অমৃতসর: সীমান্তের ওপার থেকে পাকিস্তানের কুখ্যাত গোয়েন্দা সংস্থা ISI–এর ষড়যন্ত্র আবারও ধরা পড়ল পঞ্জাবে। মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান ও ডিরেক্টর জেনারেল অফ পুলিশ গৌরব যাদবের নির্দেশে অমৃতসর গ্রামীণ পুলিশের স্পেশাল সেল যে অভিযান চালায়, তাতেই ধরা পড়ে দুই তরুণ মাহেক ও আদি। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে এক বিপজ্জনক RPG-22 অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক অস্ত্র।
অমৃতসর (গ্রামীণ) জেলার SSP মনিন্দর সিং জানান, “দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং তাদের এক সহযোগী বিকি বর্তমানে ফিরোজপুর জেলে বন্দি। তদন্তে জানা গিয়েছে, পাকিস্তান থেকে ড্রোনের মাধ্যমে এই অস্ত্র তাদের হাতে পৌঁছানো হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল রাজ্যে অরাজকতা ও ভয় সৃষ্টির।”
‘ওয়েটিং রুমে’ শুভশ্রী! ফ্যানেদের কাছে কী চাইলেন?
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, এই তরুণদের বয়স মাত্র ১৮ থেকে ১৯ বছর। সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে ISI-র এজেন্টরা সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যোগাযোগ করে, অর্থ ও বিলাসবহুল জীবনের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণদের ব্যবহার করছে। মাহেক ও আদি সেই জালে পড়েই পাকিস্তানি মদতপুষ্ট ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে ওঠে।
পুলিশ সূত্রে খবর, পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে একাধিকবার ড্রোন উড়ে এসে ভারতের অভ্যন্তরে অস্ত্র ও গোলাবারুদ ফেলে যাচ্ছে। এবার সেই পথেই অমৃতসরে আসে একটি RPG-22 অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক অস্ত্র। এটি অত্যন্ত শক্তিশালী রকেট-চালিত অস্ত্র, যা সাঁজোয়া গাড়ি বা বড় স্থাপনা ধ্বংসে ব্যবহৃত হয়। মনিন্দর সিং বলেন, “এটি ছিল পঞ্জাবে বড়সড় নাশকতার পরিকল্পনার অংশ। সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারত।”
বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান এখন সরাসরি সংঘর্ষে না গিয়ে তরুণদের ব্যবহার করছে ‘লোন উলফ’ হামলার জন্য। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ‘প্যাট্রিয়টিক’ বা ধর্মীয় আবেগকে কাজে লাগিয়ে তাদের ব্রেনওয়াশ করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় যুবকেরাই অস্ত্র পরিবহন ও হামলার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে যা শনাক্ত করা কঠিন।
অন্যদিকে, পঞ্জাব পুলিশ জানিয়েছে যে, অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন, মেসেজ ও সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্ট পরীক্ষা করে একাধিক আন্তর্জাতিক সংযোগের সন্ধান মিলেছে। ড্রোনের GPS ট্র্যাকিং থেকেও পাকিস্তানের দিক থেকে আসা সিগন্যাল পাওয়া গেছে। মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান বলেছেন, “যারা রাজ্যের শান্তি নষ্ট করতে চায়, তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। পাকিস্তানের মদতে আমাদের তরুণদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে, আমরা তা সফল হতে দেব না।”
পঞ্জাব পুলিশের DGP গৌরব যাদবও এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ পোস্ট করে জানান, “এই গ্রেফতারি আমাদের সীমান্ত নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি প্রমাণ করে। রাজ্যের মানুষ নিশ্চিন্ত থাকুন, প্রতিটি ষড়যন্ত্রের জাল আমরা উন্মোচন করব।” তদন্তের পরিধি এখন প্রসারিত হয়েছে। গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন, পাকিস্তান থেকে ড্রোনে পাঠানো অস্ত্রগুলি আরও কত জায়গায় পৌঁছেছে এবং কারা এর সঙ্গে জড়িত।