মুখ্য সচিবকে অশ্লীল কটূক্তি, রবিকুমারের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ হাইকোর্টের

কর্ণাটক হাইকোর্ট (high-court) আজ ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) বিধান পরিষদ সদস্য (MLC) এন রবিকুমারের দায়ের করা একটি আবেদনের জবাবে নোটিস জারি করেছে। রবিকুমার এই আবেদনে…

high-court notice to ravikumar

কর্ণাটক হাইকোর্ট (high-court) আজ ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) বিধান পরিষদ সদস্য (MLC) এন রবিকুমারের দায়ের করা একটি আবেদনের জবাবে নোটিস জারি করেছে। রবিকুমার এই আবেদনে রাজ্যের মুখ্য সচিব ড. শালিনী রাজনীশের বিরুদ্ধে অবমাননাকর ও অশ্লীল মন্তব্যের জন্য তার বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি এফআইআর বাতিলের দাবি জানিয়েছেন।

হাইকোর্ট (high-court) আগামী মঙ্গলবার, ৮ জুলাই পর্যন্ত রবিকুমারের বিরুদ্ধে কোনো তাড়াহুড়ো করে পদক্ষেপ না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে এবং তাকে তদন্তে সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছে। শুনানির সময় বিচারপতি এস আর কৃষ্ণ কুমার তীব্র মন্তব্য করে বলেন, “রাজনীতিবিদরা নতুন করে নীচে নেমে যাচ্ছেন।”

   

আদালতের (high-court) আদেশে বলা হয়েছে, “প্রতিবাদীকে নোটিস জারি করা হয়েছে, মঙ্গলবার ফেরতযোগ্য। ততক্ষণ পর্যন্ত আবেদনকারীর বিরুদ্ধে কোনো তাড়াহুড়ো পদক্ষেপ গ্রহণ করা যাবে না। আবেদনকারীকে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে।”

এই ঘটনার সূত্রপাত গত ১ জুলাই, ২০২৫-এ বিধান সৌধার সামনে বিজেপির একটি প্রতিবাদ সমাবেশে। রবিকুমার বলেছিলেন, “মুখ্য সচিব রাতে রাজ্য সরকারের জন্য কাজ করেন এবং দিনের বেলা মুখ্যমন্ত্রীর জন্য।” এই মন্তব্যটি একটি টিভি চ্যানেলে রেকর্ড হয় এবং সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যার ফলে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়।

কংগ্রেস (high-court)এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে বিধান সৌধা থানায় অভিযোগ দায়ের করে এবং এমএলসি রবিকুমারের সদস্যপদ স্থগিত করার দাবিতে বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান বসবরাজ হোরাট্টির কাছে আবেদন জানায়। অভিযোগে বলা হয়, রবিকুমার ও বিধান পরিষদের বিরোধী দলনেতা চলবাদি নারায়ণস্বামী একজন সিনিয়র মহিলা আমলার বিরুদ্ধে “অসংসদীয় এবং অশ্লীল ভাষা” ব্যবহার করেছেন।

কর্ণাটক আইএএস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার কাছে চিঠি দিয়েছে। (high-court) তারা বলেছে, “মুখ্য সচিব কর্ণাটকের সর্বোচ্চ সিভিল পদে অধিষ্ঠিত এবং তিনি তার সততা, প্রতিশ্রুতি এবং বিশিষ্ট জনসেবার জন্য ব্যাপকভাবে সম্মানিত। জনসমক্ষে করা এই মন্তব্য অশ্লীল, মানহানিকর এবং তার পদের মর্যাদা ও বৃহত্তর সিভিল সার্ভিসের উপর সরাসরি আঘাত।

এটি পাবলিক প্রতিষ্ঠান এবং তাদের উপর জনগণের আস্থাকে অবমাননা করে।” অ্যাসোসিয়েশন আরও উল্লেখ করেছে যে, এটি রবিকুমারের প্রথম অপরাধ নয়। এর আগে তিনি কালবুর্গির ডেপুটি কমিশনার ফৌজিয়া তারান্নুমের জাতীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছিলেন, “আমি জানি না তিনি পাকিস্তান থেকে এসেছেন নাকি এখানকার আইএএস অফিসার।” এই মন্তব্যের জন্য হাইকোর্ট তাকে ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দিয়েছিল।

অ্যাসোসিয়েশন (high-court) তিনটি দাবি উত্থাপন করেছে: রবিকুমারের কাছ থেকে সর্বজনীন ও নিঃশর্ত ক্ষমাপ্রার্থনা, প্রযোজ্য আইনের অধীনে তাৎক্ষণিক আইনি পদক্ষেপ এবং বিধান পরিষদে আনুষ্ঠানিক নিন্দা প্রস্তাব। তারা বলেছে, “সিভিল সার্ভেন্টদের ভয়, অপমান বা রাজনৈতিক হুমকি ছাড়া তাদের দায়িত্ব পালনের অনুমতি দেওয়া উচিত। আমরা সরকারকে প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষা করতে এবং দ্রুত ও উদাহরণস্বরূপ পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ করছি।”

Advertisements

বিধান সৌধ (high-court) থানায় নাগরথনা নামে এক সমাজকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে রবিকুমারের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার (বিএনএস) ৩৫১(৩) (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন), ৭৫(৩) (যৌন হয়রানি) এবং ৭৯ (মহিলার মর্যাদা অপমানের উদ্দেশ্যে শব্দ, অঙ্গভঙ্গি বা কাজ) ধারায় এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্ক খড়্গে এই মন্তব্যকে ‘মনুস্মৃতির নারীবিদ্বেষী মানসিকতার প্রতিফলন’ বলে সমালোচনা করেছেন এবং রবিকুমারের আরএসএস প্রশিক্ষণের উল্লেখ করে বলেছেন, “তার মনে, মস্তিষ্কে এবং জিহ্বায় নোংরামি।”

রবিকুমার (high-court) অবশ্য এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আমি গত তিন দিন ধরে হায়দরাবাদে অফিসিয়াল কাজে ছিলাম। আমি মুখ্য সচিবের বিরুদ্ধে কোনো অবমাননাকর মন্তব্য করিনি। এই রিপোর্টগুলি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর এবং মানহানিকর।” তিনি দাবি করেন, তিনি কেবল মুখ্য সচিবের অফিসে অনুপলব্ধতা নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন, যিনি বিজেপি প্রতিনিধি দলের একটি স্মারক গ্রহণ করতে উপস্থিত ছিলেন না।

মহিলা ও শিশু কল্যাণ মন্ত্রী লক্ষ্মী হেব্বালকর বলেন, “এটি বিজেপি নেতাদের মানসিকতা প্রকাশ করে। শালিনী রাজনীশ একজন সিনিয়র আইএএস অফিসার এবং হাজার হাজার মহিলার জন্য রোল মডেল।” বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান হোরাট্টি রবিকুমারের কাছে এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা চেয়েছেন এবং বলেছেন, তার জবাবের ভিত্তিতে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

কৃষি উৎপাদন নিয়ে মমতার ‘মিথ্যাচারের’ বিরুদ্ধে বিস্ফোরক তথ্য শুভেন্দুর

এই ঘটনা কর্ণাটকের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক মহলে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। রাজনীতিবিদ ও আমলাদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি এবং সরকারি প্রতিষ্ঠানের মর্যাদা রক্ষার বিষয়ে উদ্বেগ বাড়ছে। আগামী শুনানি এই মামলার দিক নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।