ট্রেনে তো চড়েন, চেনেন ভারতীয় রেলের ‘বড়লাট’কে? জন্ম থেকেই আজীবন পাকা চাকরি

বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক ভারতীয় রেল। লোকাল হোক বা এক্সপ্রেস, প্রতিদিন লাখ লাখ লোক রেলে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছান। কিন্তু, অনেকেই জানেন না বারতীয় রেলের…

cameras on engine and coach for railway safety

বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম রেল নেটওয়ার্ক ভারতীয় রেল। লোকাল হোক বা এক্সপ্রেস, প্রতিদিন লাখ লাখ লোক রেলে চড়ে গন্তব্যে পৌঁছান। কিন্তু, অনেকেই জানেন না বারতীয় রেলের ম্যাসকটের নাম, কেমন দেখতে তাকে! এই প্রতিবেদনে রইল তারই হাল হদিশ।

ভারতীয় রেলের ম্যাসকটের পোশাকি নামটা বেশ বড়- ‘ভোলু দ্য এলিফ্যান্ট’। তবে আদুরে নাম শুধুই ভোলু। সে তাকে সবসময় ফিটফাট। পরনে- সাদা শার্ট, ট্রাউজার্সের সঙ্গে আকাশি কোর্ট আর নেভি ব্লু টাই। মাথায় নীল-সাদা টুপি। আর হাতে সবুজ রঙের লন্ঠন।
রেলের ম্যাসকট আসলে একটি হাতি।

   

কেন হাতিকেই ম্যাসকট হিসাবে বেচে নেওয়া হল রেলের ম্যাসকট? রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়, হাতি খুবই বিশ্বস্ত প্রাণী। হাতি যুগ যুগ ধরে মানুষ ও পণ্য পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত। আবার আকারে বড় হলেও হাতি সাধারণত হিংস্র নয়। বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহযোগী মনোভাবের জীব। ম্যাসকট তৈরির সময়ে যেটা মাথায় রাখা হয়েছিল সেটা ভোলুর চেহারার সঙ্গে মেলে। ভারতীয় রেল যেমন বৃহৎ, তেমনই দরদি, এমন ছবি তৈরি করাই ছিল ম্য়াসকট তৈরির ভাবনার মূলে। তাই রেলমন্ত্রকের চাহিদা মতোই ভোলুকে রূপ দেওয়া হয়।

Indian Railways Mascot bholu the elephant

ভোলুকে সাজানোর দায়িত্ব পেয়েছিল ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ডিজাইনের বেঙ্গালুরু শাখা। ভোলুর হাতের সুবজ লন্ঠনের অর্থ— ‘গতি’, যা রেলের সঙ্গে সম্পর্কিত। আর রেলের ভাষায় ভোলুর বর্ণনা দিতে বলা হয়, ‘নৈতিক, দায়িত্বশীল, একনিষ্ঠ এবং আনন্দিত।’ সবুজ আলো দেখিয়ে ভোলু আসলে রেলযাত্রীদের সুরক্ষিত সুখের সফর কামনা করে।

ভোলুর জন্ম কীভাবে? একটা অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে ভোলুর জন্ম। ভারতের মাটিতে প্রথম ট্রেন চলেছিল ১৮৫৩ সালের ১৬ এপ্রিল। ২০০২ সালটা ছিল ভারতীয় রেলের সার্ধশত বছর পূর্তি। সেই উপলক্ষে একটি ম্যাসকট বানানো হয়। সেই বছরের ১৬ এপ্রিল কর্ণাটকের বেঙ্গালুরু সিটি স্টেশনে প্রথম প্রকাশ্যে আসে ভোলুর চেহারা। ওই স্টেশনের এক নম্বর প্লাটফর্ম থেকে সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিটে কর্ণাটক এক্সপ্রেস ছাড়ার সময়ে প্রথম সবুজ বাতি দেখায় ট্রেনের গার্ড সাজা ভোলু। সে দিন ভোলুর আবির্ভাবকে স্মরণীয় করে রাখতে বেঙ্গালুরু সিটি স্টেশনে মিষ্টি আর চকোলেট বিলি করেছিল রেল।

পরের বছর, ২০০৩ সালের ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত চলে রেলের সার্ধশত বছর পূর্তি সমারোহ। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল সেই সময়টুকুই রেলের সঙ্গে জুড়ে থাকবেন ভোলু। কিন্তু ভোলুর ভাগ্যে অন্য কিছু অপেক্ষা করছিল। এক বছরের মাথায় ভোলুর চাকরি পাকা হয়ে যায় ভারতীয় রেলে। শুধু চাকরি পাকাই নয়, রেলের ঘোষণা- যতদিন ভারতে ট্রেন চলবে, ততদিন সবুজ বাতি দেখিয়ে যাবে ভোলু। তার অবসর নেই।