ভারতের অন্যতম বৃহত্তম ব্যাঙ্ক জালিয়াতি মামলার তদন্তে বড়সড় সাফল্য পেয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। রবিবার ওড়িশার ভুবনেশ্বরে একাধিক স্থানে তল্লাশি চালায় কেন্দ্রীয় সংস্থা। এই অভিযানে উদ্ধার হয় বিলাসবহুল গাড়ি, দামি গয়না এবং বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ। সংস্থার দাবি, এই জালিয়াতি মামলার সাথে যুক্ত মূল অভিযুক্তদের সম্পত্তি থেকেই এই সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
বিলাসবহুল গাড়ির বাহার
তল্লাশিতে ED-এর হাতে আসে একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি ও বাইক। বাজেয়াপ্ত গাড়ির মধ্যে রয়েছে Porsche Cayenne, Mercedes-Benz GLC, BMW X7, Audi A3, Mini Cooper-এর মতো দামি ব্র্যান্ড। পাশাপাশি বাজেয়াপ্ত হয়েছে তিনটি সুপারবাইক, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য Honda Gold Wing। এই গাড়ি ও বাইকের বাজারমূল্যই প্রায় ৭ কোটিরও বেশি।
নগদ ও গয়নার হদিশ
শুধু বিলাসবহুল গাড়ি-ই নয়, এদিন উদ্ধার হয়েছে প্রচুর পরিমাণ নগদ অর্থ এবং গয়না। ED সূত্রে খবর, নগদ প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা এবং গয়নার পরিমাণ প্রায় ১.১২ কোটি টাকা। এছাড়াও তল্লাশিতে মিলেছে প্রচুর নথি, যেগুলি অভিযুক্তদের অবৈধ সম্পত্তি ও বিনিয়োগের প্রমাণ বহন করছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, অভিযুক্তের দুইটি ব্যাংক লকারও ফ্রিজ করা হয়েছে।
মামলার পটভূমি
উল্লেখ্য, এই ব্যাঙ্ক জালিয়াতি মামলাটি দেশের অন্যতম বৃহৎ প্রতারণার ঘটনা হিসাবে চিহ্নিত। অভিযুক্তরা একাধিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ভুয়ো নথি এবং প্রতারণার মাধ্যমে ১,৩৯৬ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ। এই অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশেও পাচার করা হয়েছে বলে মনে করছে তদন্তকারীরা। ED ইতিমধ্যেই মামলার সাথে জড়িত কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ পাঠিয়েছে।
তদন্তে নতুন দিক
ED-র মতে, বাজেয়াপ্ত এই সম্পত্তিগুলি আসলে প্রতারণা থেকে সংগৃহীত অর্থ দিয়ে কেনা। বিলাসবহুল গাড়ি, বাইক এবং গয়না ছাড়াও অভিযুক্তরা একাধিক স্থাবর সম্পত্তিতে বিনিয়োগ করেছিল বলে জানা যাচ্ছে। উদ্ধার হওয়া নথিগুলির মাধ্যমে সেই সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া যেতে পারে বলে মনে করছে সংস্থা।
রাজনৈতিক চাপানউতোর
এই তল্লাশির পর রাজনৈতিক মহলেও চাপানউতোর শুরু হয়েছে। বিরোধী দলগুলি অভিযোগ করেছে যে, কেন্দ্র সরকারের নাকের ডগায় এতো বড় প্রতারণা চললেও প্রশাসন দীর্ঘদিন নীরব থেকেছে। অন্যদিকে শাসক দল দাবি করছে, ED স্বাধীনভাবে তদন্ত করছে এবং দোষীদের কড়া শাস্তি হবে।