ডিসেম্বরে ভারতে আসছে নতুন চিতারা, আলোচনা চলছে আফ্রিকার সঙ্গে

ভারতে আবারও চিতার (Cheetah) আগমন হতে পারে এই বছরের ডিসেম্বর মাসে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আফ্রিকার তিনটি দেশ—কেনিয়া, বতসোয়ানা এবং নামিবিয়ার সঙ্গে চিতা পুনঃপ্রবর্তনের…

ভারতে আবারও চিতার (Cheetah) আগমন হতে পারে এই বছরের ডিসেম্বর মাসে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আফ্রিকার তিনটি দেশ—কেনিয়া, বতসোয়ানা এবং নামিবিয়ার সঙ্গে চিতা পুনঃপ্রবর্তনের জন্য আলোচনা চলছে। নতুন ব্যাচে প্রায় ৮ থেকে ১০টি চিতার আগমন হতে পারে।

চিতাদের দেশে পুনঃপ্রবর্তনের উদ্যোগ ভারতের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ প্রকল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চিতা দেশে দীর্ঘদিন আগে বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল, তবে বর্তমানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে তাদের আবার ভারতীয় বনাঞ্চলে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।

   

সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বতসোয়ানা বা নামিবিয়ার থেকে আসা চিতাদের কুনো এবং গান্ধিনগর স্থানে পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। উভয় স্থানে ইতিমধ্যেই নিরাপদ বন্দি এলাকা, পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চিতারা নতুন পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে এবং দীর্ঘমেয়াদে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা বাড়বে।

কেনিয়ার চিতারা যদি আসে, তবে তাদের বাণী অঞ্চলে প্রেরণের পরিকল্পনা রয়েছে। পরিবেশ মন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব সম্প্রতি নামিবিয়ার পরিবেশমন্ত্রী ইন্ডিলেনি ড্যানিয়েলের সঙ্গে বৈঠকে চিতা সংরক্ষণ এবং জলাভূমি সংরক্ষণ নিয়ে আলোচনা করেছেন। দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা আরও গভীর করার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।

চিতা পুনঃপ্রবর্তন প্রকল্প ভারতের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। ১৯৫২ সালে চিতা দেশে বিলুপ্ত হয়। এরপর আফ্রিকা থেকে মোট ২০টি চিতা দেশে আনা হয়েছে—নামিবিয়ার থেকে ৮টি চিতা ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে এবং দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১২টি চিতা ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে। এই চিতাদের মধ্যে ১১টি বেঁচে আছে। দেশে চিতা পুনঃপ্রবর্তনের পর মোট ২৬টি শাবক জন্ম নিয়েছে, যার মধ্যে ১৭টি বেঁচে গেছে।

Advertisements

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চিতাদের পুনঃপ্রবর্তন কেবল বন্যপ্রাণীর বৈচিত্র্য বাড়াবে না, বরং স্থানীয় ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য রক্ষা করবে। বিশেষ করে কুনো, গান্ধিনগর ও বাণী অঞ্চলের বনাঞ্চল চিতাদের জন্য উপযুক্ত অভয়ারণ্য হিসেবে কাজ করবে।

এছাড়াও চিতা সংরক্ষণ প্রকল্পের ফলে পর্যটন ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। বন্যপ্রাণীপ্রেমী ও গবেষকরা চিতাদের দর্শনের জন্য ভারতীয় বনাঞ্চলে আসবেন, যা স্থানীয় অর্থনীতি ও সম্প্রদায়ের উন্নয়নে সহায়ক হবে।

চিতা সংরক্ষণ প্রকল্প সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং অংশীদারদের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে। চিতাদের স্বাস্থ্য, খাদ্য, নিরাপত্তা ও প্রজনন নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

ফলে, ডিসেম্বর মাসে নতুন চিতাদের আগমন ভারতের চিতা পুনঃপ্রবর্তন প্রকল্পকে আরও শক্তিশালী করবে। এই উদ্যোগ দেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের পরিবেশ সচেতনতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News