দিল্লির বাদরপুর এলাকার মোলারবান্দ গ্রামে ঘটে গেল চাঞ্চল্যকর এক হত্যাকাণ্ড (Delhi murder case)। এক মা-ছেলের মধ্যে কানাডা যাত্রা নিয়ে হওয়া বিবাদের জেরে ৫০ বছর বয়সী এক মহিলাকে তার নিজের ছেলে খুন করেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। শনিবার রাতে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ছেলে কৃষ্ণকান্ত (৩১), মাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে এবং পরে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি কীভাবে ঘটল?
পুলিশ জানায়, খুনের ঘটনার পরে কৃষ্ণকান্ত তার বাবাকে ফোন করে বাসায় আসতে বলে। কৃষ্ণকান্তের বাবা, সুরজিত সিং (৫২), বাড়িতে আসলে অভিযুক্ত ছেলে তাকে “দুঃখিত” বলে জানায় এবং নিজেই উপরের তলায় গিয়ে তার কাজ দেখে আসতে বলে। সুরজিত সিং উপরের তলায় উঠেই দেখতে পান, তার স্ত্রী গীতা মাটিতে রক্তে ভেসে পড়ে আছেন এবং তার শরীরে একাধিক ছুরির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অবিলম্বে তিনি গীতাকে স্থানীয় অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরিবারের বিবরণ
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সুরজিত সিংয়ের দুই পুত্র। ছোট ছেলে সাহিল ভোলি (২৭) একটি ব্যাংকে কর্মরত। অপরদিকে, কৃষ্ণকান্ত বেকার এবং মাদকাসক্ত ছিলেন। দুই ছেলেই অবিবাহিত এবং ঘটনার সময় বাড়িতে শুধু কৃষ্ণকান্ত ও তার মা গীতা উপস্থিত ছিলেন।
কানাডায় পাড়ি নিয়ে বিবাদের সূত্রপাত
জিজ্ঞাসাবাদে কৃষ্ণকান্ত জানায়, সে কানাডায় পাড়ি দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তার পরিবার তাকে বিয়ে করার জন্য চাপ দিচ্ছিল, বিশেষ করে তার মা গীতা। মা এই বিষয়ে তাকে বেশ কয়েকবার বাধা দিয়েছিলেন, যা নিয়ে বাড়িতে উত্তেজনা দেখা দেয়। ঘটনার দিনও মা ও ছেলের মধ্যে তর্কাতর্কি চলতে থাকে এবং একসময় বিবাদ চরমে পৌঁছালে, কৃষ্ণকান্ত তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে হত্যা করে।
পুলিশের পদক্ষেপ
মোলারবান্দ গ্রামে ঘটনাটি সংঘটিত হওয়ার পরে পুলিশ দ্রুত তদন্তে নামে। এলাকাবাসীর সহায়তায় এবং ঘটনার সূত্র ধরে পুলিশ অভিযুক্ত কৃষ্ণকান্তকে খুঁজে বের করে এবং তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং বর্তমানে তদন্ত চলছে।
অন্যান্য তথ্য
পুলিশ আরও জানিয়েছে, কৃষ্ণকান্ত কিছুদিন আগেই হত্যার উদ্দেশ্যে ওই ছুরিটি কিনেছিল। তার বাবা সুরজিত সিং পেশায় একজন সম্পত্তি ব্যবসায়ী এবং তার অফিস জৈতপুরের ট্যাঙ্কি রোডে অবস্থিত।
স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া
এই মর্মান্তিক ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, গীতা একজন সাদাসিধে মহিলা ছিলেন এবং তার সন্তানের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ছিল। তবে, সম্প্রতি কৃষ্ণকান্তের সঙ্গে তার মায়ের সম্পর্ক কিছুটা খারাপ যাচ্ছিল বলে প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।
তদন্তের অগ্রগতি
বর্তমানে পুলিশ পুরো ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে এবং কৃষ্ণকান্তের মাদকাসক্তি ও মানসিক অবস্থার ওপর নজর রাখছে।