উত্তরকাশি: ভয়াবহ মেঘভাঙা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলা। মঙ্গলবার দুপুরে হঠাৎ করেই প্রবল বর্ষণের জেরে ধারালী গ্রামে নামে বিধ্বংসী হড়পা বান (Heavy rain continues to batter Uttarakhand)। প্রবল জলের তোড়ে ভেসে যায় গ্রামের ঘরবাড়ি, হোটেল, এমনকি সেনা ছাউনিও। এখনও পর্যন্ত চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। নিখোঁজ রয়েছেন অন্তত ৯ জন জওয়ান। দুর্গত এলাকায় চলছে উদ্ধারকাজ, তবে প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে তা ব্যাহত হচ্ছে।
ধস ও বন্যায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
উত্তরকাশী-হর্ষিল সড়কের একাধিক জায়গায় ধস নেমে বন্ধ হয়ে গেছে গুরুত্বপূর্ণ রুট। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ধারালী ও গঙ্গোত্রীর সঙ্গে উত্তরকাশীর। স্থানীয় প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, ‘‘অবিরাম বৃষ্টির জেরে রাস্তা পরিষ্কার ও সারাইয়ের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। তবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা চলছে।’’
রাজ্যে জারি লাল সতর্কতা, বন্ধ স্কুল-আঙ্গনওয়াড়ি
আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, পরিস্থিতির উন্নতির সম্ভাবনা নেই। আগামী ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে হরিদ্বার, নৈনিতাল এবং উধম সিংহ নগর জেলায়। রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টি চলবে। লাল ও কমলা সতর্কতা জারি রয়েছে বিভিন্ন জেলায়।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার চামোলি, রুদ্রপ্রয়াগ, আলমোড়া, হরিদ্বার, পিথোরাগড় সহ মোট ৯টি জেলায় স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে।
উদ্ধারকাজে সেনা, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী
দুর্গত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণে নিযুক্ত রয়েছে জাতীয় ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, ভারতীয় সেনা এবং ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত রক্ষী বাহিনী। হেলিকপ্টার নামানো হলেও খারাপ আবহাওয়ার কারণে তা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। তবু সেনার এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, সম্ভাব্য সব উপায়ে দুর্গতদের নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।
মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিক্রিয়া
ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামী একে “অত্যন্ত বেদনাদায়ক” বলে মন্তব্য করেছেন। মুখ্যসচিব আরকে সুধাংশু জানিয়েছেন, হড়পা বানের জেরে ৪০ থেকে ৫০টি বাড়ি সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। বহু মানুষ এখনও নিখোঁজ।