সংবাদাদাত: ছত্তিশগড়ের (Chhattisgarh) গারিয়াবন্দ জেলায় বড় সাফল্য পেল রাজ্য পুলিশ। দীর্ঘদিন ধরে পলাতক থাকা সাতজন নকশাল, যাদের মাথার উপর মোট ৩৭ লক্ষ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছিল, তারা শুক্রবার গারিয়াবন্দ পুলিশের সামনে আত্মসমর্পণ করেছে।
সংবাদ সংস্থা ANI জানিয়েছে, এই আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠিত হয় গারিয়াবন্দ জেলার সদর থানা প্রাঙ্গণে, যেখানে পুলিশের জ্যেষ্ঠ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। আত্মসমর্পণ করা নকশালদের মধ্যে বেশ কয়েকজন স্থানীয় নকশাল দলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছিল বলে সূত্রের খবর।
পুলিশ জানিয়েছে, এই নকশালরা দীর্ঘদিন ধরে এলাকার বিভিন্ন গ্রাম ও বনাঞ্চলে সক্রিয় ছিল এবং রাজ্যের নিরাপত্তা বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিক হামলার সঙ্গে যুক্ত ছিল। তাদের আত্মসমর্পণ সরকারের মেইনস্ট্রিমে ফেরানোর নীতি-র বড় সাফল্য হিসেবে দেখা হচ্ছে।
গারিয়াবন্দ জেলার পুলিশ সুপার জানান, “এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই সাতজনের আত্মসমর্পণ প্রমাণ করে যে, সরকারের পুনর্বাসন নীতি এবং উন্নয়নের বার্তা নকশাল প্রভাবিত এলাকায় পৌঁছে যাচ্ছে। আমরা আশা করছি, আরও অনেকেই অস্ত্র ত্যাগ করে শান্তির পথে আসবে।”
আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, বিস্ফোরণ ও চাঁদাবাজির একাধিক মামলা রয়েছে। পুলিশের দাবি, এদের মধ্যে দুইজন নকশাল কমান্ডার ছিলেন, যারা দণ্ডকারণ্য অঞ্চলে সক্রিয় ছিল।
সূত্রের খবর, আত্মসমর্পণের পর পুলিশ তাদের পুনর্বাসন প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করেছে। সরকার আত্মসমর্পণকারীদের জন্য আর্থিক সহায়তা, বাসস্থান, ও কর্মসংস্থানের সুযোগ দিচ্ছে, যাতে তারা সমাজের মূলধারায় ফিরে আসতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছত্তিশগড় সরকারের “নকশাল মোকাবিলা ও পুনর্বাসন” নীতি কার্যকরভাবে ফল দিচ্ছে। উন্নয়নমূলক প্রকল্প, শিক্ষা এবং বিকল্প জীবিকার সুযোগ বৃদ্ধির ফলে ক্রমে নকশাল কার্যকলাপ কমছে।
গারিয়াবন্দ জেলা সীমান্তবর্তী হওয়ায় এটি বহু বছর ধরে মাওবাদী কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রস্থল ছিল। কিন্তু এখন নিরাপত্তা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযান ও জনসচেতনতা প্রচারের ফলে এলাকার পরিস্থিতি অনেকটাই উন্নত হয়েছে।
#WATCH | Gariyaband, Chhattisgarh: 7 naxals carrying a bounty of a total of Rs 37 lakhs on their head, surrender before the Gariyaband police. pic.twitter.com/w4F2HgJvac
— ANI (@ANI) November 7, 2025
একজন আত্মসমর্পণকারী নকশাল বলেন, “আমরা ভুল পথে ছিলাম। সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ দেখে বুঝেছি, অস্ত্রের মাধ্যমে কিছুই অর্জন করা যায় না। এখন আমরা সমাজে ফিরে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে চাই।” এই আত্মসমর্পণের ঘটনায় নিরাপত্তা বাহিনীর মনোবল আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।


