দিল্লির আবগারী নীতির ফলে ক্ষতি ২,০২৬ কোটি টাকা! ভোটের মুখে ক্যাগ-এর রিপোর্টে চাঞ্চল্য

নয়াদিল্লি: দিল্লিতে প্রশ্নের মুখে কেজরিওয়াল সরকারের আবগারী নীতি৷ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (CAG) এর একটি সম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, দিল্লি সরকারের আবগারী নীতির বাস্তবায়নে…

Delhi Assembly Election Results 2025 LIVE: Counting News and Updates

নয়াদিল্লি: দিল্লিতে প্রশ্নের মুখে কেজরিওয়াল সরকারের আবগারী নীতি৷ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (CAG) এর একটি সম্প্রতিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, দিল্লি সরকারের আবগারী নীতির বাস্তবায়নে ২,০২৬ কোটি টাকা রাজস্বের ক্ষতি হয়েছে। এই রিপোর্টে দিল্লি সরকারের নীতি বাস্তবায়নে একাধিক গাফিলতি এবং প্রশাসনিক দুর্বলতার ছবি ফুটে উঠেছে। CAG এর খতিয়ানে, আবগারী নীতির প্রক্রিয়ায় বড় ধরনের অস্বাভাবিকতা, নীতি লঙ্ঘন এবং শর্তাবলী অনুযায়ী পদক্ষেপ না করার অভিযোগ আনা হয়েছে। দিল্লি বিধানসভা ভোটের আগে CAG-র এই রিপোর্টে চাপে আপ সুপ্রিম অরবিন্দ কেজরিওয়াল৷ (Delhi Excise Policy CAG Report)

লাইসেন্স দেওয়ায় ত্রুটি Delhi Excise Policy CAG Report

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আবগারী নীতি বাস্তবায়নকারী কর্তৃপক্ষ লাইসেন্স প্রদান করার সময় যথাযথ পর্যালোচনা বা যাচাই-বাছাই করেনি। এমনকি আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বা ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলিকেও লাইসেন্স প্রদান বা তাদের লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছে। এটি সরকারের রাজস্ব আদায়ে বড় ধরনের বাধা সৃষ্টি করেছে। CAG রিপোর্ট অনুযায়ী, সরকারের উচিত ছিল এই প্রতিষ্ঠানগুলির কার্যক্রম এবং আর্থিক শর্তাবলী যাচাই করা৷ কিন্তু তা করা হয়নি, যার ফলে সরকারের রাজস্বের অনেকটাই ক্ষতি হয়েছে৷ 

রিপোর্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল, আবগারী নীতির বাস্তবায়নের সময় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত কেবিনেট বা লেফটেন্যান্ট গভর্নরের অনুমোদন ছাড়াই নেওয়া হয়েছিল। এটি সরকারি প্রক্রিয়ার বিরোধী এবং প্রাসঙ্গিক আইনি নীতির প্রতি অবমাননা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। বিশেষ করে, যখন নতুন নিয়মাবলী বা শর্তাবলী তৈরি করা হয়েছিল, তখন সেগুলোকে দিল্লি অ্যাসেম্বলিতে উত্থাপন করা হয়নি, যা আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক ছিল।

বড় ধাক্কা এসেছে করোনা অতিমারির কারণে Delhi Excise Policy CAG Report

এছাড়াও, CAG রিপোর্টে আরও কিছু গুরুতর অবহেলার কথা বলা হয়েছে। যেমন, মান নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য যে অবকাঠামো গড়ে তোলার কথা ছিল, তা সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। পরীক্ষাগার এবং ব্যাচ টেস্টিং সুবিধাগুলি স্থাপন না হওয়ার কারণে, আবগারী পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এর ফলে, বাজারে নিম্নমানের পণ্য প্রবাহিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়।

তবে, সবচেয়ে বড় ধাক্কা এসেছে করোনা অতিমারির কারণে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে কিছু লাইসেন্স ফি মুকুব করা হয়েছিল, তবে এই পদক্ষেপও যথাযথভাবে নেওয়া হয়নি। এর ফলে সরকারকে রাজস্ব ক্ষতির সম্মুখীন হয়৷ যার পরিমাণ ৯৪১ কোটি টাকা। এছাড়াও, কিছু ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি করা হয়েছে৷ যাদের বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে, যা সরকারি রাজস্বের ক্ষতি করেছে। এমনকি কিছু লাইসেন্সের অযৌক্তিক নবায়নও ঘটেছে, যা সরকারের জন্য আর্থিকভাবে ক্ষতিকর ছিল।

Advertisements

এদিকে, এই রিপোর্ট সামনে আসার পর AAP (আম আদমি পার্টি) -এর পক্ষ থেকে পাল্টা অভিযোগ আনা হয়েছে। AAP নেতা এবং রাজ্যসভার সাংসদ সঞ্জয় সিং এই রিপোর্টের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর দাবি, ‘‘এই রিপোর্ট কোথায় পাওয়া গেছে? এটা কি BJP অফিসে জমা হয়েছে?” সঞ্জয় সিং আরও বলেন, ‘‘রিপোর্ট এখনও দিল্লি অ্যাসেম্বলিতে উত্থাপন হয়নি, এবং BJP নেতারা এভাবে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তথ্য ছড়াচ্ছে।’’ তিনি এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই উল্লেখ করা হয়েছে৷