ছত্তিশগড় ২৮ সেপ্টেম্বর: ছত্তিশগড়ের কাঁকের জেলায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে মাওবাদীদের (Chhattisgarh Encounter) মধ্যে রক্তাক্ত সংঘর্ষে তিনজন উল্লেখযোগ্য নকশালী নিহত হয়েছে। এদের মিলিত পুরস্কারের পরিমাণ ১৪ লক্ষ টাকা। এই ঘটনায় একজন মহিলা মাওবাদীসহ তিনের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, যা বস্তর অঞ্চলে মাওবাদবিরোধী অভিযানের আরেকটি সফলতা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
জেলা পুলিশের সুপার (এসপি) শ্রীমতী ভানু লতা রেশম বলেন, “এটি একটি যৌথ অভিযানের ফল, যা মাওবাদীদের বিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ়তার প্রমাণ।” এই সংঘর্ষের ফলে এ বছর ছত্তিশগড়ে নিহত নকশালীদের সংখ্যা ২৫২-এ পৌঁছেছে, যার মধ্যে বস্তর বিভাগে ২২৩ জন। এই সংঘর্ষ রবিবার সকালে কাঁকের জেলার পার্তপুর থানা এলাকার অবর্তা জঙ্গলে হয়েছে।
নিরাপত্তা বাহিনীর যৌথ দল, যার মধ্যে কাঁকের ও গড়িয়াবাঁদ জেলার ডিস্ট্রিক্ট রিজার্ভ গার্ড (ডিআরজি) এবং বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) অন্তর্ভুক্ত, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়েছিল। তথ্য ছিল যে, সীতানাদি/রাওয়াস এলাকা কমিটির সেক্রেটারি সর্বণ মাডকাম ও অন্যান্য নেতারা জঙ্গলে লুকিয়ে আছে।
সকাল ৬টা ৩০ মিনিটের দিকে মাওবাদীরা প্রথম গুলি চালায়, যার জবাবে নিরাপত্তা বাহিনীও প্রতুত্তর দেয়। প্রায় দু ঘণ্টার গুলিবর্ষণের পর সংঘর্ষ থামে। ঘটনাস্থল থেকে তিনটি দেহ, একটি সেল্ফ-লোডিং রাইফেল, একটি .৩০৩ রাইফেল, একটি ১২ বোর গান এবং মাওবাদীদের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে নিহতদের পরিচয় হিসেবে সর্বণ মাডকাম উপনাম বিশ্বনাথ, রাকেশ হেমলা এবং বাসন্তী কুঙ্কজাম উপনাম হিদমেকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সর্বণ মাডকাম ছিলেন মাওবাদীদের সীতানাদি/রাওয়াস এলাকা কমিটির সেক্রেটারি, যার উপর ৮ লক্ষ টাকার পুরস্কার ছিল। রাজেশ হেমলা নাগরি এলাকা কমিটির সদস্য ছিলেন এবং তাঁর পুরস্কার ৫ লক্ষ টাকা।
বাসন্তী কুঙ্কজাম মেইনপুর-নুাপাড়া সুরক্ষা দলের সদস্য ছিলেন, যার পুরস্কার ১ লক্ষ টাকা। এরা সকলে বহুদিন ধরে বস্তর অঞ্চলে সক্রিয় ছিলেন এবং নিরাপত্তা বাহিনীর উপর বেশ কয়েকটি হামলায় জড়িত ছিলেন বলে পুলিশের অভিযোগ। এসপি রেশম বলেন, “এই নেতারা মাওবাদী সংগঠনের মেরুদণ্ড ছিলেন। তাদের হত্যা মাওবাদীদের মনোবল ভেঙে দেবে।”
নির্বাচনে স্বচ্ছতা আনতে ৪৭০ পর্যবেক্ষক মোতায়েনের সিদ্ধান্ত কমিশনের
পুলিশ কর্মকর্তারা মাওবাদী ক্যাডারদের আহ্বান জানিয়েছেন যে, তারা বাস্তবতা মেনে নিয়ে হিংসার পথ ত্যাগ করে মূলধারায় ফিরে আসুন। সরকারের পুনর্বাসন নীতির সুযোগ নিয়ে তারা আত্মসমর্পণ করতে পারেন। যদি তারা অবৈধ ও হিংসাত্মক কার্যকলাপ চালিয়ে যান, তাহলে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে। এই ঘটনায় কোনো নিরাপত্তা কর্মীর আহত হওয়ার খবর নেই। সংঘর্ষের পর জঙ্গলে ঘাঁটি চালিয়ে অন্যান্য মাওবাদীদের খোঁজা হচ্ছে।