নয়াদিল্লি: ভারত সরকার সোমবার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের দেওয়া পারমাণবিক হুমকির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিতে এই হুমকিকে ‘পারমাণবিক আতঙ্ক ছড়ানোর প্রচেষ্টা’ এবং ‘পাকিস্তানের রাজনৈতিক কৌশলের একটি অংশ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে (India Pakistan nuclear threat)।
পাকিস্তানের এই চরম ভাষায় পারমাণবিক হুমকি দেওয়া প্রথমবারের মতো মার্কিন মাটিতে উঠলো। আসিম মু্নির আমেরিকা সফরের সময় একটি বেসরকারি অনুষ্ঠানে জানান, “আমরা একটি পারমাণবিক রাষ্ট্র। যদি আমরা ধ্বংসের মুখে পড়ি, তাহলে সারা পৃথিবীর অর্ধেককে সঙ্গে নিয়ে যাবো।” তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, “ভারত যদি কোনো বাঁধ নির্মাণ করে, আমরা দশটি ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে তা ধ্বংস করে দেবো। সিন্ধু নদী ভারতীয়দের পারিবারিক সম্পত্তি নয়। আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের কোনও ঘাটতি নেই।”
ভারত সরকার এই মন্তব্যকে “অত্যন্ত দায়িত্বহীন” এবং “অঞ্চল ও বিশ্ব নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি” হিসেবে অভিহিত করেছে। বিদেশ মন্ত্রক বলেছে, “এই ধরনের মন্তব্য পাকিস্তানের পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ এবং কমান্ডে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনিশ্চয়তার কথা পুনরায় সামনে নিয়ে আসে, যেখানে সেনাবাহিনী সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করে।”
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “এই মন্তব্য একটি বন্ধুত্বপূর্ণ তৃতীয় দেশের মাটিতে প্রকাশ পাওয়ায় আমরা অত্যন্ত দুঃখিত। ভারত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলিংয়ের সামনে মাথা নত করবে না।”
সরকারি সূত্রের বক্তব্য, “যখনই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে সমর্থন দেয়, তখন তারা নিজেদের আসল চেহারা দেখায়। পাকিস্তানে গণতন্ত্র নেই, সেনাবাহিনী দেশ চালায় এবং পারমাণবিক অস্ত্রের হাত বদলের ভয়াবহ সম্ভাবনা রয়েছে।”
পাক সেনাপ্রধানের এই মন্তব্য আসে ভারত–পাকিস্তানের মধ্যে চার দিনের সাম্প্রতিক সংঘর্ষ এবং তার পরে তাঁর দ্বিতীয় মার্কিন সফরের সময়। পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানিয়েছে, এই সফরে তিনি উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত পাকিস্তানি ডায়াস্পোরার সঙ্গে দেখা করেছেন।
ভারতের প্রতিক্রিয়া স্পষ্ট, “আমরা আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় সমস্ত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছি।”