সরাসরি বিবৃতি দিয়ে মোদী সরকারের ‘চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী সেনা’ নিয়োগ বা অগ্নিপথ (Agnipath) প্রকল্প বাতিলের দাবি তুলল সিপিআইএম পলিটব্যুরো। এর জেরে রাজনৈতিক মহল সরগরম। কারণ সিপিআইএম (CPIM) নেতৃত্বাধীন এলডিএফ সরকার কেরলে। অগ্লিপপথ প্রকল্পে সে রাজ্যেও নিয়োগ হবে।
এদিকে অগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতায় দেশজুড়ে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ৷ এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে বিহারে। ছাত্রদের প্রতিবাদে কার্যত অগ্নিগর্ভে পরিণত হয় বিহার৷ জ্বলছে বিহার। একের পর এক স্টেশনে আগুন ধরানো হয়। বিক্ষোভ উত্তর প্রদেশ, হরিয়ানা, সহ অন্যত্র ছড়াচ্ছে।
এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রের আনা আগ্নিপথ প্রকল্পের বিরোধিতা করল সিপিআইএম। বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, অবিলম্বে ‘অগ্নিপথ স্কিম’ বাতিল করতে হবে। ভারতীয় সশস্ত্রবাহিনীর সেনানিয়োগ ৪ বছরের চুক্তির আওতাধীন হতে পারেনা। অবিলম্বে সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্থায়ী সেনা নিয়োগ করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে।
টানা ৪৮ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভের আগুনে পুড়ছে বিহার। একাধিক ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। গোপালগঞ্জে একটি ফাঁকা ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আবার কোথাও আন্দোলনকারীদের ছোঁড়া পাথরের আঘাতে আহত হন পুলিশ কর্মী।
ছাত্রদের বিক্ষোভে উত্তপ্ত ছিল বিহারের নওয়াদা। এলাকার বিজেপি বিধায়ক অরুণা দেবীর গাড়িতে হামলার অভিযোগ ওঠে। যদিও বিধায়কের দাবি, হামলাকারীরা ছাত্র নয়, বরং বদমাইশরা ছিল। বিধায়কের কথায়, গাড়িতে দলের পতাকা দেখে বোধহয় আরও উত্তেজিত হন বিক্ষোভকারীরা। পতাকা ছিঁড়ে দিয়েছেন। আমার গাড়ি চালক, দুই নিরাপত্তা রক্ষী ও দুই কর্মী জখম হয়েছেন। পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছেন তিনি। নওশ্রাদার বিজেপি কার্যালয় ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে। গোটা পার্টি অফিস তছনছ করে দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের একাধিক জায়গায় জাতীয় সড়কের ওপর বিক্ষোভ দেখায় ছাত্ররা।
জ্বলন্ত ট্রেনের ছবি ধরা পড়েছে ছাপরা এবং আরা জেলায়। ভাবুয়ায় রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রেনে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। উত্তপ্ত জনতা বিহারের ভাবুয়া রোড স্টেশনে একটি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের কাঁচ ভেঙে একটি বগিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এরপর মোদী সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে শুরু করে ক্ষিপ্ত জনতা।
জেহানাবাদে এদিন চলছিল রেল অবরোধ। সেখানে ছাত্রদের জমায়েত ছত্রভঙ্গ করতে উপস্থিত হয় পুলিশ৷ কিন্তু পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর, ইঁট ছোঁড়া শুরু হয়। এমনকি বেশ কিছু ছবিতে পুলিশকেও পাল্টা পাথর ছুঁড়তে দেখা যায়। বন্দুক তুলে ছাত্রদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করে পুলিশ। ছাপরাতেও একটি ট্রেনের বগি জ্বালিয়ে দেওয়ার ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। পরে পুলিশ বাধা দিতে গেলে শুরু হয় খণ্ডযুদ্ধ। লাঠি ও কাঁদানে গ্যাসে কয়েক জন বিক্ষোভকারীর আহত হওয়ার ঘটনাও ঘটেছে আরা এবং জেহানাবাদে। বহু জায়গায় বন্ধ ট্রেন চলাচল৷ বাতিল করা হয়েছে একাধিক ট্রেন।