তীব্র দাবদাহে পুড়ছে দিল্লি। গত ৪৮ ঘন্টায় রাজধানীতে গরমের জেরে প্রাণ হারিয়েছেন ৫ জন। লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন ১২ জন। তাঁরা ভর্তি রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালে। দিল্লির অন্যান্য হাসপাতালেও হিটস্ট্রোকের কারণে ভর্তি রয়েছেন অনেকে।
মৃতদের অধিকাংশই হিটস্ট্রোকের পাশাপাশি ইলেকট্রোলাইট ডেফিসিয়েন্সি অর্থাৎ শরীরে ধাতুর অভাবের মতো সমস্যাতেও আক্রান্ত হয়েছিলেন। পাশাপাশি তাঁদের শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটকেও ছাপিয়ে গিয়েছিল। প্রবল ডিহাইড্রেশনেরও শিকার হয়েছিলেন তাঁরা।
সরকারি হাসপাতালের মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট ডাঃ অজয় শুক্লা বলেছেন যে, ২২ জনকে হিটস্ট্রোকের পরে ভর্তি করা হয়েছিল হাসপাতালে। এঁদের মধ্যে পাঁচজন রোগী মারা গিয়েছেন এবং ১৩ রোগী ভেন্টিলেটর সাপোর্টে রয়েছেন।
ভরা সভায় আচমকা মোদীর হাত ধরে টানলেন মুখ্যমন্ত্রী! কী হল তারপর?
প্রবীণ চিকিৎসক সতর্ক করে জানিয়েছেন যে, হিটস্ট্রোকের ক্ষেত্রে মৃত্যুর হার বেশ বেশি, প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ। বলেছেন, “রোগীকে হাসপাতালে দেরী করে আনা হলে, তাঁর একের পর এক অঙ্গ বিকল হতে শুরু করে। সচেতনতার অভাব রয়েছে। এই রোগীদের বেশিরভাগই পরিযায়ী শ্রমিক। এছাড়াও, (হিটস্ট্রোকের) লক্ষণগুলি সহজেই মিস করা যায় বা ভুল হয়ে যেতে পারে। বেশিরবাগ সময়ই যখন রোগীরা অজ্ঞান হয়ে যায়, তখন তাদের আত্মীয়রা মনে করেন যে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজন।”
ডাঃ শুক্লার মতে হিটস্ট্রোক সম্পর্কে সচেতনতা ছড়ানো দরকার। তাঁর কথায় “আমাদের মানুষকে আরও সচেতন করতে হবে। হাসপাতালে ছুটে যাওয়ার পরিবর্তে, আপনি যদি মনে করেন যে একজন ব্যক্তি হিটস্ট্রোকে ভুগছেন, তাহলে আপনাকে অবশ্যই ওই ব্যক্তিকে ঠান্ডা করা শুরু করতে হবে। তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করার সময় জল, বরফ ব্যবহার করুন। এছাড়াও সব সুবিধাযুক্ত অ্যাম্বুলান্সের ব্যবস্থা করতে হবে রোগীকে হাসপাতালে পৌঁছতে।”
Mumbai: আইসক্রিমের মধ্যে কাটা আঙুল কার? পুলিশি তদন্তে চাঞ্চল্যকর তথ্য
দিল্লির বাসিন্দারা প্রায় এক মাস ধরে অবিরাম তাপপ্রবাহের মধ্যে রয়েছেন। শহরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গিয়েছে, যা স্বাভাবিকের থেকে কয়েক ডিগ্রি বেশি। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রির কাছাকাছি। কলের জল দিনভর গরম থাকছে। এমনকী শীতাতপ নিয়ন্ত্রকগুলির মাধ্যমেও ঘর ঠান্ডা হচ্ছে না।
আবহাওয়া অফিস তার পূর্বাভাসে বলেছে যে, উত্তর ভারতের বেশিরভাগ অংশে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি আগামী ২৪ ঘন্টা অব্যাহত থাকতে পারে। তারপর গরম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
দিল্লির ‘সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের’ পদাধিকারী রজনীশ সরিন বলেছেন, ‘দিল্লির মতো বড় শহরগুলিতে নির্মাণ এবং কংক্রিটকরণ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। কংক্রিট ভবনগুলি দিনে তাপ শোষণ করে এবং রাতে তা ছেড়ে দেয়। এই কারণেই বড় শহরগুলিতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়ছে। রাতেও প্রবল গরম হচ্ছে।’