার ঘটনা বলছে যে, জঙ্গি কার্যকলাপ রুখতে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
ড্যানিশের গ্রেপ্তারি এবং তার পরে সাজাদের গ্রেপ্তারি পুলিশ প্রশাসনের কর্মপন্থার একটি অংশ যা জঙ্গি কার্যকলাপের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তাদের দৃঢ় সংকল্পকে নির্দেশ করে। পুলওয়ামা পুলিশ সম্প্রতি একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে এবং স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
স্থানীয় জনগণের প্রতিক্রিয়া
স্থানীয় জনগণের মধ্যে এই ধরনের গ্রেপ্তারি সম্পর্কে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। অনেকেই মনে করেন যে নিরাপত্তা বাহিনীর কার্যক্রম সঠিক পথে আছে এবং সন্ত্রাসবাদ রোধে এটি এক ধরনের ইতিবাচক পদক্ষেপ। তবে কিছু জনগণ প্রশ্ন তুলছেন যে, কেন যুবকদের জঙ্গি কার্যকলাপে আকৃষ্ট হতে দেওয়া হচ্ছে এবং তাদের আত্মনির্ভরশীলতা নিশ্চিত করা উচিত।
এছাড়া, সমাজের কিছু অংশ মনে করেন যে স্থানীয় যুবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং তাদের সঠিক দিকনির্দেশনা দেওয়া হলে, তারা বিপজ্জনক কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকতে পারে।
ভারত সরকারের পদক্ষেপ
ভারত সরকার জম্মু-কাশ্মীরের যুবকদের সঠিক পথে পরিচালনা করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে যুবকদের জন্য চাকরির সুযোগ তৈরির চেষ্টা করছে, যাতে তারা জঙ্গি কার্যকলাপের দিকে ঝুঁকতে না পারে। এছাড়া, সরকারি স্কুল ও কলেজে শিক্ষার মান বৃদ্ধি এবং ক্রীড়া কার্যক্রমে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে যুবকদের উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা চলছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর সাফল্য এই অঞ্চলে শান্তি ও সুরক্ষা প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। যেহেতু সামরিক ও পুলিশ বাহিনী এই ধরনের অভিযান চালাচ্ছে, তাই আশা করা হচ্ছে যে তারা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে আরও কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।
সামগ্রিকভাবে, এই গ্রেপ্তারি এবং অস্ত্র উদ্ধার ঘটনাটি সন্ত্রাসবাদী বিরোধী লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্জন হিসেবে গণ্য হচ্ছে এবং এটি উভয় সমাজ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে একটি দৃঢ় সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করবে। সরকার এবং নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ প্রচেষ্টায় আশা করা হচ্ছে যে, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি আগামী দিনে আরও উন্নত হবে।