নয়াদিল্লি, ৩ নভেম্বর: প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO) তেজস Mk1A যুদ্ধবিমানের (Tejas Mk1A fighter jet) জন্য তাদের নতুন আত্মরক্ষামূলক ঢাল (Swayam Raksha Kavach/SRK) ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থার ফ্লাইট ট্রায়াল শুরু করেছে। এই সিস্টেমটি তেজসকে শত্রুর রাডার, ক্ষেপণাস্ত্র এবং ইলেকট্রনিক আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।
এখন তেজস আরও স্মার্ট এবং নিরাপদ হয়ে উঠবে
ডিআরডিও ২০২১ সালে এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে, যা সেন্টার ফর এয়ারবর্ন সিস্টেমস (CABS) দ্বারা তৈরি করা হচ্ছে। এর উদ্দেশ্য হল ভারতীয় বিমান বাহিনীর (Indian Air Force) ইলেকট্রনিক যুদ্ধক্ষেত্রের ক্ষমতা জোরদার করা। SRK পূর্ববর্তী সিস্টেমগুলির তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে আরও উন্নত এবং নির্ভুল। এটি তেজস MK1A-কে একটি ডিজিটাল ঢাল প্রদান করবে যাতে এটি যেকোনো ধরণের আকাশ হুমকি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে।
পুরোনো সিস্টেম থেকে এক ধাপ এগিয়ে
SRK সিস্টেমটি পূর্বে ব্যবহৃত D-29 ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার স্যুটের একটি উন্নত সংস্করণ। এটি এখন AI-ভিত্তিক প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করেছে, যা হুমকি সনাক্তকরণ এবং প্রতিক্রিয়া অনেক দ্রুত করে তোলে। এর দুটি প্রধান অংশ রয়েছে, প্রথমটি হল রাডার ওয়ার্নিং রিসিভার (RWR) যা তেজসের বডিতে লাগানো এবং 250 কিলোমিটারেরও বেশি দূর থেকে শত্রুর রাডার সংকেত সনাক্ত করতে পারে। আর যদি আমরা দ্বিতীয়টির কথা বলি, তাহলে এর নাম অ্যাডভান্সড সেল্ফ-প্রোটেকশন জ্যামার (ASPJ) পড যা বিমানের ডানার নিচে স্থাপিত থাকে, যা শত্রুর রাডার এবং ক্ষেপণাস্ত্রকে বিভ্রান্ত করার জন্য সংকেত পাঠায়।
ছোট আকারে বড় শক্তি
SRK সিস্টেমের ওজন ১০০ কেজিরও কম, যা বিমানের কর্মক্ষমতাকে প্রভাবিত করে না। এটি গ্যালিয়াম নাইট্রাইড (GaN) প্রযুক্তি ব্যবহার করে, যা এটিকে আরও শক্তিশালী এবং শক্তি-সাশ্রয়ী করে তোলে। এই সিস্টেমটি একসাথে আটটি শত্রু রাডার জ্যাম করার ক্ষমতা রাখে।
২০২৬ সালের মধ্যে মোতায়েনের প্রস্তুতি
ডিআরডিও প্রাথমিক স্থল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে এবং এখন উড্ডয়ন পরীক্ষার প্রক্রিয়াধীন। কর্ণাটকের চিত্রদুর্গা টেস্ট রেঞ্জ এবং HAL-এর বেঙ্গালুরু প্ল্যান্টে এই পরীক্ষাগুলি পরিচালিত হচ্ছে। আশা করা হচ্ছে যে সমস্ত ফ্লাইট ট্রায়াল ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এর পরে, এটি তেজস Mk1A বহরে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য একটি বড় পদক্ষেপ
SRK-এর আগমন তেজস Mk1A-কে আরও বেশি সক্ষম করে তুলবে। এটি কেবল ভারতীয় প্রযুক্তির শক্তিই প্রদর্শন করে না বরং ভারতকে স্বনির্ভর প্রতিরক্ষা উৎপাদনের দিকেও এগিয়ে নিয়ে যায়। আগামী সময়ে, এই সিস্টেমটি প্রায় ১৮০টি তেজস বিমানে স্থাপন করা হবে, যা ভারতীয় বিমান বাহিনীর বিমান নিরাপত্তা বহুগুণ বৃদ্ধি করবে।


