নির্বাচন কমিশন নিয়োগে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপ, তৃণমূল কে সতর্ক করল আপ

দিল্লির আম আদমি পার্টি (Trinamool) নেতা ও মন্ত্রী সৌরভ ভারদ্বাজ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে দেশের গণতন্ত্রের উপর আঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন,…

Trinamool warned by aap

দিল্লির আম আদমি পার্টি (Trinamool) নেতা ও মন্ত্রী সৌরভ ভারদ্বাজ কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে দেশের গণতন্ত্রের উপর আঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের রায়কে উল্টে দিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার একটি আদেশ জারি করেছে, যার মাধ্যমে তারা তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে।

এর ফলে নির্বাচন কমিশন (Trinamool)  সরকারের পক্ষে কাজ করবে এবং ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জয় নিশ্চিত করার জন্য সব ধরনের পন্থা অবলম্বন করবে। ভারদ্বাজ দাবি করেছেন, মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং বিহারে এমনটাই ঘটেছে। তিনি সতর্ক করে বলেছেন, এটি না থামলে পশ্চিমবঙ্গেও একই ঘটনা ঘটবে। তিনি সকলকে একসঙ্গে এর বিরুদ্ধে লড়াই করার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, নইলে দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে।

   

ভারদ্বাজের বক্তব্য

আজ এক সাংবাদিক সম্মেলনে সৌরভ ভারদ্বাজ (Trinamool)  বলেন, “দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে যেদিন সুপ্রিম কোর্টের রায়কে উল্টে কেন্দ্র অধ্যাদেশ জারি করেছে। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে কেন্দ্র তাদের অনুগত ব্যক্তিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ করতে পারবে। ফলে নির্বাচন কমিশন আর নিরপেক্ষ থাকবে না।

তারা সরকারের পক্ষে কাজ করবে এবং বিজেপির জয় নিশ্চিত করার জন্য সব পথ খুঁজবে।” তিনি মহারাষ্ট্র, দিল্লি এবং বিহারের নির্বাচনের উদাহরণ দিয়ে বলেন, এই রাজ্যগুলোতে নির্বাচন কমিশন (Trinamool)  বিজেপির স্বার্থে কাজ করেছে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “যদি এই প্রবণতা না থামানো যায়, তবে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গেও একই ঘটনা ঘটবে। আমাদের সকলকে একসঙ্গে এর বিরুদ্ধে লড়তে হবে, নইলে দেশের গণতন্ত্র শেষ হয়ে যাবে।”

নির্বাচন কমিশন নিয়োগে বিতর্ক

২০২৩ সালে সুপ্রিম কোর্ট (Trinamool) একটি গুরুত্বপূর্ণ রায়ে বলেছিল, প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনারদের নিয়োগ করবে একটি কমিটি, যার মধ্যে থাকবেন প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলের নেতা এবং প্রধান বিচারপতি। এই রায় নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়েছিল।

কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার এই রায়ের পর একটি অধ্যাদেশ জারি করে, যার মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির জায়গায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই পদক্ষেপের ফলে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে কেন্দ্রের প্রভাব বৃদ্ধি পেয়েছে বলে বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করছে।

পশ্চিমবঙ্গে সম্ভাব্য প্রভাব (Trinamool)

পশ্চিমবঙ্গে (Trinamool)  এই অধ্যাদেশ নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। তৃণমূল নেতা কুনাল ঘোষ বলেছেন, “কেন্দ্রের এই অধ্যাদেশ গণতন্ত্রের গলা টিপে দেওয়ার চেষ্টা। নির্বাচন কমিশন যদি সরকারের পক্ষে কাজ করে, তবে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা থাকবে না। পশ্চিমবঙ্গে আমরা এটি হতে দেব না।” তিনি আরও বলেন, “বিজেপি মনে করছে, তারা এইভাবে পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতা দখল করবে। কিন্তু বাংলার মানুষ এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।”

Advertisements

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

তৃণমূল ছাড়াও কংগ্রেস, (Trinamool) সিপিআই(এম) এবং অন্যান্য বিরোধী দল এই অধ্যাদেশের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে। কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, “নির্বাচন কমিশনকে সরকারের হাতের পুতুল বানানোর এই প্রচেষ্টা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক। পশ্চিমবঙ্গে আমরা এর বিরুদ্ধে লড়াই করব।”

সিপিআই(এম) (Trinamool) নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে চায়। এটি গণতন্ত্রের মৃত্যু।”বিজেপি এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “বিরোধী দলগুলো ভিত্তিহীন অভিযোগ তুলে রাজনৈতিক ফায়দা নিতে চায়। নির্বাচন কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করে এবং ভবিষ্যতেও করবে।”

দিঘাগামী বাসে নতুন নিয়ম, ভিড় সামলাতে কড়া ব্যবস্থা

সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া

সামাজিক মাধ্যমে, (Trinamool) বিশেষ করে এক্স-এ, ভারদ্বাজের এই বক্তব্য ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “নির্বাচন কমিশন যদি সরকারের পক্ষে কাজ করে, তবে গণতন্ত্রের কোনো মানে থাকে না। পশ্চিমবঙ্গে এটি হতে দেওয়া যায় না।” আরেকজন লিখেছেন, “বিজেপি যেভাবে নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করছে, তাতে ২০২৬ সালের নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হচ্ছে।”

সৌরভ ভারদ্বাজের (Trinamool) এই বক্তব্য পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এবং এই অধ্যাদেশের ফলে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক আরও উত্তপ্ত হতে পারে।

পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই ইস্যু গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক অস্ত্র হয়ে উঠতে পারে। ভারদ্বাজের আহ্বানে বিরোধী দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধভাবে এর বিরুদ্ধে লড়াই করে, তবে এটি দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার উপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।