ছত্তিশগড়ে খ্রিস্টান মিশনারি দের সঙ্গে গ্রামবাসীদের সংঘর্ষ

chhattisgarh-kanker-christian-missionaries-clash-villagers

কাঙ্কার: ছত্তিশগড়ের কাঙ্কার জেলায় খ্রিস্টান মিশনারিদের সঙ্গে গ্রামবাসীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে, যা রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে। দুই মাস আগে মিশনারিরা একটি ব্যক্তিগত জমিতে দখল করে প্রচারণা ও ধর্মান্তরণের কাজ শুরু করেছিলেন বলে অভিযোগ। আদালত তাদের খালি করার নির্দেশ দিলেও তারা ভিড় জমিয়ে বারবার তা স্থগিত করে দিয়েছে।

Advertisements

সংঘর্ষের পর গ্রামে পুলিশের ভারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, এবং উভয় পক্ষের প্রতিবাদ চলছে। এই ঘটনা কাঙ্কারকে ধর্মীয় উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছে, যেখানে স্থানীয় আদিবাসী সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষার প্রশ্ন উঠেছে।ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল আগস্ট মাসে। জমগাঁও গ্রামের একটি ব্যক্তিগত জমিতে খ্রিস্টান মিশনারিরা একটি সাময়িক গির্জা বা প্রচার কেন্দ্র গড়ে তুলেছিলেন।

   

স্নাতকদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ! রেলে হাজার হাজার পদে নিয়োগের জন্য আবেদন শুরু

স্থানীয় গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন, এই জমিতে ধর্মান্তরণের প্রচার চলছিল, যা তাদের ঐতিহ্যবাহী হিন্দু-আদিবাসী রীতিনীতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। গ্রামের পঞ্চায়েত নেতারা বলছেন, “আমাদের গ্রামে কোনো খ্রিস্টান ছিল না, কিন্তু মিশনারিরা এসে জমি দখল করে ধর্মান্তরণের চক্রান্ত শুরু করেছে। এতে আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংস হচ্ছে।” গ্রামবাসীরা আদালতে গিয়ে জমি খালি করার আবেদন করেন, এবং আদালতও তা মেনে নির্দেশ দেয়।

কিন্তু মিশনারিরা আইনি কারণ দেখিয়ে বারবার স্থগিত করতে থাকেন, যা গ্রামবাসীদের ক্ষোভ বাড়িয়ে তোলে।গতকাল সকালে সংঘর্ষ শুরু হয়। গ্রামবাসীরা জমির সামনে ভিড় জমিয়ে প্রতিবাদ শুরু করলে মিশনারি সমর্থকরাও উপস্থিত হন। দুই পক্ষের মধ্যে ঝগড়া বেড়ে যায়, এবং পাথর ছোড়াছোড়ি শুরু হয়। কয়েকজন আহত হন, এবং একটি ছোটখাটো গির্জা কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

Advertisements

স্থানীয় পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে, কিন্তু গ্রামবাসীরা পুলিশের উপরও অভিযোগ করে বলেছেন, “পুলিশ মিশনারিদের পক্ষপাতিত্ব করছে।” কাঙ্কার পুলিশ সুপার অমিত কুমার জানিয়েছেন, “আমরা ২০০-এর বেশি পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করেছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে, কিন্তু আমরা শান্তি কমিটি গঠন করে কথা বলব।”

এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি, কিন্তু তদন্ত চলছে।কাঙ্কার জেলা, যা আদিবাসী-প্রধান এলাকা, গত কয়েক বছর ধরে ধর্মান্তরণ নিয়ে উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু। ২০২৩ সালে বিজেপি ক্ষমতায় এসে ধর্মান্তরণ-বিরোধী আইন আরও কঠোর করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ২২টি গ্রামে খ্রিস্টানদের কবর দেওয়ার অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে, এবং নীল রঙের বিলবোর্ড গড়ে তোলা হয়েছে যাতে লেখা, “খ্রিস্টান মিশনারিদের প্রবেশ নিষিদ্ধ”।

ইন্টারন্যাশনাল খ্রিস্টান কনসার্ন (আইসিসি) জানিয়েছে, এই গ্রামগুলোতে ৪০০-এর বেশি লোক জড়িত, যারা পঞ্চায়েত (এক্সটেনশন টু শিডিউলড এরিয়াজ) আইনের অধীনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খ্রিস্টান অধিকার সংগঠন ওয়ার্থি খ্রিস্টান নিউজ বলেছে, এটি সাংবিধানিক ধর্মীয় স্বাধীনতার লঙ্ঘন।স্থানীয় আদিবাসী নেতা সোমলাল রাঠোরের মৃত্যুর পর একটি খ্রিস্টান সমাধি নিয়ে জুলাই মাসে আরেক সংঘর্ষ হয়েছিল, যা এই ঘটনার পটভূমি তৈরি করেছে।