সিন্ধ নিয়ে রাজনাথের মন্তব্যে কড়া প্রতিক্রিয়া ইসলামাবাদের, দিল পাল্টা পরামর্শ

India Pakistan Diplomatic Row

দিল্লিতে সিন্ধি সমাজ সম্মেলনে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং-এর বক্তব্যের রেশেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল ভারত–পাকিস্তান কূটনৈতিক অক্ষ। সিন্ধ প্রদেশ “একদিন ফের ভারতে ফিরে আসতে পারে” রাজনাথের এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই রাতারাতি তীব্র নিন্দা-সুরে বিবৃতি জারি করল পাকিস্তান। আর শুধু আপত্তি নয়, বিবৃতিতে ঘুরিয়ে নয়াদিল্লিকে পাল্টা উপদেশ দিয়েছে ইসলামাবাদ — “নিজের অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলির সমাধানে মন দিক ভারত।”

Advertisements

রবিবার গভীর রাতে পাকিস্তানের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে প্রকাশিত বিবৃতিতে অভিযোগ, রাজনাথের মন্তব্য “হিন্দুত্ববাদী চিন্তাধারার বহিঃপ্রকাশ”, যা “আন্তর্জাতিক আইন এবং প্রতিষ্ঠিত বাস্তবকে চ্যালেঞ্জ করে।” ইসলামাবাদ আরও বলেছে, “উস্কানিমূলক এবং আঞ্চলিক শান্তির পরিপন্থী মন্তব্য থেকে বিরত থাকার জন্য ভারতীয় নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”

   

ভারতের ভিতরের পরিস্থিতি নিয়ে পাক চাপ

বিবৃতি এখানেই থেমে থাকেনি। পাকিস্তান সরাসরি ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যুগুলিকে টেনে এনে কূটনৈতিক চাপ বাড়ানোর চেষ্টা করেছে। উল্লেখ করা হয়েছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাবিষয়ক প্রশ্ন। সুর চড়িয়ে ইসলামাবাদের বক্তব্য, “ভারত নিজের নাগরিকদের, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারলে তা অনেক বেশি গঠনমূলক হবে।”

তারপরই উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রসঙ্গ। পাকিস্তানের দাবি, ওই অঞ্চলের নাগরিকদের অভিযোগগুলির যথাযথ প্রতিকারের বদলে “হিংসা ও নিপীড়ন চলছেই।” বিবৃতিতে মন্তব্য করা হয়েছে, “যারা হিংসা উস্কে দেয়, তাদের জবাবদিহি নিশ্চিত করার দায় ভারত সরকারের।”

অবধারিতভাবেই উঠে এল কাশ্মীর India Pakistan Diplomatic Row

দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক রুটিন মেনে বিবৃতির শেষ অংশে উঠে আসে জম্মু ও কাশ্মীর প্রসঙ্গও। ইসলামাবাদের বক্তব্য, “রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব এবং কাশ্মীরবাসীর আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী সমস্যার সমাধানে ভারতকে উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।” 

Advertisements

একই সঙ্গে পাকিস্তান জানিয়েছে, বিরোধ শান্তিপূর্ণ পথে মেটাতে তারা আগ্রহী হলেও “নিজেদের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা রক্ষায় কোনও আপস করবে না।”

রাজনাথ কী বলেছিলেন

রাজনাথ সিংহ তাঁর বক্তৃতায় লালকৃষ্ণ আডবাণীর লেখার প্রসঙ্গ তুলতে গিয়ে জানান, “আডবাণী লিখেছেন, সিন্ধের বিচ্ছেদ সিন্ধি হিন্দুরা কোনও দিন মেনে নেননি। সভ্যতার পরিমণ্ডলে সিন্ধ সর্বদাই ভারতের অংশ। সীমান্ত বদলায়, ভূখণ্ড বদলায়। কে বলতে পারে, হয়তো কোনও দিন সিন্ধ আবার ভারতের সঙ্গে যুক্ত হবে।” ঠিক এই লাইনগুলিই ইসলামাবাদের রোষের কেন্দ্রে।

বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

এখনও পর্যন্ত ভারত সরকারের তরফে পাক বিবৃতির আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া নেই। তবে কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারত–পাক সংলাপ কার্যত স্থগিত এবং কাশ্মীর–সীমান্ত উত্তেজনা জারি থাকা অবস্থায় এ ধরনের বক্তব্য দুই দেশের সম্পর্ককে আরও তীব্র সংঘাতের দিকে ঠেলে দিতে পারে।