বিপুল অংকের জরিমানার মুখে এনএসই-র প্রাক্তন এমডি

ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ বা এনএসইর প্রাক্তন এমডি তথা সিইও চিত্রা রামকৃষ্ণের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনল শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। চিত্রার বিরুদ্ধে অনিয়মের মামলায় ১৯০ পাতার…

ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জ বা এনএসইর প্রাক্তন এমডি তথা সিইও চিত্রা রামকৃষ্ণের বিরুদ্ধে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনল শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সেবি। চিত্রার বিরুদ্ধে অনিয়মের মামলায় ১৯০ পাতার রায়ে সেবি জানিয়েছে, উচ্চপদস্থ কর্তার নিয়োগ থেকে শুরু করে পদোন্নতি এমনকী, তাঁর কাজের সময়সীমা ঠিক করা সবটাই হয়েছিল হিমালয়ের এক সাধুর কথা অনুযায়ী।

সেবির রায় থেকে জানা গিয়েছে, এনএসই-র গ্রুপ অপারেটিং অফিসার এবং এমডির উপদেষ্টা পদে আনন্দ সুব্রহ্মমণ্যনের নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রেও চিত্রা ওই সাধুর পরামর্শ নিয়েছিলেন। সেভাবে নিজের কর্মকুশলতা প্রমাণ করতে না পারলেও বিপুল হারে বাড়ান হয়েছিল আনন্দের বেতন। এই অনিয়মের কারণে ইতিমধ্যেই চিত্রাকে তিন কোটি টাকা এবং অপর দুই প্রাক্তন কর্ণধার রবি নারাইন ও আনন্দ সুব্রহ্মমণ্যনকে ২ কোটি টাকা করে জরিমানা করেছে সেবি।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত এনএসইর এমডি পদে ছিলেন চিত্রা। তাঁর আমলে জাতীয় স্টক এক্সচেঞ্জে একাধিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার জেরে চিত্রার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে সেবি। সম্প্রতি সেবি তার তদন্তের রায়ে জানিয়েছে, নিজের ব্যক্তিগত এবং অফিস সংক্রান্ত সব কাজেই চিত্রা বিগত ২০ বছর ধরে হিমালয়ের ওই সাধুর পরামর্শ মেনে চলতেন। চিত্রা ওই সাধুকে ‘শিরোমণি’ নামে ডেকে থাকেন।

ওই সাধুর সম্পর্কে চিত্রা জানিয়েছেন, হিমালয় পর্বতে অবস্থান হলেও ওই সাধুর নির্দিষ্ট কোনও বাসস্থান নেই। চাইলেই তিনি যে কোনও জায়গায় হাজির হতে পারেন। এ ধরনের একজন যোগী পুরুষের পরামর্শ মেনেই তিনি আনন্দকে নিয়োগ করেছিলেন। শুধু তাই নয়, কোনও রকম সন্দেহ ছাড়াই ওই সাধুর সঙ্গে তিনি শেয়ার মার্কেটের আর্থিক ও ব্যাবসায়িক সম্পর্কিত গোপন তথ্য, ডিভিডেন্ডের পরিস্থিতি, আর্থিক ফলাফল নিয়েও অকপটে আলোচনা করতেন। এনএসই-র বিভিন্ন কর্মীর কাজের মূল্যায়নের ক্ষেত্রেও ওই সাধুর পরামর্শ মেনেই চলতেন চিত্রা। এই পুরো বিষয়টিকে ওই সাধু এবং তার সাঙ্গপাঙ্গদের টাকা লোটার চক্রান্ত বলেই মনে করছে সেবি।

জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের এপ্রিলে স্ট্র্যাটেজিক অ্যাডভাইজার হিসেবে আনন্দকে নিয়োগ করা হয়েছিল। সে সময় তাঁর বেতন ঠিক হয় ১.৬৮ কোটি টাকা। তবে তার আগে বামার লরিতে বছরে ১৫ লক্ষেরও কম টাকা বেতন পেতেন আনন্দ। মূলধনী বাজার সম্পর্কে তাঁর কোনও অভিজ্ঞতাই ছিল না। ২০১৩ সালে নিয়োগের পর ২০১৪ তে তাঁর বেতন বেড়ে হয় ২ কোটি টাকারও বেশি ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে বেতন বেড়ে হয়েছিল যথাক্রমে ৩.৩৩ ও ৪.২১ কোটি টাকা। সাধুর পরামর্শ মেনেই চিত্রা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।