ভারত-চীন যোগাযোগে ডিজিসিএর কাছে অনুমতি চাইল চীনা এয়ারলাইন্স

ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় শুরু করার প্রথম পদক্ষেপ নিল চীনা এয়ারলাইন্স (Chinese Airlines)। তিনটি চীনা এয়ারলাইন্স এয়ার চায়না, চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স এবং…

Chinese Airlines in India

ভারত ও চীনের মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় শুরু করার প্রথম পদক্ষেপ নিল চীনা এয়ারলাইন্স (Chinese Airlines)। তিনটি চীনা এয়ারলাইন্স এয়ার চায়না, চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইন্স এবং চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স ভারতের বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রক সংস্থা, ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল এভিয়েশন (DGCAS)-র কাছে অপারেশনাল অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে।

এছাড়াও, একটি অজ্ঞাতনামা চীনা কার্গো এয়ারলাইন্সও এই অনুমোদনের জন্য আবেদন জমা দিয়েছে। এই পদক্ষেপটি ২০২০ সাল থেকে বন্ধ থাকা ভারত-চীন প্রত্যক্ষ ফ্লাইট পুনরায় চালু করার প্রথম উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা। এই উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের উন্নতি এবং বাণিজ্য, পর্যটন ও শিক্ষা ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়।

   

২০২০ সালের শুরুতে কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে ভারত ও চীনের মধ্যে প্রত্যক্ষ ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে, একই বছরে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের ফলে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে, যা ফ্লাইট পুনরায় চালুর সম্ভাবনাকে আরও জটিল করে তোলে।

ফলস্বরূপ, এই দুই দেশের মধ্যে ভ্রমণকারীদের সিঙ্গাপুর, ব্যাঙ্কক বা দুবাইয়ের মতো তৃতীয় দেশের হাবের মাধ্যমে যাতায়াত করতে হয়েছে, যা ভ্রমণের সময় ও খরচ বাড়িয়েছে। বর্তমানে প্রতি বছর প্রায় ১০ লক্ষ যাত্রী এই রুটে ভ্রমণ করেন, এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, প্রত্যক্ষ ফ্লাইট চালু হলে এই সংখ্যা তিনগুণ বাড়তে পারে।

চীনা এয়ারলাইন্সগুলি দিল্লি (ডিইএল), মুম্বই (বিওএম) এবং কলকাতা (সিসিইউ) এর মতো ভারতের প্রধান বিমানবন্দরে স্লট বুকিং শুরু করেছে। এয়ার চায়না, চায়না ইস্টার্ন এবং চায়না সাউদার্ন বেইজিং, সাংহাই এবং গুয়াংজু-এর মতো চীনের প্রধান শহরগুলির সঙ্গে ভারতের শহরগুলিকে সংযুক্ত করতে চায়।

তবে, ফ্লাইট শুরু করার আগে তাদের ডিজিসিএ-র কাছ থেকে অপারেশনাল অনুমোদন এবং ব্যুরো অফ সিভিল এভিয়েশন সিকিউরিটি (বিসিএএস) থেকে নিরাপত্তা ছাড়পত্র পেতে হবে। এই অনুমোদন পাঁচ বছরের জন্য বৈধ থাকে, এবং ২০২০ সাল থেকে চীনা এয়ারলাইন্সগুলির পূর্বের অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

এই উদ্যোগের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে সাম্প্রতিক কূটনৈতিক আলোচনার। গত অক্টোবরে রাশিয়ায় ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলনের প্রান্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠকের পর দুই দেশের সম্পর্কের উন্নতি ঘটে।

এছাড়া, চীনের বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই-এর নতুন দিল্লি সফর এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিসরির বেইজিং সফরে প্রত্যক্ষ ফ্লাইট পুনরায় চালু এবং ভিসা সুবিধা বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। দুই দেশই ২০১৯ সালের ফ্লাইট সংখ্যার স্তরে প্রাথমিকভাবে ফ্লাইট সীমাবদ্ধ রাখতে সম্মত হয়েছে, যাতে দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল চুক্তি সংশোধনের প্রয়োজন না হয়।

Advertisements

ভারতীয় এয়ারলাইন্সগুলিও এই সুযোগের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়া বেইজিং, সাংহাই এবং গুয়াংজু-এর মতো চীনের শহরে ফ্লাইট পুনরায় চালু করার পরিকল্পনা করছে। ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্স জানিয়েছেন, দ্বিপাক্ষিক চুক্তি চূড়ান্ত হলেই তারা ফ্লাইট শুরু করতে প্রস্তুত।

২০১৯ সালে, চীনা এয়ারলাইন্সগুলি ভারত-চীন রুটে ৮০ শতাংশের বেশি ফ্লাইট পরিচালনা করত, তবে ভারতীয় এয়ারলাইন্স, বিশেষ করে ইন্ডিগো এবং প্রাইভেটাইজড এয়ার ইন্ডিয়া, এখন আরও প্রতিযোগিতামূলক অবস্থানে রয়েছে।

প্রত্যক্ষ ফ্লাইট পুনরায় চালু হলে বাণিজ্য, পর্যটন এবং শিক্ষার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হবে। ভারতের বেইজিংয়ে অবস্থিত দূতাবাস পাঁচ বছর পর চীনা নাগরিকদের জন্য পর্যটক ভিসা ইস্যু শুরু করেছে, যা মানুষে মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর প্রচেষ্টাকে শক্তিশালী করছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ফ্লাইটগুলি ই-কমার্স, ফার্মাসিউটিক্যালস এবং উৎপাদন শিল্পের মতো ক্ষেত্রে বাণিজ্য বাড়াবে। এছাড়া, শিক্ষার্থী এবং ব্যবসায়ীদের জন্য ভ্রমণ আরও সুবিধাজনক এবং সাশ্রয়ী হবে।

ChatGPT-5 Issues Bullish Q4 Price Targets for Solana (SOL), Ethereum (ETH), and Little Pepe (LILPEPE)

এই উদ্যোগ দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক পুনর্গঠনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আগামী শীতকালীন সময়সূচী থেকে ফ্লাইট শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে নিয়ন্ত্রক অনুমোদন এবং স্লট বরাদ্দের উপর নির্ভর করে এই সময়সীমা পরিবর্তিত হতে পারে।