ছ’মাসের নিষেধাজ্ঞা শেষে ফের ভারতকে বিরল খনিজ (Rare Earth Minerals) রফতানি শুরু করল চিন। তবে বেজিং এবার দিল্লির উপর আরোপ করেছে কঠোর শর্ত, এই খনিজ আমেরিকায় রফতানি করা যাবে না, এবং সামরিক খাতে ব্যবহারেরও অনুমতি নেই। শর্ত ভঙ্গ হলে ফের রফতানি বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে কূটনৈতিক মহল।
ওয়াশিংটন-বেজিং সংঘাত
চিনের এই সিদ্ধান্ত এমন সময়ে এসেছে, যখন বিরল খনিজ নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটন-বেজিং সংঘাত তীব্র আকার নিয়েছিল। গত জুলাইয়ে চিন যখন এই খনিজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করে, তখনই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, বেজিংয়ের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে। অবশেষে দক্ষিণ কোরিয়ায় ট্রাম্প-শি বৈঠকের পর পরিস্থিতির কিছুটা পরিবর্তন হয়। বৈঠকের পর ট্রাম্প দাবি করেন, বিরল খনিজ রফতানির সমস্যা “সমাধান হয়েছে”, এবং আমেরিকার সঙ্গে চিন এক বছরের জন্য একটি সরবরাহ-চুক্তিতেও উপনীত হয়েছে।
তবে ভারতের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন। সূত্রের খবর, বেজিং ভারতীয় সংস্থাগুলির কাছ থেকে আগে ‘এন্ড-ইউজ়ার সার্টিফিকেট’ বা শেষ ব্যবহারকারীর শংসাপত্র চেয়েছিল। সেই নথি খতিয়ে দেখার পরই রফতানির অনুমতি দেওয়া হয়। আপাতত ভারতের চারটি সংস্থা—হিতাচি, কন্টিনেন্টাল, জে-শিন এবং ডিই ডায়মন্ডস—কে বিরল খনিজ সরবরাহের ছাড়পত্র দিয়েছে চিন।
“সীমিত পরিসরে পরীক্ষামূলক রফতানি” China Rare Earth Export Conditions India
চিনের বাণিজ্য মন্ত্রকের একজন কর্তা সংবাদমাধ্যম ইকনমিক টাইমস-কে জানিয়েছেন, এই সিদ্ধান্ত “সীমিত পরিসরে পরীক্ষামূলক রফতানি” হিসেবে দেখা হচ্ছে। এখনও পর্যন্ত ৫০টিরও বেশি ভারতীয় আবেদন মুলতুবি রয়েছে, যেগুলি ধাপে ধাপে অনুমোদন পেতে পারে।
বিশ্ব বাজারে বিরল খনিজের প্রায় ৭০ শতাংশ সরবরাহের নিয়ন্ত্রণ চিনের হাতে, যা ইলেকট্রনিক গাড়ি, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও উচ্চপ্রযুক্তি শিল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বেজিংয়ের অভিযোগ, কিছু দেশ এই খনিজ সামরিক প্রয়োজনে ব্যবহার করছে। তাই “বিশ্বশান্তির স্বার্থে” তারা রফতানিতে শর্ত আরোপ করেছে বলে দাবি করেছে চিন।
কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বেজিংয়ের এই শর্ত ভারতের কৌশলগত স্বাধীনতাকে সীমিত করতে পারে। কারণ দিল্লি বর্তমানে মার্কিন প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ও প্রযুক্তি বিনিময়ের পথে যতটা এগোচ্ছে, চিন সেই পথেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে চাইছে।



