Nagastra-1: চিন-পাকিস্তানকে ঠাণ্ডা রাখতে ভারতীয় সেনার হাতে এখন ‘নাগাস্ত্র’

এবার চীনা ড্রাগন থেকে পাকিস্তান, দুই প্রতিবেশীরই চোরাগোপ্তা হামলা সামলাতে ভারতের সহায় নাগ দেবতা! কারণ, ভারতের হাতে চলে এসেছে এক নতুন প্রযুক্তির ব্রহ্মাস্ত্র। যার নাম…

Made-in-India Nagastra-1 Suicide Drones

এবার চীনা ড্রাগন থেকে পাকিস্তান, দুই প্রতিবেশীরই চোরাগোপ্তা হামলা সামলাতে ভারতের সহায় নাগ দেবতা! কারণ, ভারতের হাতে চলে এসেছে এক নতুন প্রযুক্তির ব্রহ্মাস্ত্র। যার নাম দেওয়া হয়েছে ‘নাগাস্ত্র – ১’ (Nagastra-1)। এবার আর একতরফা মার খাওয়া নয়, রীতিমতো শত্রুকে ঘিরে ধরে মারবে এই নতুন অস্ত্র।

কিন্তু ওই নাগাস্ত্র আসলে ঠিক কি ধরনের হাতিয়ার? আসুন সেটাই জেনে নেওয়া যাক। নাগাস্ত্র আসলে একটি ড্রোন। বর্তমানে আধুনিক যুগের যুদ্ধক্ষেত্রে যে ‘আনম্যানড ওয়েপন ভেহিকেলস’ চাহিদা ক্রমশই বাড়ছে, নাগাস্ত্র ঠিক সেই গোত্রেই পড়ে। এটি এমন একটি অস্ত্র বা বিস্ফোরক বহনকারী ড্রোন, যেটা যেকোনো লক্ষ্যবস্তুর উপরে স্থির ভাবে উড়তে পারে, অনায়াসে দূর থেকে একে নিয়ন্ত্রণ করা যায়, এমনকি মাটি থেকে প্রায় ৪,৫০০ মিটার উঁচু পর্যন্ত উঠতে পারা এই ড্রোন অনায়াসে যে কোনো রেডারের চোখকে ফাঁকিও দিতে পারে।

   

সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই ড্রোন একটানা ষাট মিনিট ধরে উঠতে পারে, দূর থেকে যদি একে নিয়ন্ত্রণ করা হয় তাহলে এটি প্রায় ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত যেতে পারে, আর স্বয়ংক্রিয়ভাবে এর যাওয়ার ক্ষমতা ৩০ কিলোমিটার এরও বেশি! শুধুমাত্র কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু, কনভয় বা শত্রু শিবিরে হামলা চালানোর কাজই নয়, এই ড্রোনে থাকা উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ডে-নাইট সার্ভিলেন্স ক্যামেরার জন্য, প্রয়োজনে শত্রু শিবিরে নজরদারিও চালানো যেতে পারে। রেডারে না ধরা পড়ার ক্ষমতা একে অতি উন্নত গুপ্তচরেও পরিণত করেছে।

Made-in-India Nagastra-1 Suicide Drones

নাগপুরের ‘ইকোনমিক্স এক্সপ্লক্সিভ লিমিটেড’ প্রথম দফায় ভারতীয় সেনাকে, ১৩০ টি এই ধরনের ড্রোন ইতিমধ্যেই সরবরাহ করে দিয়েছে! যার পরীক্ষামূলক ব্যবহারে সাফল্যও এসেছে। এরকম প্রায় ৪৮০ টি ড্রোন পাওয়ার কথা ভারতীয় সেনার। মূলত দুর্গম পাহাড়ি এলাকা বিশেষ করে চীন এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতে নজরদারি এবং প্রয়োজনে শত্রুপক্ষের উপরে আক্রমণের কাজে ব্যবহৃত হবে এই ড্রোনগুলি। দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হওয়ায়, এগুলো তৈরী এবং রক্ষণাবেক্ষণের খরচ অপেক্ষাকৃত অনেকটা কম বলেই জানা যাচ্ছে সূত্র মারফত।

জিপিএস প্রযুক্তিতে লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করা এই ড্রোনগুলির লক্ষ্যস্থল নির্বাচনে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ২ মিটার বলে জানা যাচ্ছে। অর্থাৎ প্রায় নিখুঁত পয়েন্টে আক্রমণ চালাতে পারে এই ড্রোনগুলি। কিন্তু যে বিষয়টি সারা বিশ্বের অন্যান্য ড্রোনগুলি থেকে আমাদের এই নাগাস্ত্রকে একেবারে আলাদা করে দিয়েছে এটা এবার বলি।

সাধারণত বলা হয় যে বন্দুক থেকে বের হওয়া গুলি আর কখনোই ফেরত আনা যায় না। ড্রোনের ক্ষেত্রেও অনেকটাই একথাই প্রযোজ্য, একবার লক্ষ্যবস্তু নির্ধারণ করে দিলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই স্বয়ংক্রিয় ড্রোনকে ফিরিয়ে নিয়ে আসার প্রযুক্তি বিশ্বের অধিকাংশ আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন দেশের কাছেও নেই। কিন্তু ভারতের এই নাগাস্ত্র, একবার শত্রুপক্ষের উপরে লক্ষ্য স্থির করার পরেও ফিরিয়ে আনা যায়। যদি কোনো কারণে মনে হয় যে আক্রমণ করতে হবে না, সেক্ষেত্রে অনায়াসে এই ড্রোনগুলোকে ফিরিয়ে নিয়ে এসে তাদের সফট ল্যান্ডিং করিয়ে নেওয়া যায়।

অর্থাৎ এরপরে হয়তো সীমান্তে অতর্কিত আক্রমণের কারণে আমাদের জওয়ানদের শহীদ হওয়া বা শত্রু সৈন্যের অনুপ্রবেশ, অনেকটাই ঠেকানো সম্ভব হবে। পাল্টা মার দিতেও কোনো রকম অসুবিধা হবে না। বিশেষ করে চীন সীমান্তে এই ড্রোনগুলির কার্যকারিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন সেনা বিশেষজ্ঞরা। ড্রাগনের বিষাক্ত নিঃশ্বাস এর পাল্টা নাগ দেবতার বিষাক্ত ছোবল। এবার বিষে বিষে বিষক্ষয় কতটা হয় সেটাই দেখার বিষয়।