মহারাষ্ট্রের কোলহাপুর উত্তরে কংগ্রেস প্রার্থী মধুরিমা রাজে ছত্রপতি (Congress Candidate Madhurima Raje Chhatrapati) শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করায় মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন দেখা গেছে। মাত্র পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা কংগ্রেস দলের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কোলহাপুর উত্তরে কংগ্রেসের প্রভাব দীর্ঘদিন ধরেই শক্তিশালী, যেখানে দলটি ২০১৯ সালের বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০২২ সালের উপনির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিল। তবে এবার সেখানে মহারাষ্ট্র বিকাশ আঘাদি (এমভিএ)-এর কোনও প্রার্থী থাকছে না, যা সমর্থকদের মধ্যে চমকের সৃষ্টি করেছে।
রাজ পরিবারের সদস্য মধুরিমা রাজের মনোনয়ন প্রত্যাহারের প্রভাব
কোলহাপুর উত্তরের কংগ্রেস প্রার্থী মধুরিমা রাজে ছত্রপতি মহারাষ্ট্রের রাজ পরিবারের সদস্য হওয়ায় তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ পরিবারের সাথে যুক্ত থাকা এই প্রার্থীর প্রার্থিতা প্রত্যাহার দলীয় পর্যায়ে এবং সমর্থকদের মধ্যে এক ধরনের হতাশার জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এটি কংগ্রেস দলের জন্য একটি “রয়্যাল সেটব্যাক” এবং এর ফলে দলের শক্ত ঘাঁটিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
মধুরিমা রাজের সিদ্ধান্তে কংগ্রেস এবার মহারাষ্ট্রের মোট ২৮৮ আসনের মধ্যে মাত্র ১০১টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। কোলহাপুর উত্তরে কংগ্রেসের প্রার্থী না থাকায় এই এলাকা এখন অন্যান্য দলগুলোর জন্য উন্মুক্ত হয়ে গেল। এই পরিস্থিতিতে শিবসেনা, এনসিপি এবং বিজেপি কীভাবে অবস্থান গ্রহণ করবে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।
কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে প্রতিপক্ষদের সুযোগ
কোলহাপুর উত্তর কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। এই অঞ্চলে কংগ্রেসের অনুপস্থিতি তাদের জন্য বড় ধাক্কা এবং প্রতিপক্ষ দলগুলির জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বিজেপি, এনসিপি এবং অন্যান্য ছোট দলগুলি এখন এই এলাকা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধুরিমা রাজের মনোনয়ন প্রত্যাহার কোলহাপুর উত্তরে বিজেপির শক্তি বৃদ্ধি করতে পারে।
শেষ মুহূর্তের নাটক এবং দলের ভেতর উত্তেজনা
মনোনয়ন প্রত্যাহারের এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেস দলের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে। মাত্র পাঁচ মিনিট বাকি থাকতে মধুরিমা রাজে ছত্রপতি মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন, যা অনেককেই অবাক করেছে। কংগ্রেসের উচ্চ পর্যায়ের নেতারা এই সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছেন এবং অনেকেই মনে করছেন, এই পরিস্থিতি দলের অর্ন্তগত মনোমালিন্যের প্রতিফলন হতে পারে। এই ধরনের সিদ্ধান্ত দলের প্রতি জনগণের আস্থার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা।
দলের জন্য ভবিষ্যত প্রভাব
কংগ্রেসের এই ধাক্কা দলের জন্য মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে। কোলহাপুর উত্তর সহ মহারাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলোতে এই ঘটনার পর কংগ্রেসের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেছে। দলের নেতারা এখন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তবে এই মনোনয়ন প্রত্যাহার কংগ্রেসের ভবিষ্যৎ ভোটের ফলাফলের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মধুরিমা রাজের এই সিদ্ধান্ত কংগ্রেসের সংগঠনের শক্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং দলীয় ঐক্যের অভাবও প্রতিফলিত হয়েছে। কোলহাপুর উত্তর কংগ্রেসের জন্য একটি ঐতিহ্যবাহী ঘাঁটি হলেও এই মনোনয়ন প্রত্যাহারের ফলে তারা সেখানে প্রতিপক্ষদের সুযোগ করে দিয়েছে। কংগ্রেসের এই সিদ্ধান্ত মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক মানচিত্রে পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এখন দেখার বিষয়, কংগ্রেস এই পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেয় এবং পরবর্তী নির্বাচনে এই ঘটনাটি তাদের ফলাফলের ওপর কী ধরনের প্রভাব ফেলে।