নির্বাচনী এলাকার ভোটার না হলে কি করণীয়? জানাল কমিশন

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (Election Commission) জ্ঞানেশ কুমার নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং ভোটার তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন, “যদি আপনি…

Election Commission

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (Election Commission) জ্ঞানেশ কুমার নির্বাচনী প্রক্রিয়া এবং ভোটার তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন, “যদি আপনি কোনো নির্দিষ্ট নির্বাচনী এলাকার ভোটার না হন, তাহলে আপনার কাছে আইনের একটিমাত্র পথ খোলা রয়েছে।

দ্য রেজিস্ট্রেশন অফ ইলেক্টরস রুলস, রুল নম্বর ২০, সাব-ক্লজ (৩), সাব-ক্লজ (বি)-এর নিয়ম অনুযায়ী, আপনি যদি সেই নির্বাচনী এলাকার ভোটার না হন, তাহলে আপনি একজন সাক্ষী হিসেবে অভিযোগ দায়ের করতে পারেন। তবে, এই ক্ষেত্রে আপনাকে ইলেক্টোরাল রেজিস্ট্রেশন অফিসারের সামনে শপথ নিতে হবে এবং যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করছেন, তাঁর সামনে সেই শপথ গ্রহণ করতে হবে।”

   

এই বক্তব্যের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকা সংক্রান্ত অভিযোগের ক্ষেত্রে আইনি প্রক্রিয়ার উপর জোর দিয়েছে।সম্প্রতি বিহারে মহাগঠবন্ধন, বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং কংগ্রেস, ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ‘ভোটাধিকার যাত্রা’ শুরু করেছে।

তারা দাবি করেছে যে নির্বাচন কমিশন বিজেপির নির্দেশে কাজ করছে এবং বিরোধীদের ভোটব্যাংক কমানোর জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে ভোটারদের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগের জবাবে জ্ঞানেশ কুমার বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা এবং আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করি না।

ভোটার তালিকা সংশোধন একটি নিয়মিত এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়া। যদি কেউ অভিযোগ করতে চান, তাহলে তাদের আইনি পথ অনুসরণ করতে হবে।”তিনি আরও স্পষ্ট করেন যে ভোটার তালিকা সংশোধনের সময় ‘দাবি ও আপত্তি’ পর্বে সব রাজনৈতিক দলের কাছে খসড়া তালিকা পাঠানো হয়। এই সময়ে দলগুলি তাদের আপত্তি জানাতে পারে।

তবে, এই সময়সীমা শেষ হওয়ার পর ভিত্তিহীন অভিযোগ উত্থাপন করা শুধুমাত্র জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়। তিনি বলেন, “যদি কেউ নির্বাচনী এলাকার ভোটার না হয়ে অভিযোগ জানাতে চান, তাহলে তাদের নির্দিষ্ট আইনি প্রক্রিয়া মেনে চলতে হবে। এটি নিশ্চিত করে যে অভিযোগগুলি দায়িত্বশীলভাবে এবং সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উত্থাপিত হয়।”

জ্ঞানেশ কুমার আরও বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কাজ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা। আমরা বুথ লেভেল অফিসার (BLO) এবং পোলিং এজেন্টদের মাধ্যমে কঠোর নজরদারি করি। এই প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের অনিয়মের সুযোগ নেই।” তিনি ‘ভোট চুরি’র মতো অভিযোগকে সংবিধানের অপমান বলে অভিহিত করেন এবং জনগণকে এই ধরনের বিভ্রান্তিকর বক্তব্যে বিশ্বাস না করার আহ্বান জানান।

Advertisements

সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে বিহারে কিছু রাজনৈতিক দল বিনা অনুমতিতে মিনতা দেবীর ছবি টি-শার্টে ব্যবহার করেছে, যা নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন। এই বিষয়ে তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “এই ধরনের কাজ নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার উপর প্রশ্ন তুলে।

আমরা এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেব।”নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিহারে স্পেশাল ইলেক্টোরাল রিভিশন (SIR) একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয় এবং নতুন ভোটারদের নাম যুক্ত করা হয়।

এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে এবং সব রাজনৈতিক দলের সম্মতিতে সম্পন্ন হয়। জ্ঞানেশ কুমার জনগণের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যদি কারো কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে তারা সরাসরি নির্বাচন কমিশনের কাছে আসুক।

আমরা প্রতিটি অভিযোগ যাচাই করব এবং সঠিক পদক্ষেপ নেব।”এই সংবাদ সম্মেলন বিহারের রাজনৈতিক ময়দানে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। মহাগঠবন্ধনের ‘ভোটাধিকার যাত্রা’ এবং নির্বাচন কমিশনের এই স্পষ্ট বক্তব্য আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক দ্বন্দ্বকে আরও তীব্র করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

বিদায় জানিয়েছে ইস্টবেঙ্গল, ডার্বি নিয়ে এখনও আবেগপ্রবণ ক্লেটন

নির্বাচন কমিশন জোর দিয়েছে যে তারা সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং কোনো রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। এই ঘটনা নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং জনগণের আস্থা নিয়ে নতুন আলোচনার সূচনা করেছে।