পাটনা: ভোটের দামামা বাজতেই বিহারে (Bihar) বইছে প্রতিশ্রুতির হাওয়া। নির্বাচন আবহে জনগণও এই বিষয়ে অভ্যস্ত। পরিযায়ী বিহারীদের ঘরে থাকার জন্য কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতিকে হাতিয়ার করে সুর চড়াচ্ছে এনডিএ, আরজেডি। অন্যদিকে, রাজ্যের ১৭% মুসলিম ভোটের পাশাপাশি, যাদব, কুর্মী, ভূমিহার, ব্রাহ্মণদের ভোট কোন কোন দলে ভাগ হবে, তার মোটামুটি ইঙ্গিতও প্রায় স্পষ্ট।
যদিও, লালুর লন্ঠনকে মুসলিমদের ভোটকে (Muslim Vote) কেরোসিনের মত ব্যবহার করা হয়ে আসছে বলে সুর চড়িয়েছেন জন সুরজের প্রধান প্রশান্ত কিশোর (Prashant Kishore)। জাতপাত-ধর্মের ঊর্ধ্বে উন্নয়নের নিরিখে বিহারের মানুষকে ভোট দিতে বলছেন পিকে। প্রসঙ্গত, বিহার থেকে রুজিরুটির আসাহায় বাইরে যাওয়া পরিযায়ীদের মধ্যে পিকের জন সুরজ আশার আলো দেখিয়েছে ঠিকই, কিন্তু ভোট দেওয়ার জন্য তাঁকে ভরসা করা যায় কি না, সেই নিয়ে এখনও ধন্ধে মানুষ।
নির্বাচনে (Bihar Assembly Election) যার জেতার সম্ভাবনা বেশি বলে মনে হয়, মানুষ সাধারণত সেই প্রার্থীকেই ভোট দিয়ে থাকে। প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কর্মীদের বাদে, দল বা প্রার্থীর সম্ভাবনা সম্পর্কে ভোটারদের মনে যদি সামান্যতম সন্দেহ থাকে, তবুও তাদের ভোট পাওয়া কঠিন। কংগ্রেস ঘনিষ্ঠ পূর্ণিয়ার নির্দল সাংসদ পাপ্পু যাদব তো বলেই দিয়েছেন, “জন সুরজের জন্ম হয়েছে মিডিয়া থেকে। ভোটের ময়দানেই নেই এই দল!”
সীমাঞ্চল থেকে মধ্য বিহারে যাতায়াতকারী যাত্রীরা সাধারণত ডুমরা চৌকে এক বাটি দই-চিড়া (গুড়ের সাথে পরিবেশিত চিড়া দিয়ে দই) খাওয়ার জন্য বিরতি নেন। মহেশ যাদব নামক একজন স্কুল শিক্ষক, তাঁর পরিবারের নিয়ে মুঙ্গের থেকে ফিরছিলেন। পিকের তোলা বিহারের সমস্যাগুলির সঙ্গে সহমত পোষণ করছেন তিনি। তবে এই প্রথমবার নির্বাচনী প্রচারে কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তেজস্বীও।
খুব দেরি হয়ে গেল কি?
ভোটের আবহে যেভাবে ঘরে ঘরে সরকারি চাকরি বা এক কোটি সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতির ঝড় উঠেছে, তাতে কিছুটা দেরি হয়ে গেল না কি? রাহুলের সঙ্গে ‘ভোট চুরি’-কে মূল অস্ত্র করে যেখানে প্রচার শুরু হয়েছিল, এখন অন্তিম ক্ষণে এসে গিয়র বদলালে তা আদৌ কতটা কার্যকর হবে, সেই নিয়ে সন্দেহ তৈরি হচ্ছে বিশিষ্ট মহলে।
নির্বাচনে জাতি-ভোট বাস্তব!
ভারতে জাতপাত একটি জীবন্ত বাস্তবতা। বিহারে ব্যক্তিগত এবং জনসাধারণের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে জাতপাতের চেতনা এতটাই প্রখর যে এমনকি নির্জীব বস্তুও কে কী প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তার উপর নির্ভর করে একটি সামাজিক পরিচয় ধারণ করতে পারে। এই বিষয়ে কোনও দ্বিধা বা দ্বিমত নেই যে, জেডি(ইউ)-এর তীরের বল কুশওয়াহা এবং কুর্মি। অন্যদিকে, বিজেপির পদ্ম হিসেবে ভূমিহর, ব্রাহ্মণ, রাজপুত, তেলি এবং বানিয়া। এখন অন্তিম মুহূর্তে তৃতীয় কোনও শক্তি বিহারের চিরাচরিত ভোটের সমীকরণ বদলে দিতে পারে কিনা, সেটাই দেখার।



