ভারতীয় যুদ্ধের গৌরবময় অধ্যায় বর্ণনায় সিঙ্গাপুর সফর প্রতিরক্ষা প্রধানের

ভারতের প্রতিরক্ষা প্রধান (defence-chief) জেনারেল অনিল চৌহান আগামী ৩০ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে সফর করবেন। তিনি এই সময়ে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ…

defence-chief singapore visit

ভারতের প্রতিরক্ষা প্রধান (defence-chief) জেনারেল অনিল চৌহান আগামী ৩০ মে থেকে ১ জুন পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে সফর করবেন। তিনি এই সময়ে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ (আইআইএসএস) আয়োজিত ২২তম শাংরি-লা ডায়ালগে অংশ নেবেন।

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সরকারি বিবৃতি অনুসারে, এই সফরের সময় জেনারেল চৌহান (defence-chief)অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স, জার্মানি, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, নেদারল্যান্ডস, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধান এবং সিনিয়র সামরিক নেতৃত্বের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন।

   

জেনারেল চৌহান (defence-chief) এই সম্মেলনে শিক্ষাবিদ, থিঙ্ক ট্যাঙ্ক এবং গবেষকদের উদ্দেশে ‘ভবিষ্যতের যুদ্ধ এবং যুদ্ধকৌশল’ বিষয়ে বক্তৃতা দেবেন। এছাড়াও, তিনি এই অনুষ্ঠানের সমান্তরাল বিশেষ অধিবেশনগুলোতে অংশ নেবেন এবং ‘ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জের জন্য প্রতিরক্ষা উদ্ভাবন সমাধান’ বিষয়ে বক্তব্য রাখবেন।

বৈঠকের বিষয়বস্তু (defence-chief)

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুসারে, শাংরি-লা ডায়ালগ হলো এশিয়ার শীর্ষ প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্মেলন, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, সামরিক প্রধান, নীতিনির্ধারক এবং কৌশলগত বিশেষজ্ঞরা একত্রিত হন।

এই বছরের এই সম্মেলনে ৪০টি দেশের নেতারা ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করবেন। এই বৈঠকগুলো ভারতের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা জোরদার করতে, পারস্পরিক নিরাপত্তা স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করতে এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারতের কৌশলগত অংশীদারিত্ব বাড়াতে একটি প্ল্যাটফর্ম প্রদান করবে।

শাংরি-লা ডায়ালগ কি

শাংরি-লা ডায়ালগ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিষয়ে আলোচনার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ। এই সম্মেলনটি ২০০২ সাল থেকে সিঙ্গাপুরের শাংরি-লা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এবং এটি আইআইএসএস-এর উদ্যোগে আয়োজিত হয়।

এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা দ্বিপাক্ষিক এবং বহুপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়ে নিরাপত্তা সহযোগিতা ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার বিষয়ে আলোচনা করে। জেনারেল চৌহানের এই সফর ভারতের প্রতিরক্ষা কূটনীতিকে আরও শক্তিশালী করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Advertisements

এই সফরের আগে, গত ২৫ মে জেনারেল চৌহান (defence-chief) জম্মু ও কাশ্মীরের উধমপুরে ভারতীয় সেনাবাহিনীর নর্দান কমান্ড এবং হরিয়ানার চণ্ডীমন্দির সামরিক স্টেশনে ওয়েস্টার্ন কমান্ড পরিদর্শন করেন। এই সফরে তিনি (defence-chief) সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল প্রতীক শর্মা এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ কুমার কাটিয়ারের সঙ্গে আলোচনা করেন, যারা অপারেশন সিঁদুরের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। উধমপুরে তিনি উত্তরাঞ্চলের সেনাবাহিনীর সাফল্য, সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক নির্মূল, শত্রুপক্ষের সম্পদ ধ্বংস এবং অপারেশন সিন্দুরের সময় সামরিক সম্পদ ও বেসামরিক জনগণের নিরাপত্তার জন্য গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে বিস্তারিত ব্রিফিং গ্রহণ করেন।

ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ

জেনারেল চৌহানের (defence-chief) সিঙ্গাপুর সফর ভারতের ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জের প্রেক্ষাপটে এই সম্মেলন ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম।

বিশেষ করে সমুদ্র নিরাপত্তা, আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা এবং বহুপাক্ষিক প্রতিরক্ষা কাঠামো নিয়ে আলোচনার জন্য এই সম্মেলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জেনারেল চৌহানের বক্তৃতা এবং দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলো ভারতের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

নেহরুর ইতিহাস খুঁজতে নারাজ কংগ্রেস, বিস্ফোরক জয়রাম রমেশ

অপারেশন সিঁদুর এবং ভারতের সামরিক সাফল্যের বিষয়

এই সফরে জেনারেল চৌহানের আলোচনায় অপারেশন সিঁদুর এবং ভারতের সামরিক সাফল্যের বিষয়টিও উঠে আসতে পারে। এটি ভারতের সামরিক ক্ষমতা এবং কৌশলগত প্রস্তুতি প্রদর্শনের একটি সুযোগ হবে, বিশেষ করে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সামরিক দাবির প্রেক্ষাপটে। এছাড়া, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এই বছরের শাংরি-লা ডায়ালগে মূল বক্তৃতা দেবেন, যা এই সম্মেলনের গুরুত্বকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।

শাংরি-লা ডায়ালগে জেনারেল চৌহানের (defence-chief) অংশগ্রহণ ভারতের প্রতিরক্ষা কূটনীতির একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে। এই সম্মেলনের মাধ্যমে ভারত তার আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তা কৌশলকে আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য তার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করবে। জেনারেল চৌহানের এই সফর ভারতের প্রতিরক্ষা নীতি এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হবে।