পদপিষ্টের জন্য ‘ভগবান দায়ী’? অন্ধ্র-মন্দিরের পুরোহিতের বিস্ফোরক বয়ান!

অমরাবতী: ভূমিকম্পে ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল কাঞ্জি লালজি মেহেতার মূর্তির দোকান। বাজারের আর সব দোকান অক্ষত, কিন্তু যেন কেবল কাঞ্জি লালের দোকানের নীচেরই মেদিনী কেঁপে উঠেছিল। দোকানের ইন্সিওরেন্স চাইতে গেলে বলা হয়েছিল, ইন্সিওরেন্স কোম্পানি কিছু করতে পারবে না, কারণ এটি ‘অ্যাক্ট অব গড’ (Act of God) (ভগবানের কাজ)। ২০১২ সালে পরেশ রাওয়াল ও অক্ষয় কুমার অভিনীত ‘ও মাই গড’ (OMG) ছবি প্রশংসা আর কটাক্ষের ঝড় তুলে দিয়েছিল।

Advertisements

শনিবার অযাচিত এক মর্মান্তিক পদপিষ্ট ঘটনার সাক্ষী থেকেছে মাত্র ৪ মাস আগে তৈরি হওয়া অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhrapradesh) শ্রীকাকুলাম জেলার কাশিবুগ্গা শহরের শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দির (Venkateswara Swamy Temple)। শনিবার কার্ত্তিক অমাবস্যা উপলক্ষে মন্দিরে উপচে পরে মানুষের ভিড়। যেখানে মাত্র ৩০০০ মানুষের লোকধারণ ক্ষমতা, সেখানে প্রায় ২৫০০০ মানুষের সমাগম হয়। ফল, পদপিষ্ট ও মৃত্যু। ১০ জন ভক্ত ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন, আহত বহু।

   

কিন্তু এত পরিমাণ মানুষের সমাগম হতে চলেছে, এই নিয়ে মন্দিরের কর্মকর্তারা প্রশাসনকে কিছু জানায়নি। যার ফলে পুলিশি নিরাপত্তা না থাকার হুড়মুড় করে লোক ধুকেছে মন্দিরে। শনিবার সন্ধ্যায় এমনটাই দাবী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। যার প্রেক্ষিতে রবিবার বিস্ফোরক দাবী করলেন মন্দিরের পুরোহিত তথা ‘মালিক’ হরি মুকুন্দ পান্ডা (৯৪)। তাঁর বক্তব্য, “এটা আমার ব্যক্তিগত সম্পত্তি। আমি পুলিশ-প্রশাসনকে কেন বলতে যাব?”

অ্যাক্ট অব গড?

Advertisements

ভিড় নিয়ন্ত্রণ ব্যর্থ হওয়ায় যে এতগুল মানুষের প্রাণ গেল, সেই নিয়ে আরও ‘বিস্ফোরক’ মন্তব্য করলেন হরি মুকুন্দ পান্ডা। তাঁর দাবী, “এই ঘটনার জন্য কেউ দায়ী নন। এটা ভগবানের কাজ”। পদপিষ্টের (Stampede) ঘটনায় তদন্তের মাঝে পান্ডার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে।

তিনি বলেন, “প্রতিদিনই মন্দিরে ৩ থেকে ৪ হাজার ভক্ত আসেন। আমি ভেবেছিলাম, শনিবারেও তাই হবে। কিন্তু হথাত করে প্রচুর মানুষের ভিড় উপচে পড়ে। তাঁরা দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন। আমি সবাইকে সাবধানে দর্শন করার আর্জি জানাচ্ছিলাম। তাঁদের তো কেউ বারণ করেনি, পুলিশও না।”

জানা গিয়েছে, ওড়িশার একটি সম্ভ্রান্ত পরিবারের সদস্য হরি মুকুন্দ পান্ডা তিরুমালা শ্রিভারি মন্দির দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে কাশিবুগ্গা শহরে শ্রী ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী মন্দির নির্মাণ করেন। যাতে তাঁর খরচ হয়েছিল প্রায় ১০ কোটি টাকা। কাশিবুগ্গায় তাঁর নামে ৫০ একর জমি আছে, যার ১২ একর জায়গায় তিনি ওই মন্দির নির্মাণ করেছেন বলে জানা গিয়েছে।