সরকারি জমিতে দরগা, গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন

গুজরাটের দ্বারকাধীশের পবিত্র ভূমি বেট দ্বারকায় বড় আকারের উচ্ছেদ অভিযান (Illegal Dargah) পরিচালিত হয়েছে। প্রশাসন সেখানে অবৈধভাবে নির্মিত হজরত পাঞ্জ পীর দরগাসহ তিনটি ধর্মীয় কাঠামো…

Hazrat Panj Peer Illegal Dargah demolished in Bet Dwarka, Gujarat

short-samachar

গুজরাটের দ্বারকাধীশের পবিত্র ভূমি বেট দ্বারকায় বড় আকারের উচ্ছেদ অভিযান (Illegal Dargah) পরিচালিত হয়েছে। প্রশাসন সেখানে অবৈধভাবে নির্মিত হজরত পাঞ্জ পীর দরগাসহ তিনটি ধর্মীয় কাঠামো এবং ২০০টি অবৈধ আবাসিক ভবন গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এই অভিযানের মাধ্যমে প্রায় ₹৯.৫ কোটি টাকার সরকারি জমি পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

   

অবৈধ দখল উচ্ছেদ অভিযান
বেট দ্বারকার প্রশাসন এবং পুলিশের যৌথ উদ্যোগে এই অভিযান চালানো হয়। বেশ কিছুদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল যে সরকারি জমিতে একাধিক ধর্মীয় এবং আবাসিক স্থাপনা অবৈধভাবে তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে হজরত পাঞ্জ পীর দরগাটি দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কের কেন্দ্রে ছিল। অবশেষে, প্রশাসনের নির্দেশে এবং গুজরাট হাইকোর্টের অনুমোদনে অভিযান শুরু হয়।

গুজরাট সরকারের কঠোর অবস্থান
গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সঙ্ঘভি অভিযানের পর এক বিবৃতিতে বলেন, “কৃষ্ণের ভূমিতে কোনো অবৈধ দখলদারি আমরা বরদাশত করব না।” তিনি আরও জানান, সরকারি জমি পুনরুদ্ধারে সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে এবং কোনো ধরণের রাজনৈতিক বা ধর্মীয় চাপে মাথা নত করবে না।

দ্বারকাধীশের পবিত্র ভূমি রক্ষার উদ্যোগ
দ্বারকা ভারতের অন্যতম ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক স্থান। দ্বারকাধীশ ভগবান কৃষ্ণের পবিত্র ভূমি হিসেবে পরিচিত এই স্থান হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই ভূমিতে অবৈধ দখলদারি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বাসিন্দা ও ধর্মীয় নেতারা অভিযোগ জানিয়ে আসছিলেন। সরকারের উদ্যোগে এই সমস্যার সমাধান হওয়ায় তারা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

দরগা ও আবাসিক ভবন উচ্ছেদ
হজরত পাঞ্জ পীর দরগা ছাড়াও আরও দুটি ধর্মীয় কাঠামো এবং ২০০টি আবাসিক ভবন উচ্ছেদ করা হয়েছে। এগুলো দীর্ঘদিন ধরে সরকারি জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছিল। অভিযানের সময় বেশ কিছু স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও প্রশাসন আইন ও শৃঙ্খলার উপর কড়া নজর রেখেছিল।

সামাজিক প্রতিক্রিয়া
এই উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে সামাজিক এবং রাজনৈতিক মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। একদিকে স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানানো হয়েছে, অন্যদিকে কয়েকটি মহল থেকে এর নিন্দা জানানো হয়েছে।

সরকারি জমি পুনরুদ্ধার ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
অভিযানের মাধ্যমে পুনরুদ্ধার করা ₹৯.৫ কোটির জমি ভবিষ্যতে বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, বেট দ্বারকাকে একটি আধুনিক এবং পর্যটকবান্ধব এলাকায় পরিণত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

উচ্ছেদ অভিযানের প্রভাব
এই অভিযানের ফলে বেট দ্বারকার পরিবেশ ও অবকাঠামোতে বড় পরিবর্তন আসতে পারে। তবে উচ্ছেদের কারণে যেসব পরিবার তাদের বাসস্থান হারিয়েছে, তাদের পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকার কোনো মন্তব্য করেনি।

গুজরাট সরকারের এই পদক্ষেপ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং কৃষ্ণের ভূমিকে অবৈধ দখলমুক্ত করার জন্য একটি বড় উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এই অভিযানের দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব কী হবে, তা সময়ই বলে দেবে।