Toll Collection: ২০২৪ সালে ভারতের টোল প্লাজা থেকে আয় রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। চলতি বছরে কেন্দ্রীয় সরকার টোল আদায়ের মাধ্যমে ₹৭০,০০০ কোটিরও বেশি আয় করেছে। অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রসার, নতুন টোল প্লাজার সংযোজন এবং যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে এই আয়ের পরিমাণ আগের তুলনায় অনেক বেশি বেড়েছে।
টোল আদায়ে রেকর্ড বৃদ্ধি
২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে প্রতিদিনের টোল আদায়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফাস্টট্যাগ এবং অন্যান্য ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থার প্রয়োগের ফলে টোল আদায় প্রক্রিয়া দ্রুত ও কার্যকর হয়েছে। এখন দিনে প্রায় ₹২০০ কোটির বেশি টোল আদায় হচ্ছে। এটি দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে একটি বড় পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রভাব
ভারতে মহাসড়ক এবং এক্সপ্রেসওয়ের উন্নয়নের ফলে পরিবহন ব্যবস্থা অনেক উন্নত হয়েছে। শিল্প ও ব্যবসার প্রসার ঘটেছে, যার ফলে পণ্য পরিবহনের জন্য ভারী যানবাহনের সংখ্যা বেড়েছে। সেইসঙ্গে যাত্রীবাহী গাড়ির চলাচলও বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে টোল আদায়ের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
নতুন টোল প্লাজার ভূমিকা
২০২৪ সালে দেশে অনেক নতুন টোল প্লাজা স্থাপন করা হয়েছে। বিশেষত, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গুজরাট এবং তামিলনাড়ুতে নতুন প্রকল্পগুলির মাধ্যমে টোল আদায়ে বড়ো মাপের বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের (NHAI) পরিকল্পিত উদ্যোগের ফলে এই নতুন প্লাজাগুলি চালু হয়েছে, যা আয়ের নতুন পথ খুলে দিয়েছে।
ডিজিটাল পেমেন্টের প্রভাব
টোল আদায়ের ক্ষেত্রে ফাস্টট্যাগ ব্যবহারের বাধ্যতামূলক প্রয়োগ বড় ভূমিকা পালন করেছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে যানবাহনের অপেক্ষার সময় কমেছে এবং আদায় প্রক্রিয়া স্বচ্ছ হয়েছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে টোল আদায় হওয়ায় অর্থ চুরির ঝুঁকি কমেছে এবং সরকার আরও বেশি রাজস্ব সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়েছে।
পরিবহন শিল্পের চ্যালেঞ্জ
যদিও টোল আদায়ের বৃদ্ধি সরকারের জন্য ইতিবাচক দিক, এটি যানবাহন চালকদের জন্য অতিরিক্ত ব্যয় হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বিশেষত, যেসব পণ্য পরিবহনকারী ট্রাক প্রতিদিন একাধিক টোল প্লাজা অতিক্রম করে, তাদের জন্য এই ব্যয় অনেক সময় বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। তবুও, এই অর্থ পুনরায় মহাসড়ক উন্নয়নে বিনিয়োগ করা হচ্ছে বলে সরকার জানিয়েছে।
ভবিষ্যতের পরিকল্পনা
সরকার আগামী পাঁচ বছরে টোল আদায়ের পরিমাণ দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা করছে। নতুন এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ, উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং ডিজিটাল পদ্ধতির বিস্তার এই লক্ষ্য পূরণে সাহায্য করবে। পাশাপাশি, পরিবহন খাতে আরও বিনিয়োগ আনতে সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে।
সারসংক্ষেপ
টোল আদায় থেকে প্রাপ্ত আয় শুধুমাত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের চিত্রই তুলে ধরে না, বরং দেশের অবকাঠামোগত অগ্রগতিকেও প্রতিফলিত করে। তবে চালকদের বাড়তি খরচের বিষয়টি মাথায় রেখে টোলের পরিমাণ নির্ধারণে ভারসাম্য বজায় রাখা প্রয়োজন। যদি এই উদ্যোগগুলি পরিকল্পিতভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে ভারতের পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে।
শেষ কথা
ভারতের টোল প্লাজার আয় ₹৭০,০০০ কোটির মাইলফলক ছাড়িয়েছে। এটি শুধু একটি সংখ্যা নয়, বরং দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম ও অবকাঠামোগত অগ্রগতির প্রতীক। আগামী দিনে টোল আদায়ের প্রক্রিয়া আরও উন্নত ও পরিবহন ব্যবস্থা আরও গতিশীল হবে, এমনটাই আশা করছে সবাই।

