‘ভোট চুরি অভিযোগে ফল প্রকাশের ৪৫ দিনে আদালতে যাননি কেন?’ প্রশ্ন কমিশনের

ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (Election Commission) জ্ঞানেশ কুমার একটি সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার…

Election Commission on SIR

ভারতের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (Election Commission) জ্ঞানেশ কুমার একটি সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর রিটার্নিং অফিসারের ঘোষণা সাপেক্ষে, আইনে এমন বিধান রয়েছে যে ৪৫ দিনের মধ্যে রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীরা সুপ্রিম কোর্টে গিয়ে নির্বাচনী পিটিশন দাখিল করে ফলাফলের বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে পারেন।

এই ৪৫ দিনের সময়সীমা শেষ হওয়ার পর কেরালা, কর্নাটক বা বিহারে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা অত্যন্ত লজ্জাজনক। যদি এই সময়ের মধ্যে কোনো প্রার্থী বা রাজনৈতিক দল কোনো অনিয়ম খুঁজে না পায়, তাহলে এতদিন পরে এই ধরনের অভিযোগের পিছনে কী উদ্দেশ্য রয়েছে, তা দেশের ভোটার এবং জনগণ বুঝতে পারেন।”

   

বিহারে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং কংগ্রেস, সম্প্রতি ‘ভোটাধিকার যাত্রা’ শুরু করে অভিযোগ করেছে যে নির্বাচন কমিশন বিজেপির নির্দেশে কাজ করছে এবং ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এই অভিযোগের জবাবে জ্ঞানেশ কুমার বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা।

আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করি না। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা। ভোটার তালিকা সংশোধন একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া, যা সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সম্পন্ন করা হয়।”তিনি আরও জানান, ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় ‘দাবি ও আপত্তি’ পর্বে সব রাজনৈতিক দলের কাছে খসড়া তালিকা পাঠানো হয়।

এই সময়ে যদি কোনো দল কোনো অনিয়ম বা সমস্যা উত্থাপন না করে, তাহলে পরবর্তী সময়ে এই ধরনের অভিযোগ করা অযৌক্তিক। তিনি বলেন, “বিহারে স্পেশাল ইলেক্টোরাল রিভিশন (SIR) কেবল একটি সংশোধন প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয় এবং নতুন ভোটারদের নাম যুক্ত করা হয়। এতে কোনো রাজনৈতিক পক্ষপাত নেই।”

জ্ঞানেশ কুমার আরও বলেন, “নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে আমরা বুথ লেভেল অফিসার (BLO) এবং পোলিং এজেন্টদের মাধ্যমে কঠোর নজরদারি করি। এতগুলো স্তরের তদারকির মধ্যে ‘ভোট চুরি’র মতো অভিযোগ শুধুমাত্র জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়।” তিনি এও উল্লেখ করেন যে বিহারে কিছু রাজনৈতিক দল বিনা অনুমতিতে মিনতা দেবীর ছবি টি-শার্টে ব্যবহার করেছে, যা নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন।

Advertisements

এই বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।প্রধান নির্বাচন কমিশনার জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যদি কোনো ব্যক্তি বা দলের কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে তারা সরাসরি নির্বাচন কমিশনের কাছে আসুক। আমরা প্রতিটি অভিযোগ যাচাই করব এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।”

তিনি জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচন কমিশনের বার্তা জনগণের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছানোর জন্য তারা আরও প্রচারণা চালাবে, যাতে বিভ্রান্তি দূর হয় এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপর জনগণের আস্থা অটুট থাকে।এই সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে এবং ভোটাধিকার নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।

বিহারে ‘ভোটাধিকার যাত্রা’ এবং নির্বাচন কমিশনের এই প্রতিক্রিয়া আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। আরজেডি প্রধান লালু প্রসাদ যাদব এবং তেজস্বী যাদব, নির্বাচন কমিশনের এই বক্তব্যের বিরুদ্ধে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানাতে পারেন বলে রাজনৈতিক মহল মনে করছে।

মঙ্গল গ্রহের ৩৬০ ডিগ্রি ভিউ পাঠালো নাসার ‘পার্সিভারেন্স’ রোভার

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। এই ঘটনা বিহারের রাজনৈতিক ময়দানে নতুন বিতর্কের সূচনা করেছে এবং আগামী দিনে এই বিষয়ে আরও উত্তপ্ত আলোচনা হবে বলে মনে করা হচ্ছে।