গোধরায় ঘন ঘন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনায় বাড়ছে উদ্বেগ

গুজরাটের (Gujarat) গোধরা শহরে সম্প্রতি ঘন ঘন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বহু বছর পর, এই শহরে আবারও হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের…

godhra-gujarat-communal-tensions-2025-recent-clashes-navratri-stone-pelting-police-station

গুজরাটের (Gujarat) গোধরা শহরে সম্প্রতি ঘন ঘন সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ও সংঘর্ষের ঘটনা নতুন করে উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে। বহু বছর পর, এই শহরে আবারও হিন্দু-মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও উত্তেজনার বাতাবরণ তৈরি হচ্ছে, যা সামাজিক স্থিতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ক্ষেত্রে একটি বড় প্রশ্নচিহ্ন তুলে ধরছে।

গত কয়েক মাসে গোধরায় অন্তত তিনটি বড় ধরণের সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার ঘটনা ঘটেছে। ছোটখাটো ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষ, পথ অবরোধ, দোকানপাট ভাঙচুর ও পাথর ছোঁড়ার ঘটনা সামনে এসেছে। সবচেয়ে সাম্প্রতিক ঘটনাটি ঘটে গত সপ্তাহে, যখন এক ধর্মীয় মিছিলের সময় দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয় এবং পরে তা উত্তপ্ত সংঘর্ষে পরিণত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্থানীয় প্রশাসনকে ১৪৪ ধারা জারি করতে হয় এবং অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

   

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই উত্তেজনার পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া খবর ও প্ররোচনামূলক বার্তার দ্রুত ছড়িয়ে পড়া, রাজনৈতিক মেরুকরণ, এবং উগ্রবাদী গোষ্ঠীর তৎপরতা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের জন্য শুধু পুলিশি ব্যবস্থা যথেষ্ট নয়, বরং স্থানীয় স্তরে সম্প্রদায়ের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সংলাপের উদ্যোগ নিতে হবে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, গোধরার সাম্প্রদায়িক পরিবেশ আবারও ২০০২ সালের বিভীষিকার স্মৃতি জাগিয়ে তুলছে। যদিও বর্তমান পরিস্থিতি তখনকার মতো ব্যাপক নয়, তবে অগ্নিসংযোগ, হুমকি ও সংঘর্ষের ধারাবাহিকতা যদি অব্যাহত থাকে, তবে তা আরও বড় সংকটে রূপ নিতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজ্যে আসন্ন স্থানীয় নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনাকে ইন্ধন দেওয়া হচ্ছে বলেও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। কিছু দল বা গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে বিভাজনের রাজনীতিকে হাতিয়ার করে ভোটব্যাংকের হিসেব কষছে বলেও অভিযোগ উঠছে।

Advertisements

এদিকে, গোধরার সাধারণ মানুষ, যারা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানেই বিশ্বাসী, তারা ক্রমাগত আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ব্যবসা, শিক্ষা ও দৈনন্দিন জীবন ব্যাহত হচ্ছে। অনেকে বলছেন, ‘‘আমরা আবারও সেই পুরনো দিনের ভয় ফিরে পেতে চাই না।’’

এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন, নাগরিক সমাজ ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের উচিত অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা এবং উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া, যাতে গোধরা শহর পুনরায় শান্তি ও সম্প্রীতির পথে ফিরে যেতে পারে।

আমাদের Google News এ ফলো করুন

২৪ ঘণ্টার বাংলা নিউজ, ব্রেকিং আপডেট আর এক্সক্লুসিভ স্টোরি সবার আগে পেতে ফলো করুন।

Google News Follow on Google News