গুন্টুর : দেশের রাজধানী দিল্লির লাল কেল্লার কাছে সোমবার সন্ধ্যায় ঘটে যাওয়া ভয়াবহ গাড়ি বিস্ফোরণের আতঙ্ক এখনও কাটেনি, কিন্তু এর ছায়ায় আরও একটা বড় সাফল্য। মুম্বইয়ের অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়াড (এটিএস) গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যৌথ অভিযান চালিয়ে অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর জেলায় একটা প্রধান জঙ্গি আস্তানা ভেঙে দিয়েছে। কয়েকজন সন্দেহভাজনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে, এবং অসংখ্য ইনক্রিমিনেটিং ম্যাটেরিয়াল যেমন বিস্ফোরক উপাদান, প্রচারমূলক লিফলেট, ডিজিটাল ডিভাইস এবং অস্ত্রের অংশ উদ্ধার করা হয়েছে।
তদন্ত এখনও চলছে, কিন্তু সূত্র বলছে, এই মডিউলের সঙ্গে দিল্লি বিস্ফোরণের জৈশ-ই-মোহাম্মদ (জেএম) নেটওয়ার্কের যোগসূত্র রয়েছে। “দেশজুড়ে সন্ত্রাসের ছড়াছাঁটি দেখে মনে হচ্ছে, পুরো ভারতই এদের জালে আটকে পড়েছে!” এই কথা শুধু সাধারণ মানুষের মুখে নয়, রাজনৈতিক নেতাদের মুখেও শোনা যাচ্ছে। এই অভিযান দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে নতুন করে সতর্ক করে দিয়েছে।
‘ইসলামকে কলঙ্কিত করা বন্ধ হোক’! অনুরোধ ইমাম প্রধানের
ঘটনার সূত্রপাত মঙ্গলবার ভোরে। গুন্টুরের একটা শহরতলির ভাড়া বাড়িতে মুম্বই এটিএসের একটা বিশেষ দল গোয়েন্দা ইনপুটের ভিত্তিতে হানা দেয়। স্থানীয় পুলিশ এবং আন্ধ্রপ্রদেশের সিআই সেলের সহযোগিতায় এই অভিযান চালানো হয়।
বাড়ির ভিতর থেকে উদ্ধার হয়েছে ৫০০ গ্রামেরও বেশি আরডিএক্স-জাতীয় বিস্ফোরক, ১০টি মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ এবং ইউএসবি ড্রাইভ—যাতে টেলিগ্রাম চ্যাট, রিক্রুটমেন্ট ভিডিও এবং পাকিস্তান-ভিত্তিক হ্যান্ডলারদের সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ রয়েছে।
হেফাজতে আনা তিনজনের মধ্যে দুজন উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা, যারা আইএস-সমর্থিত মডিউলের সদস্য বলে সন্দেহ। তারা স্থানীয় যুবকদের র্যাডিকালাইজ করে দিল্লি, মুম্বই এবং হায়দ্রাবাদে হামলার পরিকল্পনা করছিল। গুন্টুরের এসপি রাজশেখর বলেন, “এই আস্তানা ছিল একটা হাব, যেখান থেকে দক্ষিণ ভারতে সন্ত্রাস ছড়ানো হচ্ছিল। আমরা সময়মতো ধরায় এড়াতে পেরেছি একটা বড় ধাক্কা।”
এই অভিযানের পটভূমি দিল্লির সেই ভয়ংকর বিস্ফোরণ। সোমবার সন্ধ্যা ৬:৫০-এর দিকে লাল কেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটা সাদা হুন্ডাই আই-২০ গাড়ি প্রচণ্ড ধমাকের সঙ্গে উড়ে যায়। এতে ১৩ জনের মৃত্যু, ২৫-এর বেশি আহত। তদন্তে জানা গেছে, এটি ছিল জেএম-এর ‘হোয়াইট কলার’ মডিউলের প্যানিক-ড্রিভেন হামলা, যাতে অয়োধ্যার রাম মন্দিরে ৬ ডিসেম্বর বোমা হামলার পরিকল্পনা ছিল।
এখন গুন্টুরের এই আস্তানা থেকে উদ্ধারকৃত ম্যাটেরিয়ালে সেই মডিউলের সঙ্গে লিঙ্ক পাওয়া গেছে। এনআইএ-র সূত্র বলছে, এই নেটওয়ার্ক আইএস এবং জেএম-এর মিশ্রণ, যা সোশ্যাল মিডিয়ায় রিক্রুট করে দক্ষিণ ভারতে ছড়াচ্ছে। গত এক মাসে দিল্লি, ফরিদাবাদ, শ্রীনগর এবং কুলগামে একই ধরনের অভিযানে ২০-এর বেশি গ্রেপ্তার হয়েছে, কিন্তু এখন দক্ষিণে ছড়ানো দেখে সকলে চিন্তিত।


