নয়াদিল্লিতে একটি সংবাদ সম্মেলনে ভারতের নির্বাচন কমিশন (Election Commission) বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন এবং ‘ভোট চুরি’র অভিযোগ নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার বলেন, “নির্বাচন কমিশনের কাছে পক্ষ বা বিপক্ষ বলে কিছু নেই। আমরা সংবিধানের নির্দেশ মেনে কাজ করি এবং আমাদের কর্তব্য থেকে কখনো পিছপা হব না। ‘
ভোট চুরি’র মতো শব্দ ব্যবহার সংবিধানের প্রতি অপমান এবং এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক।” তিনি আরও বলেন, বিহারে স্পেশাল ইলেক্টোরাল রিভিশন (SIR) কেবলমাত্র একটি নিয়মিত সংশোধন প্রক্রিয়া, এবং যদি কোনো রাজনৈতিক দলের মনে হয় যে এতে কোনো খামতি রয়েছে, তাহলে নির্বাচন কমিশনের দরজা সবসময় খোলা।
সম্প্রতি বিহারে , বিশেষ করে রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি) এবং কংগ্রেস, ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার অভিযোগ তুলে ‘ভোটাধিকার যাত্রা’ শুরু করেছে। এই অভিযোগের জবাবে কমিশন জানিয়েছে যে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং এটি সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সম্পন্ন করা হয়।
রাজীব কুমার বলেন, “ভোটার তালিকার খসড়া প্রকাশের সময় ‘দাবি ও আপত্তি’ পর্বে সব দলের কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছিল। কোনো দল যদি সময়মতো আপত্তি না জানায়, তাহলে পরে এই ধরনের অভিযোগ উত্থাপন করা অযৌক্তিক।”কমিশন আরও জানিয়েছে যে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বুথ লেভেল অফিসার (BLO) এবং পোলিং এজেন্টদের মাধ্যমে কঠোর নজরদারি করা হয়।
জ্ঞানেশ কুমার প্রশ্ন তুলে বলেন, “এতগুলো BLO এবং পোলিং এজেন্টের মাধ্যমে কীভাবে ভোট চুরি সম্ভব? এই ধরনের অভিযোগ শুধুমাত্র জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ায়।” তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশনের বার্তা জনগণের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছছে না, যার ফলে এই ধরনের বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিশন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরে। তারা জানায়, বিহারে কিছু রাজনৈতিক দল বিনা অনুমতিতে মিনতা দেবীর ছবি টি-শার্টে ব্যবহার করেছে, যা নির্বাচনী আইনের লঙ্ঘন। রাজীব কুমার বলেন, “এই ধরনের কাজ আইনবিরোধী এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার উপর প্রশ্ন তুলে। আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করছি এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া সাধারণত মৃত বা স্থানান্তরিত ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া এবং নতুন ভোটারদের নাম অন্তর্ভুক্ত করার জন্য করা হয়। এটি নির্বাচনের স্বচ্ছতা এবং নির্ভুলতা নিশ্চিত করতে একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। কমিশনের মতে, ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক পক্ষপাত নেই।
তবে করে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব এবং লালু প্রসাদ যাদব, অভিযোগ করেছেন যে নির্বাচন কমিশন বিজেপির নির্দেশে কাজ করছে এবং বিরোধীদের ভোটব্যাংক কমানোর জন্য লক্ষ লক্ষ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিশন এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে বলেছে , “নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক সংস্থা এবং আমরা কোনো রাজনৈতিক দলের পক্ষে বা বিপক্ষে কাজ করি না।
দাম কমিয়ে এবার দেশেই তৈরী হবে স্যামসাং এর ল্যাপটপ
আমাদের একমাত্র লক্ষ্য হল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করা।” তিনি জনগণকে আহ্বান জানান, “যদি কারো কোনো অভিযোগ থাকে, তাহলে তারা সরাসরি আমাদের কাছে আসুক। আমরা প্রতিটি অভিযোগ যাচাই করব।”এই সংবাদ সম্মেলন বিহারের রাজনৈতিক ময়দানে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।