ভারতীয় নৌবাহিনী (Indian Navy) তার সামুদ্রিক শক্তিকে একটি নতুন দিকনির্দেশনা দিতে চলেছে। সূত্রগুলি ইঙ্গিত দেয় যে নৌবাহিনী প্রায় ₹80,000 কোটি ব্যয়ে চারটি অত্যাধুনিক ল্যান্ডিং প্ল্যাটফর্ম ডক (LPD) তৈরির পরিকল্পনা করেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক শীঘ্রই এই প্রকল্পের জন্য দরপত্র জারি করবে, যা এখন পর্যন্ত ভারতের বৃহত্তম স্থল যুদ্ধজাহাজ নির্মাণ প্রকল্প বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রতিরক্ষা সূত্রের খবর, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে এই প্রস্তাবটি বিবেচনা করা হবে। পরিকল্পনা অনুসারে, এই জাহাজগুলি সম্পূর্ণরূপে ভারতে তৈরি করা হবে।
এতে লারসেন অ্যান্ড টুব্রো (এলএন্ডটি), মাজাগন ডক শিপবিল্ডার্স লিমিটেড (এমডিএল), কোচিন শিপইয়ার্ড লিমিটেড (সিএসএল) এবং হিন্দুস্তান শিপইয়ার্ড লিমিটেড (এইচএসএল) এর মতো প্রধান ভারতীয় জাহাজ নির্মাণ সংস্থাগুলি অন্তর্ভুক্ত থাকবে। স্পেন, ফ্রান্স এবং ইতালির বিখ্যাত সংস্থাগুলিও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য যোগ দেবে।
এই অভিযানে জাহাজগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে
এই নতুন জাহাজগুলি বহুমুখী হবে, যা ভাসমান ঘাঁটি নামেও পরিচিত। তারা সৈন্য ও সামরিক যানবাহন মোতায়েন করতে পারে, নৌ ড্রোন অভিযান পরিচালনা করতে পারে, বায়ু প্রতিরক্ষা, দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র হামলা এবং বৃহৎ পরিসরে কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ অভিযান পরিচালনা করতে পারে। এর অর্থ হল, যুদ্ধের পাশাপাশি, এই জাহাজগুলি দুর্যোগ ত্রাণ এবং মানবিক মিশনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
ভারত মহাসাগর অঞ্চলে ভারতের শক্তি বৃদ্ধি পাবে
প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, চিনা নৌবাহিনী প্রায়শই ভারত মহাসাগরে নজরদারি জাহাজ এবং সাবমেরিন পাঠায়। এদিকে, পাকিস্তান চিনের সহায়তায় ক্রমাগত তার নৌবহরকে শক্তিশালী করছে। ভারতের এই নতুন এলপিডিগুলি কেবল ভারতীয় নৌবাহিনীর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করবে না বরং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে (আইওআর) ভারতের অবস্থানকেও শক্তিশালী করবে।
চিন ও পাকিস্তানের চ্যালেঞ্জের সরাসরি জবাব
প্রতিরক্ষা সূত্র বলছে যে প্রতিটি জাহাজে বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, জাহাজ-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন ঝাঁক থাকবে। তাদের সহায়তায়, নৌবাহিনী দীর্ঘ পাল্লার অভিযান পরিচালনা করতে সক্ষম হবে এবং প্রয়োজনে সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর সাথে যৌথ অভিযানও পরিচালনা করতে সক্ষম হবে।
এই পদক্ষেপ কেবল নৌ-শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যেই নয়, বরং ভারত মহাসাগরে তাদের নৌ উপস্থিতি ক্রমাগত সম্প্রসারিতকারী চিন ও পাকিস্তানের বাড়তে থাকা চ্যালেঞ্জের সরাসরি প্রতিক্রিয়াও বটে। শ্রীলঙ্কা এবং পাকিস্তানের বন্দরগুলির উপরও এর দখল শক্তিশালী হচ্ছে। অতএব, ভারতের জন্য এই নতুন যুদ্ধজাহাজের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়।

আমাদের Google News এ ফলো করুন
২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।
