গাজিয়াবাদ: বুধবার রাতের অন্ধকারে মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ল আতঙ্ক। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ জেলার ইন্দিরাপুরম এলাকার শক্তিখণ্ড–২–এর দিব্যা অ্যাপার্টমেন্টে (Ghaziabad Apartment Fire) বুধবার রাতে ঘটে গেল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। প্রায় ২০টি পরিবারকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, তবে কোনও প্রাণহানির খবর মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ ও দমকল বিভাগ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত প্রায় ৮টা ৩০ মিনিট নাগাদ ভবনের নিচতলার একটি ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে আগুনের স্ফুলিঙ্গ দেখা যায়। মুহূর্তেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে একের পর এক তলায়। আগুনের তীব্রতা এতটাই বেড়ে যায় যে গোটা ভবনটিতে ঘন ধোঁয়া ঢেকে যায়। বাসিন্দারা আতঙ্কে চিৎকার করতে করতে ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন।
খবর পেয়ে ইন্দিরাপুরম থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। প্রায় একই সঙ্গে পৌঁছে যায় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন। দমকল বাহিনীর সদস্যরা প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে লড়াই করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুনে বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাটের আসবাবপত্র, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম, কাপড়চোপড় এবং নথিপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
দমকল বিভাগের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একাধিক ফায়ার টেন্ডার পাঠাই। আগুনের উৎস সম্ভবত নিচতলার একটি ফ্ল্যাটের বারান্দা থেকে। প্রাথমিকভাবে ধারণা, বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লাগে। সৌভাগ্যবশত, সবাই সময়মতো বাইরে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।”
অগ্নিকাণ্ডের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশপাশের এলাকাতেও আতঙ্ক দেখা দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেদের উদ্যোগে ফায়ার ব্রিগেডকে খবর দেন এবং শিশু ও বৃদ্ধদের ভবন থেকে বের করতে সাহায্য করেন। দ্রুত পদক্ষেপের ফলে একটি বড় দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
এক বাসিন্দা জানান, “হঠাৎই ধোঁয়া আসতে দেখি। মুহূর্তে গোটা ফ্ল্যাট কালো হয়ে যায়। আমরা কিছু না নিয়েই নিচে নেমে যাই। বাচ্চাদের কোলে করে দৌড়ে বেরিয়ে আসি। দমকল ও পুলিশের লোকজন না থাকলে আজ হয়তো বড় বিপদ ঘটত।”
গাজিয়াবাদ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অগ্নিকাণ্ডের কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট বা গ্যাস লিকেজ সন্দেহ করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে ফরেনসিক টিম পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি, ভবনের নিরাপত্তা মান ও ইলেকট্রিক সংযোগের পর্যালোচনা চলছে।
গাজিয়াবাদের জেলা প্রশাসক বলেন, “এমন ঘটনা যাতে ভবিষ্যতে না ঘটে, সেই জন্য ভবনের বৈদ্যুতিক সংযোগ পরীক্ষা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অ্যাপার্টমেন্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার পর আপাতত ওই অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের সাময়িকভাবে কাছাকাছি কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। দমকল বিভাগ ভবনের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের কাজ শুরু করেছে।
এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় যদিও কেউ আহত হননি, তবুও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য। বাসিন্দাদের অনেকেরই ঘরের আসবাবপত্র ও ইলেকট্রনিক জিনিস পুড়ে গেছে। তবুও সবাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন এই ভেবে যে প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন।