চিনকে উপেক্ষা করে তাইওয়ানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার কথা বলল মোদী সরকার

নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি:  চিয়াং কাই শেকের নেতৃত্বে নিজেদের অস্থিত্ব আলাদা ভাবে গড়ে তুলেছিল দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ান (Taiwan)। যদিও চিন (China) কোনও দিনই তাইওয়ানকে আলাদা রাষ্ট্রের মর্যাদা…

India's policy on Taiwan clear

নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি:  চিয়াং কাই শেকের নেতৃত্বে নিজেদের অস্থিত্ব আলাদা ভাবে গড়ে তুলেছিল দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ান (Taiwan)। যদিও চিন (China) কোনও দিনই তাইওয়ানকে আলাদা রাষ্ট্রের মর্যাদা দিতে রাজি নয়। বরং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং (Jinping) তাইওয়ানের দখল নিতে মরিয়া। কোনও দেশ তাইওয়ানের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে চাইলে বেজিং সেটা আদৌ ভালো চোখে দেখে না। এরই মধ্যে সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে (Winter Season ) তাইওয়ান নিয়ে নরেন্দ্র মোদী সরকার তার সুস্পষ্ট মতামত জানাল।

শুক্রবার রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী ভি মুরালিধরণ বলেন, ভারত সরকারের তাইওয়ান নীতি নিয়ে কোনও অস্পষ্টতা নেই। আমরা এই দ্বীপটির সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, পর্যটন, প্রতিরক্ষা-সহ সব ধরনের সম্পর্ক আরও সুসংহত ও মজবুত করতে চাই। আর পাঁচটা প্রতিবেশী দেশের মতই তাইওয়ানের সঙ্গেও আমরা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এভাবে সরাসরি তাইওয়ানের পাশে দাঁড়িয়ে মোদী সরকার বেজিংয়ের ওপর আরও চাপ বাড়াল বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

সম্প্রতি তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চিন আরও বেশি আগ্রাসী হয়ে উঠেছে। এই দ্বীপরাষ্ট্রকে ঘিরে কার্যত যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, তাইওয়ানের বিভিন্ন বিমানবন্দর ও নৌবন্দর ঘেরাও করার পরিকল্পনা করছে জিনপিং সরকার। এই অবস্থায় বিদেশমন্ত্রকের এই বক্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল।

এই মুহূর্তে তাইওয়ানের সঙ্গে ভারতের আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। তবে দু’দেশের সম্পর্ক যথেষ্টই বন্ধুত্বপূর্ণ। কূটনৈতিক মহল মনে করছে, ভারত মহাসাগরের বুকে চিনের আগ্রাসন রুখতে তাইওয়ানকে পাশে রাখতে চাইছে মোদী সরকার। সে কারণেই তাইওয়ানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক মজবুত করার কথা বলে জিনপিং প্রশাসনের উপর চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছে মোদী সরকার।

রাজ্যসভায় বিদেশমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী মুরালিধরণ লিখিতভাবে জানান, তাইওয়ানের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে ভারতের বক্তব্যে কোনরকম অস্পষ্টতা নেই। আমরা এই দেশের সঙ্গে পর্যটন, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শিক্ষা-সংস্কৃতি সবক্ষেত্রেই সম্পর্ক আরও মজবুত করতে চাই।

উল্লেখ্য, চিনের বরাবরের দাবি তাইওয়ান সে দেশের অংশ। জিনপিংয়ের আমলে তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চিনের এই আগ্রাসী মনোভাব আরও বেড়েছে। এমনকী, গায়ের জোরে তাইওয়ান দখলের হুমকিও দিয়েছেন জিনপিং। যা নিয়ে আন্তর্জাতিক দুনিয়াতেও তাঁকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। চিন হুমকি দিয়েছে, যে সমস্ত রাজনীতিবিদ তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলবেন বেজিং তাদের অপরাধী বলেই মনে করবে। তাইওয়ানের পাশে দাঁড়ানো ব্যক্তিদের কোনওদিনই চিনে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু তাইওয়ান নিয়ে ভারত সরকারের এই সুস্পষ্ট মনোভাবে চিন কী প্রতিক্রিয়া জানায় সেটাই দেখার।