বাম প্রার্থীকে ভোট দিল না কংগ্রেস, জোট ভাঙার ইঙ্গিত ‘চমকদার’ সুদীপের

ভাঙছে বাম-কংগ্রেস জোট? বাংলাভাষী অধ্যুষিত রাজ্য ত্রিপুরা (Tripura) সরগরম। এ রাজ্যের ‘চমকদার’ রাজনীতিক বলে চর্চিত হেভিওয়েট কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের বিস্ফোরক দাবি, রাজ্যে গত…

Tripura Ally CPI(M)'s Role Congress

ভাঙছে বাম-কংগ্রেস জোট? বাংলাভাষী অধ্যুষিত রাজ্য ত্রিপুরা (Tripura) সরগরম। এ রাজ্যের ‘চমকদার’ রাজনীতিক বলে চর্চিত হেভিওয়েট কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণের বিস্ফোরক দাবি, রাজ্যে গত নির্বাচনে বিজেপির টানা জয় হয়েছে। এ পাপের ভাগিদারী সিপিআইএম-ও। উল্লেখ্য, গত বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরায় বাম ও কংগ্রেসের জোট হয়। এই জোট প্রবল আলোড়ন ফেললেও ক্ষমতায় আসতে পারেনি।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) ত্রিপুরায় রাজ্যসভা সাংসদ নির্বাচন হয়। প্রত্যাশিতভাবে শাসকদলের প্রার্থী ও বিজেপি রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন সিপিআইএমের সুধন দাস। ৬০ আসনের বিধানসভায় বিজেপির প্রার্থী পান ৪৭টি ভোট। বাম প্রার্থী পান ১০টি ভোট। আর কংগ্রেসের ৩ বিধায়ক ভোট দেননি। জোটের স্বার্থে কংগ্রেসের ভোট পড়ার কথা ছিল বাম প্রার্থীর অনুকূলে।

   

ভোটদানে বিরত কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মণের বিস্ফোরক দাবি, সিপিআইএম হঠাৎ করে একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রার্থী ঘোষণা করে দেবে আর কংগ্রেস মেনে নেবে সেটা হতে দেবে না। সুদীপবাবুর অভিযোগ, ‘২০২৩ সালে রাজ্যে দ্বিতীয়বার বিজেপি ক্ষমতা দখল করার জন্য শুধুমাত্র মথাকে দোষারোপ করলে চলবে না পাপের ভাগীদারি সি পি আইএম-ও’।

উল্লেখ্য গত বিধানসভা নির্বাচনে উরজাতি দল তিপ্রা মথা দল একাধিক আসনে ভোট কেটে নেন। এতে একাধিক আসমে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থীরা পরাজিত হন। বিরোধীদল হিসেবে উঠে এসেছিল মথা। তবে পরে মথা দলটি বিজেপির জোটে সামিল হয়। ফের বিরোধী আসনে চলে যায় সিপিআইএম।

নির্বাচন পরবর্তী বারবার রাজ্য বামফ্রন্ট ও সিপিআইএমের রাজ্য সম্পাদক তথা বর্তমান বিরোধী দলনেতা জীতেন্দ্র চৌধুরী দাবি করেছেন, তিপ্রা মথার সঙ্গে বিজেপির গোপন সংযোগ হয়েছিল। মথা ভোট কেটে বিজেপির প্রার্থীদের জয় পেতে সুবিধা করে। এই প্রসঙ্গটি টেনে কংগ্রেস বিধায়ক সুদীপ বর্মণ বলেন, ‘পাপের ভাগীদারি সিপি়আইএম-ও’।

তিনি বলেন, ‘২০২৩ সালে সিপিআইএম যা করেছে তা কংগ্রেস দেখেছে। সুদীপ বর্মণ বলেছেন, রাজ্যসভার একটি মাত্র আসনে গণতন্ত্রের জয় হয়েছে এই কথা যাতে বিজেপি বলতে না পারে তার জন্য কংগ্রেসের তিন বিধায়ক রাজ্যসভার ভোটদান থেকে বিরত রয়েছেন। সিপিআইএমের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ও বিধায়ক বীরজিৎ সিনহা।

উল্লেখ্য, ত্রিপুরায় একটানা ২৫ বছরের শাসন চালিয়ে সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট ২০১৮ সালে বিজেপির কাছে পরাজিত হয়। সেই পালাবদলেন ভোটে তৎকালীন বিরোধী দল কংগ্রেসের বিধায়করা সুদীপ বর্মণের নেতৃত্বে প্রথমে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। পরে তাঁরা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। বিজেপি সরকার গড়ার পর সুদীপ বর্মণ ছিলেন মন্ত্রী। সরকারের ভূমিকায় সরব হয়ে তিনি ফের কংগ্রেসে ফিরে এসেছেন। গত বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস জোট প্রার্থী হয়ে জয়ী হন সুদীপবাবু। তিনি রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সমীর বর্মণের পুত্র।