বেঙ্গালুরু: দুর্গাপুরের বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে ওড়িয়া ছাত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় তোলপাড় সমগ্র দেশ। এরই মধ্যে এবার বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে সহপাঠীকে ধর্ষণের (Rape) অভিযোগ। জানা গিয়েছে, ১০ অক্টোবরেই (দুর্গাপুর কান্ডের দিন) দক্ষিণ বেঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পুরুষ শৌচাগারে সহপাঠীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে ষষ্ঠ সেমিস্টারের পড়ুয়া জীবন গৌদা (২১) নামক এক তরুণের বিরুদ্ধে।
সপ্তম সেমিস্টারের পড়ুয়া নির্যাতিতা ১৫ অক্টোবর পুলিশি অভিযোগ দায়ের করেন। বুধবার অভিযুক্ত ছাত্রকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। FIR অনুসারে, তরুণের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS) এর ধারা ৬৪ (ধর্ষণের শাস্তি)-এর অধীনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জানা গিয়েছে অভিযুক্ত তরুন নির্যাতিতার পূর্বপরিচিত। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পাড়ায় নির্যাতিতার সঙ্গে একই ক্লাসে পড়ত সে।
ঘটনার দিন তরুণী জীবন গৌদার কাছে কিছু জিনিস নিতে গিয়েছিলেন। সূত্রের খবর, দুপুরের খাবারের বিরতির সময়, গৌদা তাকে বারবার ফোন করে কলেজের সপ্তম তলায় আর্কিটেকচার ব্লকের কাছে দেখা করতে বলে। যখন তরুণী সেখানে পৌঁছন, তখন গৌদা তাঁকে জোর করে চুম্বন করার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। লিফটে করে তরুণী নেমে যাওয়ার চেষ্টা করলে অভিযুক্ত পড়ুয়া তাঁকে ষষ্ঠ তলায় ধরে ফেলে এবং পুরুষদের শৌচাগারে টেনে নিয়ে যায় এবং যৌন নির্যাতন করে বলে অভিযোগ।
১০ অক্টোবর দুপুর ১.৩০ থেকে ১.৫০ এর মধ্যে ঘটনাটি ঘটেছে বলে এফআইআরে উল্লেখ করা হয়। নির্যাতনের সময় তরুণীর মোবাইল ফোনটিও ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে জানা গিয়েছে। ঘটনার পর নিজের দুই বন্ধুকে জানান তরুণী। এমনকি জীবন গৌদা তাঁকে “ওষুধ লাগবে?” কিনা জিজ্ঞেস করে বলে অভিযোগ।
প্রথমে তরুণী পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে দ্বিধা বধ করলেও পরে সাহস জুগিয়ে তিনি ১৫ অক্টোবর বাবা-মাকে কে সঙ্গে নিয়ে হনুমাননগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বৃহস্পতিবার অপরাধের স্থল পুনর্গঠন করা হয়। কলেজের ষষ্ঠ এবং সপ্তম তোলার সিসিটিভি ফুটেজ ক্ষতিয়ে দেখার পাশাপাশি ফরেন্সিক এবং ডিজিট্যাল তথ্য সংগ্রহ করে পুলিশ।
কর্ণাটক সরকারের বিরুদ্ধে ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি
পশ্চিমবঙ্গের পর আরও এক বিরোধী শাসিত রাজ্যে কলেজ ক্যাম্পাসে ধর্ষণের ঘটনায় ময়দানে নেমে পড়েছে বিজেপি। শাসকদল কংগ্রেসকে তুলোধোনা করছে গেরুয়া শিবির। কর্ণাটক বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আর অশোক সমাজমাধ্যমের একটি পোস্টে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন।
তিনি লেখেন, কর্ণাটকের আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। মাত্র চার মাসে, মেয়েদের উপর ৯৭৯ টি যৌন নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শুধুমাত্র বেঙ্গালুরুতেই ১১৪ টিরও বেশি ঘটনা ঘটেছে। রাজ্য সরকারের নিষ্ক্রিয়তার কারণে আমাদের নারী ও শিশুরা আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। মাইসুরুতে এক আদিবাসী মেয়ের নৃশংস ধর্ষণ ও হত্যা থেকে শুরু করে কালাবুর্গিতে একজন গ্রন্থাগারিকের মর্মান্তিক আত্মহত্যা – এটি একটি নৈতিক ও প্রশাসনিক ব্যর্থতা।”
তিনি আরও জানান, জাতীয় মহিলা কমিশনকে (এনসিডব্লিউ) একটি জরুরি চিঠি দেওয়া হয়েছে। কর্ণাটকে অনুসন্ধানকারী দল পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছেন ওই বিজেপি নেতা। যদিও এখনও পর্যন্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে কোনও বিবৃতি দেয়নি ওই বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ।