দিল্লি হাইকোর্ট মঙ্গলবার বলেছে যে, একজন অভিযুক্ত ব্যক্তি যে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে, তার জন্য দ্রুত বিচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, বিচার প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে গিয়ে যদি এর সঠিকতা ক্ষুন্ন হয়, তবে তা ন্যায়বিচারের মূলনীতির বিরোধী হবে। আদালত এই মন্তব্যটি করেছেন দিল্লি দাঙ্গা মামলার এক অভিযুক্তকে পুনরায় ক্রস এক্সামিন করার অনুমতি দেওয়ার সময়।
আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, “আমরা যদি এটা বিশ্বাস করি যে, একটি দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া শুধুমাত্র অভিযুক্তকে ক্রস করার অধিকার না দিয়ে পরিপূর্ণ হবে, তাহলে তা ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্য পূরণ করবে না।” হাইকোর্ট জানায় যে, একদিন বা দু’দিনের জন্য মামলার শুনানি পুনঃনির্ধারণ করা একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও উপযুক্ত পদক্ষেপ হতে পারে। অন্যদিকে, বিচারপতি অনুপ জয়ারাম ভাম্বানি বলেন যে, দ্রুত বিচার প্রক্রিয়া অবশ্যই ন্যায্য বিচার প্রক্রিয়া হতে হবে। তিনি মোহাম্মদ দানিশের আবেদনের পক্ষে রায় দেন এবং আদালকে সাক্ষী হেড কনস্টবল শশীকান্তকে ক্রস এক্সামিন করার সুযোগ দেন।
দানিশের যুক্তি ছিল যে, শশীকান্ত তার তদন্তে কোনো সময় তার নাম উল্লেখ করেননি তবে, আদালতে সাক্ষ্য দেওয়ার সময় শশীকান্ত দানিশকে চিহ্নিত করেছিলেন। দানিশ আরও দাবি করেন যে, শশীকান্তের সাক্ষ্য অনুযায়ী, ২০২০ সালে সংঘটিত একটি ঘটনায় ২০২৫ সালে এসে তাকে চেনা এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, কারণ পুরো ঘটনার তদন্তে কোথাও তিনি দানিশের নাম উল্লেখ করেননি। তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, দানিশের কখনও টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন প্যারেডও করা হয়নি।
রাজ্য সরকারি প্রসিকিউটর (এসপিপি) যুক্তি দেন যে, ক্রস এক্সামিন করার জন্য বিরতি দেওয়া হলে বিচার প্রক্রিয়ার সময়সীমা বাড়বে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। তবে আদালত এসপিপির যুক্তি মেনে নেয়নি এবং পর্যবেক্ষণ করেছে যে, যদিও অযথা বিরতি কখনোই দেওয়া উচিত নয়, তবুও সঠিক বিচার প্রক্রিয়ার জন্য এটি জরুরি। হাইকোর্ট বলেন, “সাক্ষ্যগ্রহণ দ্রুতগতিতে হওয়া উচিত, তবে এটি অবশ্যই ন্যায়বিচারের উদ্দেশ্য পূরণের জন্য হতে হবে।” আদালত সাফ জানায় যে, সঠিক বিচার প্রক্রিয়ার জন্য যতটুকু সময় দেওয়া প্রয়োজন, ততটুকু সময়ই নেওয়া উচিত এবং এটি কোনোভাবেই শিথিল করা উচিত নয়।