মেমু ট্রেনের ধাক্কায় মৃত ৮, আহত ১৪, ১০ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণের ঘোষণা

tragic-train-accident-in-bilaspur-passenger-and-freight-trains-crash-casualties-reported

ছত্তিশগড়: বিলাসপুরে মঙ্গলবার ঘটল ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা (Bilaspur train accident)। একটি মেমু যাত্রীবাহী ট্রেন পণ্যবাহী ট্রেনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়ে মৃত্যু হলো অন্তত আটজন যাত্রীর, আহত হয়েছেন আরও ১৪ জন। বিকেল প্রায় চারটে নাগাদ এই দুর্ঘটনা ঘটে বিলাসপুর রেলস্টেশনের কাছে লাল খদন টোরভা ফটকের উর্ধ্ব লাইন এলাকায়।

Advertisements

প্রাথমিকভাবে রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দাঁড়িয়ে থাকা একটি পণ্যবাহী ট্রেনের পেছনে দ্রুতগতিতে এসে ধাক্কা মারে মেমু ট্রেনটি। ধাক্কার ফলে ট্রেনের সামনের কামরা সম্পূর্ণ চুরমার হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই কয়েকজনের মৃত্যু হয়। আহতদের উদ্ধার করে স্থানীয় অ্যাপোলো হাসপাতাল ও সিআইএমএস (CIMS) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

   

বিলাসপুর জেলার কালেক্টর সঞ্জয় আগরওয়াল জানিয়েছেন, “এই দুর্ঘটনায় এখন পর্যন্ত আটজনের মৃত্যু নিশ্চিত হয়েছে। আরও দুই ব্যক্তি এখনো ট্রেনের ধ্বংসস্তূপে আটকে আছেন। প্রায় ১৬ থেকে ১৭ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।” প্রশাসন, রেলওয়ে ও উদ্ধারকর্মীরা রাতভর উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন।

ছত্তিশগড়ের উপমুখ্যমন্ত্রী অরুণ সাও ঘটনাস্থলে পৌঁছে বলেন, “পণ্যবাহী ট্রেনটি থেমে ছিল, আর মেমু ট্রেনটি পিছন থেকে এসে ধাক্কা মারে। ইঞ্জিন ও প্রথম কামরা সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমরা উদ্ধারকাজে পূর্ণ সহযোগিতা করছি।”

ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী বিষ্ণু দেব সাই দুর্ঘটনাকে “অত্যন্ত মর্মান্তিক” বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি এক্স (X)-এ পোস্ট করে জানিয়েছেন, “জেলা প্রশাসক ও রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। আহতদের দ্রুত চিকিৎসা ও নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকার শোকাহত পরিবারের পাশে রয়েছে।”

Advertisements

রেলবোর্ডের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মেমু ট্রেনটি সম্ভবত “রেড সিগন্যাল” অতিক্রম করেছিল। এক বিবৃতিতে রেলবোর্ড জানায়, সিগন্যাল অমান্য করাই দুর্ঘটনার সম্ভাব্য কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।

এক মহিলা যাত্রী জানান, “আমি আকলতারা থেকে বিলাসপুর যাচ্ছিলাম। হঠাৎ প্রবল ধাক্কা লাগে, সবাই চিৎকার শুরু করে। আমার পা সিটের নিচে আটকে গিয়েছিল, উদ্ধারকর্মীরা এসে আমাকে টেনে বের করেন।” ওই মহিলার পায়ে ফ্র্যাকচার হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

রেলওয়ে মন্ত্রণালয় ঘোষণা করেছে নিহতদের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকা, গুরুতর আহতদের ৫ লক্ষ টাকা এবং সামান্য আহতদের ১ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।

বর্তমানে এনডিআরএফ, এসডিআরএফ, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন যৌথভাবে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে, যাতে রেল চলাচল দ্রুত স্বাভাবিক করা যায়। রাজ্য সরকার পুরো ঘটনাটির উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।