৪০ তলা সমান দৈত্যাকার রকেট বানাচ্ছে ইসরো, তুলবে ৭৫ হাজার কেজি পেলোড

ISRO new heavy lift rocket নয়াদিল্লি: ভারতের মহাকাশ গবেষণায় নতুন ইতিহাস রচনার পথে এগোচ্ছে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO)। এবার সংস্থার লক্ষ্য একেবারেই ভিন্ন মাত্রায়।…

ISRO new heavy lift rocket

ISRO new heavy lift rocket

নয়াদিল্লি: ভারতের মহাকাশ গবেষণায় নতুন ইতিহাস রচনার পথে এগোচ্ছে ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO)। এবার সংস্থার লক্ষ্য একেবারেই ভিন্ন মাত্রায়। এমন এক দৈত্যাকার রকেট তৈরি করছে আইএসআরও, যা একবারে ৭৫ হাজার কিলোগ্রাম বা প্রায় ৭৫ টন পেলোড বহন করে নিম্ন পৃথিবী কক্ষপথে (Low Earth Orbit) স্থাপন করতে সক্ষম হবে। আকারে এই রকেট হবে প্রায় ৪০ তলা সমান উঁচু, যা ভারতের মহাকাশ ক্ষমতার এক নতুন সীমান্ত খুলে দেবে।

আবদুল কালামের ‘সাধারণ’ রকেট থেকে মহাকাশ দৈত্যে

হায়দরাবাদের উসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে আইএসআরও চেয়ারম্যান ভি নারায়ণন তুলনা টানেন ভারতীয় মহাকাশ কর্মসূচির সূচনার সঙ্গে। তিনি বলেন, “ড. এপিজে আবদুল কালাম যখন প্রথম রকেট তৈরি করেছিলেন, তার লিফট-অফ ভর ছিল মাত্র ১৭ টন, পেলোড ক্ষমতা ছিল ৩৫ কেজি। আর আজ আমরা যে রকেটের পরিকল্পনা করছি, সেটি ৭৫,০০০ কেজি পেলোড তুলতে পারবে মহাশূন্যে।”

   

একাধিক বড় প্রকল্প সামনে ISRO new heavy lift rocket

ভি নারায়ণন আরও জানান, ২০২৫ সালেই আইএসআরও-র ঝুলিতে থাকছে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য প্রকল্প। এর মধ্যে রয়েছে—

NAVIC (Navigation with India Constellation): ভারতের নিজস্ব ন্যাভিগেশন ব্যবস্থা, যা GPS-এর ভারতীয় বিকল্প।

N1 রকেট প্রকল্প: ভবিষ্যতের মেগা-লঞ্চ ভেহিকল, যা অতিমাত্রার পেলোড বহনে সক্ষম।

৬,৫০০ কেজির মার্কিন যোগাযোগ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ: ভারতীয় রকেট ব্যবহার করেই যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্যাটেলাইট কক্ষপথে স্থাপন করা হবে।

Technology Demonstration Satellite (TDS) উৎক্ষেপণ।

Advertisements

GSAT-7R: ভারতীয় নৌসেনার জন্য তৈরি সামরিক যোগাযোগ স্যাটেলাইট। এটি বর্তমানের GSAT-7 (রুক্মিণী)-এর বিকল্প হবে এবং সামুদ্রিক প্রতিরক্ষা যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।

৫৫ থেকে ১৫০-তে স্যাটেলাইট বহর

বর্তমানে ভারতের ৫৫টি স্যাটেলাইট সক্রিয়ভাবে কাজ করছে কক্ষপথে। আইএসআরও প্রধান জানান, আগামী তিন থেকে চার বছরের মধ্যে এই সংখ্যা তিনগুণ বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ, ১৫০-র বেশি স্যাটেলাইট নিয়ে ভারত মহাকাশ গবেষণায় এবং প্রতিরক্ষা কৌশলে আরও বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে।

বিশেষ সম্মান ভি নারায়ণনের

এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ভি নারায়ণনকে তাঁর অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ডক্টরেট অব সায়েন্স (অনারিস কজা) উপাধি প্রদান করেন তেলঙ্গানার রাজ্যপাল জিষ্ণু দেব বর্মা। ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির সাফল্য ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তার গুরুত্ব বাড়াতে যে তিনি মুখ্য ভূমিকা নিয়েছেন, সেই কারণেই তাঁকে এই সম্মান জানানো হয়।

ভারতের জন্য কী বার্তা?

ভারতের এই নতুন মহাকাশ স্বপ্ন শুধু প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রতীক নয়, বরং ভূরাজনীতির মঞ্চে ভারতের অবস্থানকেও আরও দৃঢ় করবে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, চিনের মতো মহাকাশ শক্তিধর দেশের সারিতে দাঁড়িয়ে, ভারতও যে এখন বৃহৎ পেলোড উৎক্ষেপণের ক্ষমতা অর্জনের পথে, তা এই ঘোষণাতেই স্পষ্ট।

এককথায়, আইএসআরও-র নতুন ৪০ তলা সমান দৈত্যাকার রকেট ভারতের মহাকাশ গবেষণাকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে, যা ভবিষ্যতের বিজ্ঞান, প্রতিরক্ষা এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেই যুগান্তকারী প্রভাব ফেলবে।

Bharat: ISRO is developing a colossal rocket, capable of carrying a 75,000 kg payload to Low Earth Orbit. This project marks a new frontier for India’s space program, a dramatic leap from the early rockets of Dr. APJ Abdul Kalam, and signals a significant boost in India’s space capabilities.