অবিলম্বে সন্তান নিন! রাজ্যবাসীর কাছে আর্জি মুখ্যমন্ত্রীর! কিন্তু কেন?

চেন্নাই: নব দম্পতিদের কাছে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের আজব আর্জি৷ দ্রুত সন্তান নেওয়ার আবেদন জানালেন তিনি৷ এই আর্জি শুনতে খুবই অদ্ভূত লাগতে পারে৷ তবে এর…

Have babies immediately MK Stalin's advice to Tamil people

চেন্নাই: নব দম্পতিদের কাছে তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনের আজব আর্জি৷ দ্রুত সন্তান নেওয়ার আবেদন জানালেন তিনি৷ এই আর্জি শুনতে খুবই অদ্ভূত লাগতে পারে৷ তবে এর পিছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক এবং সামাজিক উদ্বেগ। রাজ্যের সফল পরিবার পরিকল্পনা নীতির কারণে আজ তামিলনাড়ু এমন একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে, যেখানে রাজ্যের সাংসদ আসন হারানোর আশঙ্কা রয়েছে। যদি ভবিষ্যতে ডিলিমিটেশন হয়, তবে তামিলনাড়ু আটটি সাংসদ আসন হারাতে হতে পারে, যা রাজ্যের সংসদীয় প্রতিনিধিত্বে বড় আঘাত ডেকে আনবে৷

মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন বলেন, “আগে আমরা বলতাম, ‘ধীরে ধীরে সন্তান নিন’। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। এখন বলছি, ‘দ্রুত সন্তান নিন।’ পরিবার পরিকল্পনা আমাদের সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে, কিন্তু তার ফলস্বরূপ এখন আমাদের জন্য বিপদ ডেকে আনছে।”

kolkata24x7-sports-News

   

তামিলনাড়ুর পরিবার পরিকল্পনা নীতি বেশ কয়েক দশক ধরে সফলভাবে চালু হয়েছে, যার ফলস্বরূপ রাজ্যের জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে, এর একটি নেতিবাচক প্রভাবও রয়েছে। স্ট্যালিনের উদ্বেগ, যদি ২০২১ সালের জনসংখ্যা হিসাবের ভিত্তিতে আসন পুনঃনির্ধারণ করা হয়, তাহলে তামিলনাড়ু একাধিক সাংসদ আসন হারাতে পারে, যা রাজ্যের সংসদীয় শক্তি কমিয়ে দেবে।

তিনি বলেন, “আজ যে সফল পরিবার পরিকল্পনা রাজ্যকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিয়ে গেছে, সেই একই পরিকল্পনার কারণে আজ তামিলনাড়ু পিছিয়ে পড়তে পারে।” তাঁর মতে, রাজ্যের জনসংখ্যা আর অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় কম হওয়ার কারণে সাংসদ আসন হ্রাস পাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যার ফলে রাজ্যের রাজনৈতিক শক্তি কমে যেতে পারে। স্ট্যালিনের এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে, রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে তীব্র উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।

এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য, ৫ই মার্চ তামিলনাড়ুতে একটি সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন স্ট্যালিন। তিনি বলেছেন, “এটি আমাদের রাজ্যের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যদি একসাথে না দাঁড়ানো যায়, তাহলে রাজ্যের রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বের ক্ষতি হবে। এজন্য আমি সকল রাজনৈতিক দলকে বৈঠকে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।”

মুখ্যমন্ত্রী বিরোধী দলগুলোকেও দয়া করে বৈঠকে অংশগ্রহণ করার অনুরোধ জানিয়ে বলেছেন, “আমাদের রাজ্যের ভবিষ্যত রক্ষার জন্য সবাইকে একত্রিত হওয়া জরুরি। আমরা যদি একে অপরকে খাটো করে দেখি, তাহলে আমরা নিজেদের স্বার্থে ক্ষতি করবো।”

স্ট্যালিন জানান, নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ৪০টি রাজনৈতিক দলকে এই বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বৈঠকে ডিলিমিটেশন প্রক্রিয়া এবং তার রাজ্যের উপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে, সে বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে।

রাজ্যের সাংসদ আসন সংখ্যা কমলে কী হবে?

তামিলনাড়ু যদি আটটি সাংসদ আসন হারিয়ে ফেলে, তবে তা রাজ্যের জন্য একটি বড় ক্ষতি হতে পারে। স্ট্যালিন বলছেন, “এটা শুধু সংখ্যা নয়, এটি আমাদের রাজ্যের ক্ষমতা, আমাদের রাজনৈতিক শক্তির ওপর একটি বড় আঘাত। যখন সংসদে আমাদের প্রতিনিধিত্ব কমে যাবে, তখন আমরা অনেক বড় সিদ্ধান্ত থেকে বাইরে চলে যাব। আমাদের কথা আর সেভাবে শোনা হবে না।”

এছাড়া, তিনি আরও বলেন, “জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে আসন পুনঃনির্ধারণ হলে অন্য রাজ্যগুলোর তুলনায় তামিলনাড়ুর অবস্থান আরও খারাপ হতে পারে, কারণ আমরা দীর্ঘদিন ধরে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সফল।”

কীভাবে সমাধান হবে এই পরিস্থিতি?

মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন দাবি করছেন, তামিলনাড়ুর অধিকার রক্ষায় সকল রাজনৈতিক দলকে একত্রিত হওয়া প্রয়োজন। তাঁর মতে, সীমান্ত পুনঃনির্ধারণের প্রক্রিয়া নিয়ে যদি রাজ্যের সব রাজনৈতিক দল একজোট হয়ে প্রতিবাদ না জানায়, তাহলে ভবিষ্যতে রাজ্যের রাজনীতি আরও দুর্বল হয়ে পড়বে।

এছাড়া, তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সমাজের নেতাদের সাথে আলোচনা করার জন্য প্রস্তুত। স্ট্যালিনের মতে, “এই পরিস্থিতি এমন একটি পয়েন্টে পৌঁছেছে, যেখানে আমাদের একসাথে দাঁড়ানো ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।”