আফগানিস্তানের শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফেরাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্কবার্তা দিল ভারত। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী প্রতিনিধি পারভাথনেনি হরিশ বলেন, “ভারত আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে নিশ্চিত করতে হবে যে, রাষ্ট্রসংঘের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠন ও ব্যক্তি আফগান ভূমি ব্যবহার করে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাতে পারবে না।”
হরিশ আরও বলেন, ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে রয়েছে গভীর ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক, এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা ভারতের জন্য “সর্বোচ্চ গুরুত্ব” বহন করে। তিনি আফগানিস্তানের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার অপরিহার্যতাও তুলে ধরেন।
ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর আফগানিস্তানের কার্যনির্বাহী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুততাকি-এর সঙ্গে দু’বার ফোনালাপ করেছেন। আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে ২২ এপ্রিল পহালগামের সন্ত্রাসী হামলার কড়া নিন্দা প্রকাশকেও হরিশ স্বাগত জানিয়েছেন।
আফগান পুনর্গঠন: নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন
হরিশ বলেন, আফগানিস্তানের পুনর্গঠন শুধুমাত্র শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে সম্ভব নয়। তিনি সতর্ক করেছেন, “বস্তুত, ‘ব্যবসা যেমন আছে’ নীতি কোনো ফল দিবে না। আফগান জনগণের প্রত্যাশা পূরণের জন্য নতুন ও সৃজনশীল পদক্ষেপের প্রয়োজন।” তিনি যোগ করেন, আফগান জনগণ দীর্ঘদিন ধরে কঠিন পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করছে এবং এখনও পর্যাপ্ত উন্নয়নমূলক সহায়তা পাননি।
মানবিক সহায়তা ও অবকাঠামো উন্নয়নে ভারতের অঙ্গীকার india calls out pakistan at unsc
হরিশ আফগান জনগণের দারিদ্র্য, ক্ষুধা এবং স্বাস্থ্যগত সংকটের প্রতি আন্তর্জাতিক সহানুভূতি জোর দিয়ে বলেন। ভারতের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জরুরি সহায়তা হিসাবে ১,০০০ পরিবারিক তাবু, ১৫ টন খাদ্যসামগ্রী এবং পরবর্তী পর্যায়ে আরও ২১ টন ত্রাণ সামগ্রী, যেমন ওষুধ, হাইজিন কিট, কম্বল ও জেনারেটর পাঠানো হয়েছে।
তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে ভারত আফগানিস্তানে প্রায় ৫০,০০০ টন গম, ৩৩০ টন ওষুধ ও ভ্যাকসিন, ৪০,০০০ লিটার কীটনাশক এবং অন্যান্য জরুরি সামগ্রী পাঠিয়েছে। জাতিসংঘের ড্রাগস অ্যান্ড ক্রাইম অফিসের সঙ্গে যৌথভাবে নারীদের জন্য ড্রাগ পুনর্বাসন প্রোগ্রামে ৮৪ টন সহায়তা এবং ৩২ টন সমর্থন সামগ্রী সরবরাহ করা হয়েছে।
ভারতের অটল অঙ্গীকার
হরিশ স্পষ্টভাবে বলেন, আফগান জনগণের উন্নয়ন ও কল্যাণে ভারতের অটল অঙ্গীকার অব্যাহত থাকবে। বর্তমানে ভারতের অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে মানবিক সহায়তা, ক্ষমতা-উন্নয়নমূলক প্রকল্প এবং আফগানিস্তানের সব প্রদেশে ৫০০টির বেশি উন্নয়ন প্রকল্প ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। ভারত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সমন্বয় রেখে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধ আফগানিস্তানের জন্য সমর্থন চালিয়ে যাবে।