আসন্ন বিহার বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি পর্যালোচনায় নেমেছে ভারতের নির্বাচন কমিশন (ECI)। দুই দিনের সফরে কমিশনের শীর্ষ কর্মকর্তারা রাজনৈতিক দল ও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করছেন। রবিবার সফরের দ্বিতীয় দিনে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার গ্যনেশ কুমারের নেতৃত্বে কমিশনের প্রতিনিধিদল পাটনায় বিভিন্ন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রধান ও নোডাল অফিসারদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এই বৈঠকে মুক্ত, নিরপেক্ষ ও প্রলোভনমুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করতে সমন্বয় ও প্রস্তুতির অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়।
এর আগে শনিবার, প্রধান নির্বাচন কমিশনার গ্যনেশ কুমার, নির্বাচন কমিশনার সুখবীর সিং সান্ধু ও বিবেক জোশি বিহারের মুখ্য নির্বাচন আধিকারিক বিনোদ গুঞ্জিয়াল ও রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে একটি বিস্তৃত বৈঠক করেন। কমিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর পি পবনের জারি করা বিবৃতি অনুযায়ী, বৈঠকে নির্বাচনী পরিকল্পনা, ইভিএম ব্যবস্থাপনা, লজিস্টিক্স, ভোটকেন্দ্র পুনর্বিন্যাস, নির্বাচনী কর্মীদের প্রশিক্ষণ, আইনশৃঙ্খলা, বাজেয়াপ্ত অভিযান, এবং ভোটার সচেতনতা কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
সকল জেলা নির্বাচন আধিকারিক (DEO) ও পুলিশ সুপারদের (SP) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে ভুয়া খবর পর্যবেক্ষণ করতে এবং প্রয়োজনে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে।
রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গেও কমিশন আলোচনা করেছে। আম আদমি পার্টি, বিএসপি, বিজেপি, সিপিএম, কংগ্রেস, এনপিপি, সিপিআই (এম-এল), জেডিইউ, লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস), আরজেডি এবং আরএলজেপি— এই সব জাতীয় ও রাজ্য পর্যায়ের স্বীকৃত রাজনৈতিক দলগুলির প্রতিনিধি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বেশিরভাগ দলই দাবি করেছে, ছট পূজোর পর নির্বাচন করা হোক যাতে সর্বাধিক ভোটার অংশ নিতে পারেন। জেডিইউ রাজ্য সভাপতি উমেশ সিং কুশওহা প্রস্তাব দিয়েছেন, এক দফায় ছটের পরই নির্বাচন সম্পন্ন করা হোক, যাতে রাজ্যের বাইরে থাকা মানুষও ভোট দিতে পারেন। ২০২০ সালে বিহার বিধানসভা নির্বাচন তিন দফায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
বিজেপিও এক বা দুই দফায় ভোটগ্রহণের দাবি জানিয়েছে এবং বুথে ‘পর্দা নশিন’ ভোটারদের সনাক্ত করার জন্য বিশেষ নজরদারির অনুরোধ করেছে। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ জৈসওয়াল বলেন, পিছিয়ে পড়া এলাকায় আধাসামরিক বাহিনীর ফ্ল্যাগ মার্চেরও দাবি জানানো হয়েছে।
৩০ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর নির্বাচনী সূচি যেকোনও সময় ঘোষণা করতে পারে কমিশন। চূড়ান্ত তালিকায় ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭.৪২ কোটি। রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই নির্বাচনে মুখোমুখি হবে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার নেতৃত্বাধীন এনডিএ ও আরজেডি নেতৃত্বাধীন মহাগঠবন্ধন। ২৪৩ আসনের বিধানসভায় এনডিএর আসন সংখ্যা ১৩১, আর মহাগঠবন্ধনের দখলে ১১১টি আসন।
রাজ্য জুড়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তৎপরতা তুঙ্গে, দলগুলি অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ ও প্রচার জোরদার করেছে।