বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের (Hindu community) নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ভারত। সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর একাধিক হামলার ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি বাড়ি এবং দোকানপাটে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি ভাঙচুরের খবর এসেছে। এর প্রেক্ষিতে ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সরকারকে অবিলম্বে হিন্দুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য জোরালো পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
চট্টগ্রামে উত্তেজনার সূচনা
গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের সাথে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে একটি ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে, যেখানে ইসলামিক তরুণদের দ্বারা ইসকনকে (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করা হয়।
প্রতিবাদের উত্তাল রূপ
ফেসবুক পোস্টটির পরপরই স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তারা প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করে এবং কিছু এলাকায় পুলিশের সাথে সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। চট্টগ্রামের স্থানীয় সাংবাদিক সাইফুদ্দিন তুহিন ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন, পুলিশ এবং সেনাবাহিনী যৌথ অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।
তুহিন আরও বলেন যে, এই প্রতিবাদগুলো শান্তিপূর্ণ ছিল, তবে পরিস্থিতি দ্রুত উত্তেজনাপূর্ণ রূপ নেয় যখন কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে ইটপাটকেল ছুড়ে মারে।
ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বৃদ্ধি
বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিছু গোষ্ঠী এবং ব্যক্তি ইসকনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়েছে, যা ধর্মীয় সম্প্রদায়গুলির মধ্যে আরও বিভাজন ঘটিয়েছে। বিশেষ করে হিন্দু সংখ্যালঘুদের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
ভারত সরকারের পদক্ষেপ
ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সরকারকে দ্রুত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়েছে যে, পরিস্থিতি সামলাতে জরুরি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। ভারত সরকার হিন্দু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ সরকারের ওপর জোরালো চাপ সৃষ্টি করেছে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে নিরাপত্তার অভাব অনুভূত হলে তা শুধু তাদেরই নয়, দুদেশের সম্পর্কেও প্রভাব ফেলতে পারে। অতএব, অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে পুনরায় অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের উত্তর
বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, তারা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে বেশ সচেতন। পুলিশ এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।