আমেরিকার অপমানে নীরব মোদী, জবাব চায় কংগ্রেস

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয়দের অপমান এবং অত্যাচারের দৃশ্য বারে বরে নজরে এসেছে। কংগ্রেস (congress) এবার তাই উত্তর চায় মোদী কেন এতো কাণ্ডের পর ও নীরব। কংগ্রেসের…

congress demands answer from modi

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয়দের অপমান এবং অত্যাচারের দৃশ্য বারে বরে নজরে এসেছে। কংগ্রেস (congress) এবার তাই উত্তর চায় মোদী কেন এতো কাণ্ডের পর ও নীরব। কংগ্রেসের বিবৃতি অনুযায়ী  আমেরিকার রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার দাবি করেছেন যে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘটিয়েছেন।

শুধু একবার বা দুবার নয়, বারো বার তিনি এই দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, তিনি ভারত ও পাকিস্তানকে বাণিজ্য চুক্তির হুমকি দিয়ে যুদ্ধবিরতিতে বাধ্য করেছেন। এমনকি তিনি ভারতকে “অপব্যবহারকারী”, “সবচেয়ে খারাপ” এবং “প্রতারক” বলে অভিহিত করেছেন, তাও যখন আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকার মাটিতে ছিলেন।

   

কিন্তু এই সবের জবাবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী কেন নীরব? (congress) কেন তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করছেন না? এমনকি ট্রাম্প ভারতের উপর শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন, তবুও কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। এই নীরবতা কি ভারতের জাতীয় গর্বের জন্য অপমানজনক নয়?

আমেরিকার অপমানজনক আচরণ (congress)

ট্রাম্পের আচরণ শুধুমাত্র ভারতের প্রতি অপমানজনকই নয়, তিনি ভারত ও পাকিস্তানকে একই মাপকাঠিতে বিবেচনা করছেন, যা ভারতীয়দের কাছে অগ্রহণযোগ্য। ভারত একটি সমৃদ্ধ গণতন্ত্র, যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বিশাল অগ্রগতি অর্জন করেছে।(congress)

অন্যদিকে, পাকিস্তানকে একটি জঙ্গি রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেখানে ওসামা বিন লাদেন, মাসুদ আজহার, হাফিজ সাঈদ এবং দাউদ ইব্রাহিমের মতো জঙ্গিরা আশ্রয় পেয়েছে। তবুও আমেরিকা পাকিস্তানের জন্য লাল গালিচা বিছিয়ে দিচ্ছে, যা ভারতীয়দের মনে প্রশ্ন তুলছে। আমেরিকা কেন ভারত ও পাকিস্তানকে সমান মনে করছে? এটা কি ভারতের ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক মর্যাদার প্রতি অপমান নয়?

ট্রাম্পের দাবি(congress) যে তিনি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘটিয়েছেন, তা ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বারবার প্রত্যাখ্যান করেছে। মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল স্পষ্ট জানিয়েছেন, যুদ্ধবিরতি ভারত ও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (DGMO)-এর মধ্যে সরাসরি আলোচনার মাধ্যমে হয়েছে, এবং এতে কোনো বাণিজ্য আলোচনা বা আমেরিকার মধ্যস্থতার ভূমিকা ছিল না। তবুও ট্রাম্প বারবার এই দাবি করে চলেছেন, এবং ভারত সরকারের নীরবতা জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করছে।

মোদীর নীরবতা: জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমেরিকায় সফরের সময় ট্রাম্পের এই অপমানজনক মন্তব্যের জবাবে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাননি(congress)। এমনকি ট্রাম্প অন্যান্য রাষ্ট্রপ্রধানদের মতো মোদীকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতেও যাননি, যা কূটনৈতিক প্রটোকলের লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই নীরবতা জনমনে প্রশ্ন তুলেছে: তিনি কি ভারতের স্বার্থ রক্ষা করছেন, নাকি কেবল ব্যক্তিগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে ব্যস্ত? প্রধানমন্ত্রীর কাজ কি শুধু বিদেশী নেতাদের সঙ্গে আলিঙ্গন করা, নাকি ভারতের সম্মান ও নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষা করা? (congress)

সামাজিক মাধ্যমে এবং হোয়াটসঅ্যাপ ফরোয়ার্ডে ভারতকে ‘বিশ্বগুরু’ বলে প্রচার করা হলেও, বাস্তবে ভারতের বৈশ্বিক প্রভাব কি কমছে? বড় বড় দেশগুলোর মধ্যে কেউই ভারতের পাশে দাঁড়াচ্ছে না, বরং অনেকেই পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন দেখাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের পররাষ্ট্র নীতি কতটা কার্যকর, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

