পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষক নিয়োগ মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ের (firhad) পর চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলন নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম । তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, “সুপ্রিম কোর্টের রায় আন্দোলন করে বদলানো যায় না।”
চাকরিহারাদের উদ্দেশে ফিরহাদ বলেন (firhad)
চাকরিহারাদের উদ্দেশে তিনি (firhad) বলেন, অযথা রাস্তা অবরোধ করে জনজীবন বিঘ্নিত না করে তারা যেন স্কুলে ফিরে গিয়ে ক্লাসে পড়ানো শুরু করেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ক্লাস না করে আন্দোলন চালিয়ে গেলে আদালতে গিয়ে বিপদে পড়তে হবে। বিধাননগর এবং সল্টলেক এলাকায় চাকরিহারা শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আন্দোলনের কারণে রাস্তা অবরোধের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফিরহাদ হাকিম(firhad)।
আপনারা স্কুলে গিয়ে ক্লাস করান
তিনি (firhad)বলেন, “আন্দোলনের নামে বিধাননগর, সল্টলেকের রাস্তা বন্ধ করে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করবেন না। আপনারা স্কুলে গিয়ে ক্লাস করান। ক্লাস না করে রাস্তায় আন্দোলন করলে সুপ্রিম কোর্ট যদি উত্তর চায়, তখন কী জবাব দেবেন?” তিনি আরও বলেন(firhad), আদালতের রায় মান্য করা সকলের কর্তব্য, এবং আন্দোলনের মাধ্যমে আইনি সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করা সম্ভব নয়। তিনি আর ও বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর উপর ভরসা রাখুন স্কুলে ক্লাস না করলে সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষকদের দায়িত্ব নিয়ে প্রশ্ন করতে পারে”।
প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়ে প্রায় ২৫,৭৫৩ জন শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল হয় । এই রায়ের পর থেকেই চাকরিহারারা বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও রাস্তা অবরোধের মতো আন্দোলন শুরু করেছেন। প্রসঙ্গত গতকাল থেকে বিকাশ ভবনের সামনে তারা ধর্নায় বসেছেন। শুরু হয়েছে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ।
ফিরহাদ আন্দোলনের সমালোচনা করে বলেন
ফিরহাদ হাকিম (firhad) এই আন্দোলনের সমালোচনা করে বলেন, “আন্দোলন করে আদালতের রায় বদলানো যাবে না। আদালত যা বলেছে, তা মেনে নিয়ে নিজেদের দায়িত্ব পালন করা উচিত।” তিনি চাকরিহারাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করলেও জানান, আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে গিয়ে কোনো সমাধান সম্ভব নয়। তিনি বলেন, “আমরা সবাই চাই যেন সকলের চাকরি থাকে। কিন্তু আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু করা যায় না। আন্দোলনের নামে রাস্তা বন্ধ করে সাধারণ মানুষের কষ্ট বাড়ানো ঠিক নয়।”
এই প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, চাকরিহারারা যদি স্কুলে ফিরে না গিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান, তাহলে ভবিষ্যতে আদালতে তাদের অবস্থান আরও জটিল হতে পারে। “সুপ্রিম কোর্ট যদি জিজ্ঞাসা করে, আপনারা কেন ক্লাস করছেন না, তখন কী উত্তর দেবেন? এটা ভেবে দেখা উচিত,” বলেন ফিরহাদ। তিনি পরামর্শ দেন, আন্দোলনের পরিবর্তে আইনি পথে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা উচিত।
বিধাননগর এবং সল্টলেক এলাকায় যানজট
এদিকে, চাকরিহারাদের আন্দোলনের কারণে বিধাননগর এবং সল্টলেক এলাকায় যানজট এবং জনজীবনে বিঘ্ন ঘটছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাস্তা অবরোধের কারণে তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে সমস্যা হচ্ছে। একজন বাসিন্দা বলেন, “আমরা চাকরিহারাদের দুঃখ বুঝি, কিন্তু রাস্তা বন্ধ করে তারা আমাদের জীবন আরও কঠিন করে দিচ্ছেন। এটা ঠিক নয়।”
এবার ট্রাম্পের টার্গেট আমেরিকায় থাকা প্রবাসীরা
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে বলেছেন
রাজ্য সরকার (firhad) এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যে বলেছেন, সরকার চাকরিহারাদের পাশে আছে এবং আইনি কাঠামোর মধ্যে তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করছে। তবে, তিনি স্পষ্ট করেছেন যে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে যাওয়া সম্ভব নয়। সরকারের পক্ষ থেকে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার কথাও বলা হয়েছে, যাতে যোগ্য প্রার্থীরা আবার সুযোগ পান। সেই সাথে ফিরহাদের (firhad) গলায় সোনা গেল এক ই সুর।
অন্যদিকে, আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একাংশ ফিরহাদ হাকিমের (firhad) এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তারা বলেন, “আমরা আমাদের অধিকারের জন্য লড়াই করছি। আমাদের চাকরি হারিয়ে জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। আন্দোলন আমাদের শেষ অস্ত্র।” তাদের একটাই দাবি, চাকরি ফেরত চাই।
রাজনৈতিক মহলে বিতর্ক
রাজনৈতিক মহলেও এই ইস্যু নিয়ে বিতর্ক চলছে। বিরোধী দল বিজেপি এবং সিপিআই(এম) সরকারের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ তুলে সরকারের সমালোচনা করেছে। তারা দাবি করেছে, রাজ্য সরকারের দুর্নীতির কারণেই এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্য আন্দোলনকারীদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। আগামী দিনে এই আন্দোলন কোন দিকে মোড় নেয় এবং সরকার কীভাবে পরিস্থিতি সামাল দেয়, তা নিয়ে সবার দৃষ্টি রয়েছে।