নয়াদিল্লি, ২ অক্টোবর: ডিআরডিও (DRDO) এই বছরের শেষ নাগাদ একটি নতুন প্রজন্মের হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করার পরিকল্পনা করছে। প্রতিরক্ষা সূত্রের মতে, এই ক্ষেপণাস্ত্রটির নাম হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকেল (এইচজিভি) এবং এর নামকরণ করা হয়েছে “ধাওয়ানি” (Dhvani Missile)। এটি ভারতের কৌশলগত শক্তি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে।
হাইপারসনিক গ্লাইড ভেহিকেল (HGV) হল একটি ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা যা ম্যাক ৫ (শব্দের গতির পাঁচ গুণ) এর বেশি গতিতে উড়তে সক্ষম। এর অনন্য বৈশিষ্ট্য হল এটি বাতাসে অনেক উঁচুতে গ্লাইড করে, অত্যন্ত উচ্চ গতি এবং কৌশলের সাথে লক্ষ্যবস্তুতে পৌঁছায়।
এর গতি এবং দিক পরিবর্তনের ক্ষমতা এটিকে যেকোনো বিদ্যমান ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে কার্যত অরক্ষিত করে তোলে, যার ফলে এটি স্থল এবং সমুদ্র উভয় লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা যেতে পারে।
ভারতের প্রস্তুতি
ডিআরডিও পূর্বে হাইপারসনিক টেকনোলজি ডেমনস্ট্রেটর ভেহিকেল (এইচএসটিডিভি) ব্যবহার করে একটি স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন সফলভাবে পরীক্ষা করেছে। এই ইঞ্জিনটি সুপারসনিক দহন প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রায় ম্যাক ৬ গতি অর্জন করেছে।
স্থল পরীক্ষার সময়, স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিনটি ১,০০০ সেকেন্ডেরও বেশি সময় ধরে একটানা কর্মক্ষমতা প্রদর্শন করেছে।
সম্প্রতি, ডিআরডিও এয়ারফ্রেম অ্যারোডাইনামিক্স, তাপ ব্যবস্থাপনা, স্ক্র্যামজেট ইঞ্জিন কর্মক্ষমতা এবং নির্দেশিকা ব্যবস্থার মতো গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলির পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে।
এর পাশাপাশি, উন্নত সিরামিক থার্মাল লেপ এবং সুপারসনিক ইঞ্জিনের সফল পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রযুক্তিটিকে উড়ানের জন্য প্রস্তুত করেছে।
২০২৫ সালে পূর্ণাঙ্গ পরীক্ষা
এই ডিআরডিও পরীক্ষা হবে “শব্দ” এর প্রথম বৃহৎ আকারের উড্ডয়ন পরীক্ষা। সফল হলে, ভারত হাইপারসনিক প্রযুক্তির অধিকারী নির্বাচিত দেশগুলির তালিকায় যোগ দেবে। এই বছরের শেষের দিকে এই পরীক্ষাটি হওয়ার আশা করা হচ্ছে।
কেন এটা গুরুত্বপূর্ণ?
- “ধাওয়ানি” ভারতের কৌশলগত প্রতিরোধ ক্ষমতা জোরদার করবে।
- এই ক্ষেপণাস্ত্র শত্রুর রাডার এবং ইন্টারসেপ্টর এড়িয়ে সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হবে।
- এই সাফল্য ভারতের আঞ্চলিক এবং বৈশ্বিক প্রতিরক্ষা গতিশীলতার ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনতে পারে।
- এটি দেশীয় প্রতিরক্ষা এবং মহাকাশ প্রযুক্তির জন্যও একটি বড় অর্জন হবে।
অর্থাৎ, ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ পরিচালিত “ধাওয়ানি” এইচজিভির পরীক্ষা কেবল একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা হবে না, বরং ভারতের কৌশলগত শক্তি এবং প্রযুক্তিগত স্বনির্ভরতার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ হবে।