বিহার, ১৬ অক্টোবর: বিহারে (Bihar) এনডিএ জোটের শরিকদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে জটিলতা এখনও কাটেনি। এর মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জনতা দল (ইউনাইটেড) — জেডিইউ — বৃহস্পতিবার ঘোষণা করল তাদের চূড়ান্ত ৪৪ জন প্রার্থীর তালিকা। ফলে আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগেই এনডিএ জোটের ভেতরে উত্তেজনা আরও বেড়ে গেল।
এর আগের দিন, বুধবার, জেডিইউ প্রথম দফায় ৫৭ জন প্রার্থীর নাম প্রকাশ করেছিল। সেই তালিকায় ছিল এমন চারটি আসন, যেগুলি লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস) নেতা চিরাগ পাসওয়ান দাবি করেছিলেন তাদের অংশ হিসেবে। চিরাগ ওই আসনগুলো ছাড়তে রাজি নন বলেই জোর গুঞ্জন ছিল রাজনৈতিক মহলে। কিন্তু জেডিইউ এই আসনগুলোতে প্রার্থী ঘোষণা করে স্পষ্ট জানিয়ে দিল যে, তারা আসন ছাড়ার পথে হাঁটছে না।
এই অবস্থায়, এনডিএ জোটে আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধ চরমে উঠেছে। চিরাগ পাসওয়ানের দল এখনো তাদের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেনি, কিন্তু জেডিইউ এককভাবে এগিয়ে গিয়ে এনডিএ-র অভ্যন্তরীণ সংকট আরও প্রকট করে তুলেছে।
চূড়ান্ত ৪৪ জন প্রার্থীর তালিকায় বেশ কয়েকজন বর্তমান মন্ত্রীকেও প্রার্থী করেছে জেডিইউ। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন:
সুমিত সিং – যিনি ২০২০ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন, এবার জেডিইউ তাঁকে চকাই আসন থেকে প্রার্থী করেছে।
জামা খান – বিহার সরকারের মন্ত্রী, এবার চেইনপুর থেকে প্রার্থী হয়েছেন।
জয়ন্ত রাজ – মন্ত্রী এবং এবারও আমরপুর আসন থেকেই লড়ছেন।
লেসি সিং – সরকারের আরেক মন্ত্রী, জেডিইউ-র এই পদক্ষেপকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ‘দৃঢ় সংকেত’ বলেই ব্যাখ্যা করছেন। তাঁদের মতে, জেডিইউ স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে তারা আসন বণ্টনের চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না। এদিকে বিজেপি এবং এলজেপি (রামবিলাস) এখনও পুরোপুরি সমঝোতায় আসতে পারেনি। বিশেষত চিরাগ পাসওয়ান যেভাবে জোটের সিদ্ধান্তে বাধা সৃষ্টি করছেন, তাতে এনডিএ-র ঐক্য নিয়েই প্রশ্ন উঠছে।
প্রসঙ্গত, বিহারের আসন্ন নির্বাচনে এনডিএ-র মুখ্য তিন শরিক দল — বিজেপি, জেডিইউ ও এলজেপি — নিজেদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনায় ব্যস্ত। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সমঝোতা হয়নি। চিরাগ পাসওয়ান ইতিমধ্যেই একাধিকবার নীতীশ কুমারের নেতৃত্ব নিয়ে খোলাখুলি প্রশ্ন তুলেছেন এবং ইঙ্গিত দিয়েছেন যে প্রয়োজনে এলজেপি এককভাবেই নির্বাচন লড়তে পারে।
জেডিইউ-র এই তালিকা প্রকাশে বিজেপি এখনও প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া না দিলেও, জোটে চাপ বাড়ছে বলেই মনে করা হচ্ছে। জেডিইউ একরকম নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিলেও, এলজেপির অবস্থান এখনও অনিশ্চিত।