ভারতীয় ছাত্রদের প্রতি দুর্ব্যবহার

আমেরিকায় ভারতীয় ছাত্রদের প্রতি দুর্ব্যবহারের ঘটনাও জনমনে ক্ষোভ বাড়িয়েছে। সম্প্রতি নিউয়ার্ক লিবার্টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একজন ভারতীয় ছাত্রকে আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তারা মাটিতে ফেলে হাতকড়া পরিয়ে নির্বাসিত করেছেন(congress)। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে, এবং এটি ভারতীয় ছাত্রদের প্রতি আমেরিকার অবমাননাকর আচরণের প্রতীক হয়ে উঠেছে।

Advertisements

এছাড়া, আমেরিকার বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভারতীয় ছাত্রদের উপর হামলা এবং বৈষম্যের ঘটনা বাড়ছে। উদাহরণস্বরূপ, মেঘা ভেমুরি নামে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত ছাত্রীকে তার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এই ঘটনাগুলোর জবাবে ভারত সরকারের প্রতিক্রিয়া অত্যন্ত দুর্বল। সরকারের পক্ষ থেকে কেবল একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে বলা হয়েছে, ছাত্রদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম মেনে চলা উচিত। এই ধরনের নম্র প্রতিক্রিয়া কি ভারতের মতো একটি শক্তিশালী দেশের জন্য উপযুক্ত? ভারতীয় নাগরিকরা বিদেশে অপমানিত হচ্ছে, অথচ সরকার কেন এই বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে না?

পাকিস্তানের প্রতি আমেরিকার সমর্থন

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী (congress) শেহবাজ শরিফ ট্রাম্পের মধ্যস্থতার দাবিকে সমর্থন করেছেন এবং তাঁর “শান্তির পক্ষে ভূমিকা”র জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এটি ভারতের জন্য আরও অপমানজনক, কারণ পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সংযোগ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত, তবুও আমেরিকা তাদের প্রতি সমর্থন দেখাচ্ছে। ট্রাম্প এমনকি কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন, যা ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থানের বিরুদ্ধে, যে কাশ্মীর একটি দ্বিপাক্ষিক বিষয় এবং তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপ অগ্রহণযোগ্য।

ভারতের পররাষ্ট্র নীতির দুর্বলতা

ভারতের পররাষ্ট্র নীতি (congress) এই মুহূর্তে কঠিন পরীক্ষার মুখে রয়েছে। ট্রাম্পের মন্তব্য এবং আমেরিকার পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন ভারতের বৈশ্বিক প্রভাব কমিয়ে দিচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, ভারত ও পাকিস্তানকে একই মাপকাঠিতে বিবেচনা করা ভারতের অর্জনের অবমাননা। বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি ঘোষণা এবং বাণিজ্য হুমকি ভারতের কূটনৈতিক অবস্থানকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ভারতের সরকারকে এখন স্পষ্টভাবে তার অবস্থান জানাতে হবে এবং তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতা প্রত্যাখ্যান করতে হবে।

নন্দীগ্রামে বিজেপিতে ভাঙন, কোন্দল তৃণমূলের অন্দরে

প্রধানমন্ত্রী মোদী (congress) এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বারবার বলেছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা কেবল সন্ত্রাসবাদ এবং পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর (PoK) প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে হবে। কিন্তু এই দৃঢ় অবস্থান বিশ্ব মঞ্চে কতটা কার্যকর হচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। ভারতের জনগণ প্রত্যাশা করে যে তাদের সরকার বিদেশে ভারতীয়দের মর্যাদা রক্ষা করবে এবং জাতীয় স্বার্থের প্রতি কঠোর অবস্থান নেবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রীর নীরবতা এবং আমেরিকার অপমানজনক মন্তব্য ভারতের বৈশ্বিক মর্যাদার প্রতি প্রশ্ন তুলেছে। সামাজিক মাধ্যমে ‘বিশ্বগুরু’র প্রচারণা চললেও, বাস্তবে ভারতের কূটনৈতিক অবস্থান দুর্বল হচ্ছে। ভারতীয় ছাত্রদের প্রতি দুর্ব্যবহার এবং পাকিস্তানের প্রতি আমেরিকার সমর্থন ভারতের জনগণের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি করছে।

এখন সময় এসেছে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার এবং ভারতের সম্মান ও নাগরিকদের মর্যাদা রক্ষার জন্য জোরালো কণ্ঠে কথা বলার। প্রধানমন্ত্রী মোদীকে (congress) অবশ্যই এই অপমানের জবাব দিতে হবে এবং ভারতের স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে হবে, যাতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ভারতের শক্তিশালী অবস্থান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়।